3:34 pm , May 11, 2019

মর্তুজা জুয়েল ॥ ঈদের পূর্বেই সমাপ্ত হচ্ছে নগরীর মূল সড়কের আধুনিক ডেঞ্চ কার্পেটিং কাজ। এমনই নির্দেশনা দিয়েছেন মেয়র সেরনিয়াবাদ সাদিক আবদুল্লাহ। শুক্রবার রাতে নগরীর হাসপাতাল রোড থেকে নথুল্লাবাদ পর্যন্ত সড়ক নির্মানের কাজ উদ্বোধন করার সময় তিনি ঠিকাদার ও প্রকৌশলীদের এ নির্দেশ দেন। এ সময় সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাদ সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, কোন ধরনের খোড়াখুড়ি না করে আধুনিক পদ্ধতিতে সড়ক নির্মান করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে নগরীর সকল সড়ক এভাবে তৈরী করা হবে। প্রাথমিক অবস্থায় রুপাতলী থেকে লঞ্চঘাট, আলেকান্দা সড়ক এবং নথুল্লাবাদ থেকে জেলখানা মোড় পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটারের মত করা হচ্ছে। পূর্বের তুলনায় প্রতি কিউবিক মিটারে ৩/৪ হাজার টাকা বেশী ব্যয় হলেও সড়ক দীর্ঘস্থায়ী এবং গুনগত মান অনেক ভালো হচ্ছে। এতে করে প্রতি বছর সড়ক মেরামত করার প্রয়োজন হবে না। পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশনের অর্থ সাশ্রয়ী হবে। ইতিপূর্বে রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রাম সহ সড়ক ও জনপথ বিভাগ গুরুত্বপূর্ন সড়কে এ ধরনের কাজ করা হলেও নগরীতে এই প্রথম বারের মত এ ধরনের কাজ করা হচ্ছে। কোন ধরনের খোড়াখুড়ি ও হাতের স্পর্শ ছাড়াই স্বয়ংক্রিয় ভাবে যান্ত্রিক নির্ভর এ সড়ক করা হচ্ছে। সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর নির্দেশে কোন ধরনের বিশেষ বরাদ্দ এবং প্রকল্পের অর্থ ছাড়া কর্পোরেশনের নিজস্ব ফান্ডের অর্থে নির্মিত অত্যাধূনিক এ সড়কের নির্মান কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই যা নগরীর বাসিন্দারের ইতিবাচক দৃষ্টি কেরেছে। নগরীর বাসিন্দারা জানান, নগরীর অভ্যন্তরে প্রথমবারের মতো আধুনিক পেভার মেশিন দিয়ে রাস্তা নির্মাণ দেখছে নগরবাসী। এর আগে এত সুন্দর রাস্তা নগরবাসী দেখিনি। যা প্রথমবারের মতো নগরবাসীকে উপহার দিচ্ছেন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ। গত প্রায় ৩ সপ্তাহ ধরে নগরীর অভ্যন্তরে আধুনিক মেশিন দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করে সবার মুখে প্রশংসায় ভাসছেন সাদিক আবদুল্লাহ। নির্মিত রাস্তার ৫ বছরের গ্যারান্টি দিচ্ছেন তিনি। ৫ বছরের মধ্যে যে কোন ধরনের সংস্কার কিংবা মেরামত প্রয়োজন হলে ঠিকাদার নিজ দায়িত্বে সেগুলো মেরামত করে দেবেন বলে জানিয়েছেন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ। জেলার অন্যান্য উপজেলাসহ ভোলা, পটুয়াখালী, কুয়াকাটা, পায়রা, বরগুনা, ঝালকাঠী, পিরোজপুর, বাগেরহাট, বাকেরগঞ্জ ও নলছিটি সহ নগরীর দক্ষিনাংশের লাখ লাখ মানুষের নগরীর অভ্যন্তরে প্রবেশ ও ব্যবহার করতে হয় রুপাতলী-লঞ্চঘাট সড়ক, আমতলা বিজয় বিহঙ্গ মোড় থেকে নূরিয়া স্কুল-বাংলাবাজার-পুলিশ লাইনস-জিলা স্কুল সড়ক। এ পুরো সড়কই ঈদের পূর্বে ডেঞ্চ কার্পেটিং করা হবে। বরিশাল সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানাগেছে, ২০০২ সালে সিটি করপোরেশন গঠিত হওয়ার পর থেকে প্রতি বছর অন্তত ২-৩ বার মেরামত-সংস্কার করা হতো গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কগুলো। প্রতি বারই হতো অর্থের অপচয়। মেরামতের কিছুদিন পরই খানাখন্দে ভরে যেত সড়কগুলো। বৃষ্টির পর দেখা যেতো কর্পেটিং উঠে খানাখন্দ তৈরী হয়েছে। নগরবাসীর ভোগান্তি ছিল নিয়মিত ঘটনা। প্রতি বছর বর্ষায় ভোগান্তির মাত্রা আরও বেড়ে যেত। এবার সেই সড়কে ‘ডেঞ্চ কার্পেটিং’ করছেন সাদিক আবদুল্লাহ। শুধু ওই সড়কই নয়, আমতলা বিজয় বিহঙ্গ মোড় থেকে সদর রোড, নাজিরের পোল এবং সোনালী আইসক্রিম মোড় হয়ে পলাশপুর পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার এবং জেলাখানা মোড় থেকে নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল পর্যন্ত সোয়া ২ কিলোমিটার সড়কে ‘ডেঞ্চ কার্পেটিং’ এর কাজ চলছে। গত শুক্রবার রাতে জেলখানা মোড় থেকে নথুল্লাবাদ পর্যন্ত সোয়া ২ কিলোমিটার সড়কের ‘ডেঞ্চ কার্পেটিং’ কাজের ভিত্তি প্রস্থর উদ্বোধন করেন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ।
সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবাধায়ক প্রকৌশলী মু. আনিচুজ্জামান জানান, আমতলা থেকে পলাশপুর ব্রিজ এবং জেলখানা মোড় থেকে নথুল্লাবাদ কেন্দ্রিয় বাস টার্মিনাল পর্যন্ত প্রায় সোয়া ৫ কিলোমিটার ‘ডেঞ্চ কার্পেটিং’ কাজ করছেন এম খান গ্রুপ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মানাধীন এই সড়কের কাজ আরও অন্তত ২ সপ্তাহ চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি। সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, আগে এসব সড়ক বছরে দুই তিনবার সংস্কার মেরামত হতো। এবার সড়ক বিভাগের সব চেয়ে বড় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বলে কাজ শুরু করেছেন। তারা ৫ বছরের গ্যারান্টি দিয়ে সড়ক নির্মান করছেন। আমি সড়কের স্থায়ীত্বের ৫ বছরের নিশ্চয়তা নিয়ে কাজ করছি।