ঈদ সার্ভিসে ঢাকা-বরিশাল সহ দূরপাল্লার রুটে চলবে ৫২ লঞ্চ ঈদ সার্ভিসে ঢাকা-বরিশাল সহ দূরপাল্লার রুটে চলবে ৫২ লঞ্চ - ajkerparibartan.com
ঈদ সার্ভিসে ঢাকা-বরিশাল সহ দূরপাল্লার রুটে চলবে ৫২ লঞ্চ

3:09 pm , May 15, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাজধানী ঢাকার সাথে বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলে অন্যতম আরামদায়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা হচ্ছে নৌ-পথ। তাই ঈদ এলে নৌ পথে বেড়ে যায় যাত্রীদের চাপ। তাই যাত্রী চাপ সামাল দিতে বিশেষ সার্ভিস দিয়ে থাকে সরকারি-বেসরকারি নৌ-যান কর্তৃপক্ষ। বিগত বছরেরে ন্যায় আসন্ন ঈদ উল ফিতরেও নৌ পথে বিশেষ সার্ভিস দিয়ে যাত্রী পরিবহন করা হবে। তবে বিশেষ সার্ভিস শুরুর সময় এখনো নির্ধারন না হলেও বরিশাল-ঢাকা সহ দক্ষিণাঞ্চলের দূরপাল্লার রুটে কতগুলো যাত্রীবাহী নৌযান চলবে সে বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ঈদের আগে ও পরে ৫২ টি যাত্রীবাহী নৌযান দিয়ে দেয়া হবে ঈদ সার্ভিস। যার মধ্যে শুধুমাত্র বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটেই সরাসরি বিশেষ সার্ভিস দিবে বিলাসবহুল ২৩টি বেসরকারি লঞ্চ। এছাড়া এই রুটে বিশেষ সার্ভিসে থাকবে বিআইডব্লিউটিসি’র আরো ৫টি স্টিমার।
বিআইডব্লিউটিএ’র বরিশাল নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, দেশের নদী পথে সব থেকে বড় নৌ পথ হচ্ছে বরিশাল-ঢাকা। যে কারনে এই রুটে দিন দিন দানবাকৃতির বিলাশবহুল বেসরকারি লঞ্চের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। সর্বশেষ গত মাসেও বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটে যাত্রী সেবায় যুক্ত হয় আরো একটি বিলাশবহুল নৌযান এমভি মানামী। এ নিয়ে বর্তমানে বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটে নিয়মিত যাত্রীসেবায় যুক্ত রয়েছে ২১টি লঞ্চ।
বিআইডব্লিউটিএ’র ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) কবির হোসেন জানান, বরিশাল ঢাকা নৌ রুটে বর্তমানে দিবা সার্ভিস সহ মোট ২১টি বেসরকারি লঞ্চ চলাচল করছে। যার মধ্যে রোটেশন অনুযায়ী প্রতিদিন ঢাকা ও বরিশাল থেকে ৮ থেকে ১০টি করে লঞ্চে যাত্রীসেবা দেয়া হচ্ছে। তবে ঈদ মৌসুমে রোটেশন পদ্ধতি থাকে না। লঞ্চ মালিকরা সকল লঞ্চেই প্রতিদিন ডাবল ট্রিপ দিয়ে থাকে। যাকে বলা হয় ঈদ বিশেষ সার্ভিস। তিনি বলেন, এবারের ঈদে সরাসরি বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটে ২৩টি বেসরকারি লঞ্চ চলাচল করবে। এর মধ্যে ২৩টি লঞ্চ বর্তমানে চলাচল করছে। আগামী ১৬ মে দিবাসার্ভিসের ক্যাটামেরান এ্যাডভেঞ্জার-৫ চলাচল শুরু করবে। এই জাহাজটি গত ঈদে উদ্বোধন করা হয়েছিলো। কিন্তু নৌযানটি যাত্রীবহনে উপযোগী ছিলো না। যাত্রী নিয়ে যাত্রাকালে এটি ডুবে যাবার উপক্রম ঘটেছিলো। যে কারনে জাহাজটি’র যাত্রা বাতিল করা হয়। সেই জাহাজটিই চলাচলে উপযোগী করে এবার ঈদে পুনরায় বিশেষ সার্ভিসে যুক্ত হবে।
