পুণ্য¯œান উৎসবে মুখরিত দুর্গা সাগর পুণ্য¯œান উৎসবে মুখরিত দুর্গা সাগর - ajkerparibartan.com
পুণ্য¯œান উৎসবে মুখরিত দুর্গা সাগর

3:06 pm , April 12, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশার ঐতিহ্যবাহী দুর্গা সাগর দীঘিতে দীর্ঘ ২৩৯ বছর ধরে চলছে পুণ্য¯œান। প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও উৎসবকে ঘিরে হাজারো পুণ্যার্থীর পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে দুর্গাসাগর পাড় এলাকা। চৈত্রের অষ্টমী তিথিতে দুর্গা সাগরে গোসল করে পাপ থেকে মুক্তি লাভের আশায় প্রতি বছরের ন্যায় গতকাল শুক্রবার দেশের বিভিন্ন স্থান হতে আসা হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এখানে এসেছেন। ‘হে মহাভাগ দূর্গা, হে লৌহিত্য আমার পাপ হরণ কর’ এ মন্ত্র উচ্চরণ করে পুর্ণ্যার্থীরা গঙ্গাদেবীর চরণে আত্মসমর্পণ করে পূজা, অর্চনা ও প্রার্থনার মধ্যে দিয়ে ¯œান করা হচ্ছে। তাছাড়া ১১টা ২ মিনিট থেকে জগতের যাবতীয় সংকীর্ণতা ও পঙ্কিলতার আবর্তে ঘেরা জীবন থেকে পাপ মুক্তির বাসনায় হিন্দু পুণ্যার্থীরা দুর্গাসাগরে ¯œান শেষে দুর্গা সাগরের প্রবেশদারের বটবৃক্ষের নিচে মোববাতি জ্বালিয়ে মানত করেন। গ্রহন করেন প্রসাদ।
এদিকে হিন্দু ধর্মাবলম্বিদের গঙ্গা¯œান উৎসবকে কেন্দ্র করে দুর্গাসাগরের পাশেই মাধবপাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজন করা হয়েছে দু’দিনব্যাপী গ্রামীন মেলা। মেলায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সাংসারিক দৈনিন্দিন মালামাল, বিভিন্ন খেলার সামগ্রী, আসবাবপত্রের পশরা সাজিয়ে বসেছেন মেলায় আশা বিক্রিতারা। রয়েছে গ্রামবাংলার মুড়ি মুড়কির আয়োজন। সাধু সন্নাসীরা সমবেত হয়ে ভক্তিমূলক পরিবেশন করেন।
দুর্গা সাগরের পুরোহিত সুভাষ ঠাকুর বলেন, গত ১১ বছর যাবত তিনি এখানে এসে পুণ্য¯œান করতে আসা ভক্তদের পূজা করাচ্ছেন। এর আগে তার বাবা মানিক ঠাকুর এ সাগরে পুজা দেয়ার দায়িত্বে ছিলেন। এবারের উৎসব শুক্রবার বেলা ১১টা ২ মিনিট থেকে পরদিন শনিবার সকাল ৯টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত তিথি রয়েছে। তাই এবারে লোকেদের গঙ্গা¯œানে হুরোহুরি হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘দুর্গাসাগরে শুধুমাত্র বরিশাল বা বাংলাদেশ থেকেই নয়, বরং ভারত ও নেপাল সহ বেভিন্ন দেশ থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বিরা আসছেন দুর্গা সাগরে গঙ্গা¯œানে আসছেন। তারা শুক্রবার সকাল থেকে দুর্গাসাগরের চারদিকে ১০টি ঘাটে জড়ো হয়ে তিথি হিসাব করে পানিতে ফুল ভসিয়ে ¯œান করেন। এদিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘দুর্গা সাগর বাবুগঞ্জ উপজেলার মধ্যে। তবে এই এলাকাটি মেট্রোপলিটন পুলিশের অধিনে হওয়ায় গঙ্গা¯œানে আসা ভক্ত ও পর্যটকদের নিরাপত্তার দায়িত্ব দিচ্ছি আমরা। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ও মানুষের নিরাপত্তার জন্য দুর্গাসাগরের ভেতরে ও বাইরে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। দুর্গা সাগরের বাইরে আঞ্চলিক সড়কের এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে নিরাপত্তা বলয় ঘিরে রাখা হয়েছে। ফলে সকাল থেকে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। উল্লেখ্য, ‘ বরিশাল নগরী ও বাবুগঞ্জের সীমান্তবর্তী এলাকার অদূরে দুর্গাসাগরের অবস্থান। পানির সংকট দুর করতে ১৭৮০ সালে চন্দ্রদ্বীপের পঞ্চদশ রাজা শিব নারায়ন ৪৬ একর জমির একটি অংশে বিশাল দীঘিটি খনন করেন। রাজা তার স্ত্রী দুর্গামতির নামের সাথে মিলিয়ে দীঘির নামকরণ করেন দুর্গাসাগর। কিন্তু দীঘি খননের পরও তেমন পানি না আসায় রাজা চিন্তিত হয়ে পড়েন।
এ নিয়ে তিনি বেশ কয়েকজন ঠাকুরের সাথে বৈঠক করেন। তারা রাজা শিব নারায়নকে গঙ্গা পূজার পরামর্শ দেন। তার মধ্যেই রাজা স্বপ্ন দেখেন তার বোনকে দীঘির মাঝ বরাবর নামিয়ে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্যে পূজা করলে দীঘিতে পানি আসবে। তিনি তার বোন কমলা সুন্দরীকে দীঘির মাঝ বরাবর নামিয়ে গঙ্গা দেবীর পূজা করেন। এর পরই অলৌকিকভাবে দীঘিটি পানিতে ভরে যায়। এ ঘটনা দক্ষিণাঞ্চলের সর্বত্র প্রচার হয়ে গেলে হিন্দু ধর্মাবলম্বিরা ওই দীঘিতে পুণ্য¯œানের জন্য আসতে শুরু করেন। সেই থেকে ২৩৯ বছর ধরে দুর্গা সাগরে হিন্দু ধর্মাবম্বিরা পুণ্য¯œান করে আসছেন। তাদের বিশ্বাস করেন এ দীঘিতে ¯œান করলে বিগত দিনের সকল পাপ মোচন হয়ে যায়।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT