3:00 pm , April 16, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ এগারো দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে সকল রুটের নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট শুরু হয়েছে। নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে সারা দেশের ন্যায় সোমবার রাত ১২টার পর থেকে বরিশালেও ধর্মঘট পালন শুরু হয়েছে। এর ফলে গতকাল মঙ্গলবার বরিশাল নদী বন্দর থেকে ঢাকাগামী একটি লঞ্চও ছেড়ে যায়নি। শুধু তাই নয়, গতকাল সকাল থেকে অভ্যন্তরীন রুটেও বরিশাল নদী বন্দর থেকে কোন নৌযান ছেড়ে যায়নি। বরং যাত্রীবাহী লঞ্চগুলো টার্মিনাল থেকে সরিয়ে কীর্তনখোলার মাঝ নদীতে নোঙর করে রাখে। এদিকে নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটের ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার যাত্রী। সোমবার রাত ১২টার পর থেকে শুরু হওয়া এই ধর্মঘটের কারনে তাদের নৌ যাত্রা বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। বিশেষ করে বরিশাল থেকে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নৌযান বন্ধ থাকায় বরিশাল-ভোলা, বরিশাল-মজুচৌধুরীর হাট ও বরিশাল-মেহেন্দিগঞ্জ রুটের যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই। গতকাল রাতে যাত্রী নিয়ে বরিশালে আসার উদ্দেশ্যে এমভি টিপু-৭ ও ফারহান সহ ৩টি লঞ্চ ঢাকা নৌ বন্দরে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু লঞ্চ তিনটিতে কোন শ্রমিক ওঠেননি বলে দাবী করেছেন নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের শ্রমিকরা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লঞ্চ তিনটি ঢাকা সদর ঘাটে জেটিতে ছিলো। লঞ্চ চলাচল না করায় ঝুঁকি নিয়ে স্পীড বোর্ডে এবং ট্রলারে চলাচল করতে হচ্ছে যাত্রীদের। নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন বরিশাল আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি আবুল হাসেম বলেন, সারাদেশে ‘শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, সার্ভিস বুক, পরিচয়পত্র, শ্রমিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণ, খাদ্যভাতা ফ্রি, প্রভিডেন্ট ফান্ড, ভারতগামী জাহাজের ল্যান্ডিং পাশ, জাহাজে কর্মরত অবস্থায় মৃত্যু হওয়া শ্রমিকের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপুরন, নৌ পথে চাঁদাবাজী, সন্ত্রাসী ও ডাকাতী বন্ধ, পরীক্ষা বোর্ড মেরিন কোর্টের দুর্নীতি ও হয়রানী বন্ধ এবং নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা সহ ১১ দফা দাবীতে নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট চলছে।
শান্তিপূর্ণ এই ধর্মঘটের কারনে বরিশাল থেকে যাত্রী বা মালবাহি কোন নৌযান চলাচল করেনি। বরিশাল নদী বন্দর থেকে প্রতিদিন ১৩টি অভ্যন্তরিন রুটে বেসরকারি নৌযান চলাচল করে। কিন্তু ধর্মঘটের কারনে একটি নৌযানও ছেড়ে যায়। অভ্যন্তরিন ও দুরপাল্লার প্রতি যাত্রীবাহী ও মালবাহী পরিবহন কীর্তনখোলা নদীর মাঝে ও অপরপ্রান্তে নোঙর করে রাখা হয়েছে। দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই ধর্মঘট চলবে বলে জানিয়েছেন নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ওই নেতা।
এদিকে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের (নৌ-নিটা) উপ-পরিচালক আজম হুদা মিঠু সরকার বলেন, ‘বরিশাল থেকে একটি লঞ্চও ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়নি। কয়েকজন মালিক চেষ্টা করেছিলেন যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে দু-একটি লঞ্চ ছাড়ার জন। কিন্তু শ্রমিকরা লঞ্চগুলোকে কীর্তনখোলার মাঝ নদীতে নোঙর করে রেখেছে। ফলে একটি লঞ্চও বরিশাল থেকে ছেড়ে যেতে পারেনি। যাত্রীরা ঘাটে এসে ফিরে গেছে।
অপরদিকে ঢাকা সদর ঘাট নৌ থানা পুলিশ জানিয়েছে পুলিশের সহযোগিতায় ফারহান কোম্পানির দুটি ও টিপু-৭ মাঝ নদী থেকে টার্মিনালে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু কোন শ্রমিক লঞ্চে ওঠেনি। যাত্রীদের ভোগান্তি দুর করতে মাষ্টার এবং ড্রাইভারদের সহযোগিতায় লঞ্চ তিনটিতে ছাড়ার চেষ্টা চলছে।