3:40 pm , April 28, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ চলতি বছরের মার্চে শেরেবাংলা হাসপাতালের অফিস সহায়ক আল মামুন ওরফে গালকাটা মামুনকে মাদকসহ আটক করে গণধোলাই দেয় মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা। এর পর তাকে শেবাচিমের পরিচালকের কাছে সোপর্দ করা হয়। মাদক বিক্রী ও ক্যাম্পাসে বসে নেশা করার অপরাধে ওই সময় আল মামুন ও অপর অফিস সহকারী আবুল বাশারকে বদলির জন্য বিভাগীয় পরিচালক বরাবরে সুপারিশ করেন শেরে বাংলা হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ বাকির হোসেন। বদলির আদেশও দেন বিভাগীয় পরিচালক ডাঃ মাহাবুবুর রহমান। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে হঠাৎ করে বদলির আদেশ স্থগিত করেন তৎকালীন বিভাগীয় পরিচালক ডাঃ মাহাবুবুর রহমান। মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত সেই অফিস সহায়ক আল মমুন ওরফে গালকাটা মামুন শেবাচিমে অফিস সহায়ক পদে এখনো কর্মরত আছেন । একজন মাদক ব্যবসায়ী কিভাবে এখনো হাসপাতালে কাজ করছেন এ নিয়ে সবার মাঝে প্রশ্ন উঠেছে। শুধু তাই নয় রোগীর দালাল হিসেবে পরিচিত অপর অফিস সহায়ক আবুল বাশারও শেরেবাংলা হাসপাতালে কর্মরত থেকে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করছেন। রোগীর দালালী ছাড়াও আরো অনেক অপরাধের হোতা বাশার। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আল মামুন হাসপাতালে চাকুরী করেণ নামমাত্র। দিনের বেলায় তার মূল কাজ হলো দালালী করা আর রাতের বেলায় মাদক বিক্রী ও সেবন করা। তার বিরুদ্ধে হাসপাতালের পরিচালকের কাছে অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চে মেডিকেলের পেছনে বসে মাদক সেবনরত অবস্থায় কলেজের ছাত্ররা হাতেনাতে মামুনকে আটক করে গণধোলাই দেয়। এর পর তাকে হাসপাতালের পরিচালকের কাছে নিয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিচালক তাৎক্ষনিক মামুন ও বাশারকে বদলির সুপারিশ করেন। এর পর বিভাগীয় পরিচালক বদলির আদেশ দেন। ওই আদেশ ওয়েভসাইটেও দেয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে ওয়েবসাইট থেকে আদেশের কপি সরিয়ে ফেলা হয়। বর্তমানে অপরাধের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন অফিস সহায়ক মামুন। শুধু মাদক বিক্রী ও রোগীর দালালীই নয় রোগীদের সাথে খারাপ আচরণেরও এন্তার অভিযোগে রয়েছে মামুন ও বাশারের বিরুদ্ধে। কোন কোন ডায়াগনস্টিকে তারা জোর করে রোগী নিয়ে যায় বলেও একাধিক সূত্র দাবী করেছে। মামুনের মা শেরেবাংলা হাসপাতালের ঔষধ চুরির অপরাধে বর্তমানে সাসপেন্ড আছেন। শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আলোচিত ঔষধ চুরির ঘটনার অন্যতম নায়ক ছিলেন এই মামুন। সেই সময়ে ঔষধসহ পুলিশের হাতে ধরা পরে বেশ কিছুদিন জেলও খাটেন। তারপরেও কেন এই ঔষধ চোর ও মাদক বিক্রেতাকে কেন হাসপাতালে রাখা হয়েছে সে ব্যাপারে কেউ মুখ খুলছে না।
এ ব্যাপারে শেরেবাংলা হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ বাকির হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের লোকজন গণধোলাই দিয়ে মামুনকে আমার কাছে সোপর্দ করার পর আমি তাকে বদলির সুপারিশও করেছিলাম। কিন্তু কয়েক দিন পর ছাত্রলীগের লোকজনই আমাকে বদলির আদেশ স্থগিতের জন্য সুপারিশ করেন। মূলত ছাত্রলীগের সুপারিশের কারনেই মামুন ও বাশারের বদলির আদেশ স্থগিত করা হয়েছে।
