3:13 pm , May 13, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ কোচিং সেন্টারে স্কুল ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে নগরীর হালিমা খাতুন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেই শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্কুলের শ্রেণি কক্ষে পাঠদান করা অবস্থায় তাকে আটক করা হয়। যদিও পুলিশের দাবী আটক নয়, জিজ্ঞাবাদের জন্য ওই শিক্ষককে থানায় নেয়া হয়েছে। ওই শিক্ষক হলো -এনামুল হক নাসিম। তিনি হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গনিত বিষয়ের শিক্ষক। এদিকে আটকের ঘটনার পর পরই ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষক এনামুল হক নাসিমকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি অভিযোগ তদন্তে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসএম ফখরুজ্জামান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, হালিমা খাতুন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গনিত বিষয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক হলেন এনামুল হক নাসিম। তিনি স্কুল সংলগ্ন গোরাচাদ দাশ রোডের একটি বাসার নীচতলা ভাড়া নিয়ে সেখানে কোচিং বানিজ্য করেন। গত সপ্তাহে বিকেলে কোচিং শেষ হওয়ার পর স্কুলের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে আরো পড়ানোর অজুহাতে সেন্টারে রেখে দেয়। কোচিং এর অন্যান্যরা চলে যাওয়ার পর কথা বলার ছলে শিক্ষক এনামুল হক নাসিম শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়ন করে। তখন ওই শিক্ষার্থী ভয়ে কান্নাকাটি শুরু করলে শিক্ষক নাসিম তাকে ছেড়ে দেয়। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, শিক্ষক নাসিম এর আগেও এ ধরনের একাধিক ঘটনা ঘটিয়েছেন। প্রায়ই অশ্লীল ও কু-প্রস্তাব দেয় সহ শিক্ষার্থীদের জোর পূর্বক কোচিং করনোর অভিযোগ করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। আর এজন্য অন্যান্য শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের বিভিন্ন দেয়ালে প্রতিবাদ স্বরুপ ‘নাসিম স্যার থেকে সাবধান’ এমন শ্লোগান লিখে রাখে।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অভিযোগ, বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। কিন্তু তারা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো তাকে রক্ষায় গত শনিবার রাতে অন্য শিক্ষক ও স্থানীয়রা বিষয়টি নিয়ে গোপন বৈঠকও করে। এদিকে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার (উপ-পরিদর্শক) মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, হালিমা খাতুন বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক এনামুল হক নাসিম এর বিরুদ্ধে একই স্কুলের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মৌখিক এই অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। অপরদিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক এসএম ফখরুজ্জামান বলেন, ইতিপূর্বে আমাদের কাছে এ ধরনের কোন অভিযোগ কেউ করেননি। তবে মৌখিক ভাবে ঘটনাটি শুনেছি। কিন্তু স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা সম্ভব হয়নি। আমরা ভেবেছিলাম স্কুল খোলার পরে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। কিন্তু তার আগেই যৌন হয়রানীর অভিযোগে শিক্ষক নাসিমকে স্কুলে অতিরিক্ত ক্লাস করানোর সময় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। যে কারনে আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষ জরুরী ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করেছি। একই সাথে শিক্ষক নাসিমকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এদিকে কোতোয়ালী মডেল থানার এসআই সাইদুল হক জানান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত ঘটনা শিকার শিক্ষার্থী/ পরিবার থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবুও ঘটনায় সত্যতা থাকায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।