3:18 pm , May 13, 2019
রাজাপুর প্রতিবেদক ॥ রাজাপুরের সাউথপুর গ্রামে মোবাইল চুরির অভিযোগে ৪ শিশুকে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। রোববার গভীর রাতে নির্যাতনের শিকার শিশু রফিকুল ইসলামের পিতা বাদি হয়ে ৬ জনের নামসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে রাজাপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তবে মামলা দায়ের করলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। জানা গেছে, হারিয়ে যাওয়া একটি মোবাইল ফোন ওই শিশুরা চুরি করেছে অভিযোগ তুলে পিটিয়ে ও পরে লোহার খুনতি গরম করে শিশুদের হাত-পা ঝলসে দেয়া হয়। নির্যাতিত শিশুরা হল সাউথপুর মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ওয়াহিদুল হাওলাদার, তৃতীয় শ্রেণীর নীরব গোমস্তা, রাজাপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির মো. আব্দুল্লাহ ও তৃতীয় শ্রেণীর সগীর হাওলাদার। শিশুদের অভিভাবকরা অভিযোগ জানান, ২৭ এপ্রিল স্থানীয় প্রভাবশালী তৈয়ব আলী সরদারের নাতি ও মৃত ফরিদ খানের ছেলে শাওন খানের মোবাইল ফোনটি সাউথপুর মাদ্রাসার মাঠ থেকে হারিয়ে যায়। এ ঘটনার ১৪ দিন পর ১০ মে শুক্রবার বিকালে মাদ্রাসা মাঠে খেলা করার সময় শাওন শিশুদের কাছে মোবাইল সম্পর্কে জানতে চায়। শিশুরা মোবইলটি পুকুর ঘাটে দেখেছিল বলে জানায়। ‘শিশুদের কাছেই মোবাইলটি আছে’ এমন সন্দেহে শাওন লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে শিশুদের আহত করে এবং স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করে। প্রথম দফার নির্যাতনে শিশুদের কাছ থেকে কোনো স্বীকারোক্তি আদায় করতে না পেরে ওই দিন সন্ধ্যায় মসজিদে ইফতারি করার সময় শিশুদের ধরে নিয়ে যায় শাওন ও তার সহযোগীরা। নির্যাতিত শিশু আবদুল্লাহ জানায়, আমাদের ধরে নিয়ে শাওন তাদের রান্নাঘরে আটকে রাখে। পরে শাওনের নানি শাহ্ বানু লোহা গরম করে এনে দিলে একে একে আমাদের সবার হাত ও পায়ে গরম লোহা দিয়ে ঝলসে দেয় শাওন। অভিযুক্ত শাওনের বক্তব্য না পাওয়া গেলেও তার নানা মো. তৈয়ব আলী সরদার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, বাড়িতে এনে তাদের (শিশুদের) ভয় দেখানো হয়েছে। আমার স্ত্রী একজন পরহেজগার নামাজি মহিলা। শাওন ও আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা। রাজাপুর থানার ওসি মোঃ জাহিদ হোসেন জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে, আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। রোববার রাতভর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েও আসামীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।