টিআই কবির হোসেন বলেন, সব মিলিয়ে ঈদ সার্ভিসে এমভি কীর্তনখোলা গ্রুপের দুটি, এ্যাডভেঞ্চার গ্রুপের ৩টি, এমভি সুন্দরবন গ্রুপের ৩টি, এমভি সুরভী গ্রুপের ৩টি, এমভি পারাবত গ্রুপের ৫টি, গ্রীন লাইন কোম্পানির ২টি, এমভি কামাল কোম্পানীর ২টি, এমভি মানামী, এমভি টিপু-৭ ও এমভি ফারহান-৮ সরাসরী বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটে যাত্রী সেবা দিবে। এর মধ্যে গ্রীনলাইন কোম্পানির দুটি ও এ্যাডভেঞ্চার কোম্পানির একটি দিবা সার্ভিসে থাকবে।
এছাড়াও ঝালকাঠী ও তুষখালী-ঢাকা নৌ রুটে ভায়া বরিশাল হয়ে চলাচল করবে ৭টি লঞ্চ। এর মধ্যে সুন্দরবন কোম্পানির ২টি, ফারহান কোম্পানির ২টি, এমভি মানিক-১, রেডসান ও পূবালী। বরগুনা-ঢাকা ভায়া বরিশাল হয়ে চলাচল করবে ৩টি লঞ্চ। এগুলো হলো এমভি সাহরুখ-১, সুন্দরবন-২, প্রিন্স অব রাসেল-১ ও যুবরাজ। এছাড়া বরগুনা-ঢাকা ভায়া বরিশাল ও ঝালকাঠি হয়ে চলাচল করবে এমভি গ্রিন ওয়াটার-১০। এই লঞ্চটি শুধুমাত্র ঈদ মৌসুমেই এই রুটে চলাচল করে। অপরদিকে পটুয়াখালী নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের বার্র্দিং সারেং (বিএস) আলম চন্দ্র মিত্র জানান, পটুয়াখালী-ঢাকা রুটে সরাসরি ৮টি লঞ্চ বিশেষ সার্ভিস দিবে। যার মধ্যে সুন্দরবন কোম্পানির দুটি, এমভি জামাল-৫ এমভি প্রিন্স অব রাসেল-৪ সহ ৮টি লঞ্চ চলাচল করবে।
ভোলা নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের টিআই নাসিম আহমেদ জানান, ভোলা-ঢাকা রুটে সরাসরি ৮টি লঞ্চ চলাচল করে। স্বাভাবিক সময়ে ঢাকা ও ভোলা প্রান্ত থেকে ২টি করে মোট ৪টি লঞ্চ চলাচল করলেও ঈদের আগে পরে অন্তত ১০ দিন ৮টি লঞ্চই এক সাথে চলাচল করে থাকে। ওই ৮টি লঞ্চ এবারেও ঈদ সার্ভিসে থাকবে।
এদিকে বিআইডব্লিউটিসি’র বরিশাল অঞ্চলের সহকারী মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ আবুল কালাম আজাদ জানান, পূর্বের ন্যায় এবারও ঈদ সার্ভিসে তাদের সংস্থার ৫টি জাহাজ থাকছে। ঢাকা-বরিশাল, ঢাকা-হুলারহাট ভায়া বরিশাল হয়ে চলবে এ ৫টি জাহাজ। জাহাজগুলো হলো- এমভি বাঙ্গালী, মধুমতী, পিএস লেপচা, পিএস টার্ন ও পিএস মাসুদ। ঈদের এক সপ্তাহ পূর্বে থেকে ঈদ পরবর্তী এক সপ্তাহ বিশেষ সার্ভিস দিবে।
অপরদিকে বেসরকারি যাত্রীবাহী নৌযান মালিকদের সংগঠন যাপ এর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও বরিশাল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ¦ সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, এবার ঈদে যাত্রী সেবায় আমাদের কোন সমস্যা হবে না। কেননা এবার লঞ্চের সংখ্যা পূর্বের বছরগুলোর তুলনায় বেশি। তবে কবে থেকে বিশেষ সার্ভিস শুরু হবে সে বিষয়টি এখনো ঠিক হয়নি। আগামী ১৮ মে ঢাকায় যাপ এর সাধারণ সভা হবে। ওই সভাতেই ঈদ সার্ভিসের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, লঞ্চগুলো অগ্রিম টিকেট বিক্রি কার্যক্রম এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। কোন কোন কোম্পানি বিশেষ স্লিপের মাধ্যমে আবার কোন কোন কোম্পানি সরাসরি টিকিট বিক্রি করছে। যারা স্লিপ পদ্ধতিতে টিকিট বিক্রি করছে তারা আবেদনকারীদের আবেদন যাচাই বাছাই শেষে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় টিকিট বিক্রি শুরু করবে। এ ক্ষেত্রে যারা নিয়মিত যাত্রী তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT