3:06 pm , April 11, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য এসএম ইমামুল হক ছুটিতে যাবার পরেও আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষনা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি’র পূর্ণ মেয়াদে ছুটির দাবী জানিয়েছেন তারা। আর তাই ছুটি ঘোষনার পরেও গতকাল বৃহস্পতিবার ১৬ তম দিনের মত সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। বরিশাল-পটুয়াখালী-ভোলা মহাসড়কে ইট ও গাছের গুড়ি ফেলে, টায়ারে আগুন জ¦ালিয়ে এবং সড়কে তাবু টানিয়ে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন তারা। এর ফলে সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত টানা ৬ ঘন্টা সীমাহিন ভোগান্তির শিকার হতে হয় দেশের বিভিন্ন স্থান হতে আসা কুয়াকাটার পর্যটক সহ কয়েক হাজার যাত্রীদের। ভোগান্তির অন্তছিলো না পরিবহন শ্রমিকদেরও। এর আগে সকাল ১০টায় বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বেলা ১১টায় তারা যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদ করায় কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাকারা ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জন্য শোক জানিয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালনের। এর পর পরই শুরু হয় তাদের বরিশাল-পটুয়াখালী ও ভোলা মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি। বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাস সংলগ্ন মহাসড়কে তাবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়ে ভিসি’র পদত্যাগ দাবীতে বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দিতে থাকেন।
তাদের অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধের কারনে সড়কের তিন প্রান্তে অসংখ্য যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়েছে। ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন কুয়াকাটাগামী পর্যটক সহ অসংখ্য যাত্রী ও যানবাহন শ্রমিকরা। পরবর্তীতে পূর্বের দিনের ন্যায় বিকাল ৫টায় বুধবারের জন্য সড়ক অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে বরিশাল বিশ^বিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ও বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসার মোহাম্মদ ইউনুস শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে বিশ^বিদ্যালয় যান। সেখানে তিনি ভিসি’র ছুটিতে যাবার বিষয়টি শিক্ষার্থীদের অবহিত করেন। পাশাপাশি মন্ত্রনালয়ের একজন যুগ্ম সচিবের বরাত দিয়ে বোর্ড চেয়ারম্যান ভিসি’র বরিশালে আর না আসার বিষয়টিও নিশ্চিত করেন। কিন্তু সিন্ডিকেট সদস্য ও বোর্ড চেয়ারম্যানের এ আশ^াসেও আশ^স্থ হতে না পেরে আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষনা দেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘‘আমাদের এক দফা এক দাবী ভিসি’র পদত্যাগ কিংবা পূর্ণ মেয়াদে ছুটিতে যাওয়া। আমরা শুনতে পেরেছে যে ভিসি ছুটির জন্য আবেদন করেছেন। এটাও শুনছি যে তিনি নাকি সাময়িক সময়ের জন্য ছুটি চেয়েছেন। কিন্তু আমরা তার সাময়িক ছুটির বিষয়টিতে একমত নই। আমাদের দাবী তিনি আর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে পারবে না। যতদিন তার চাকুরী আছে ততদিন পর্যন্তই তাকে ছুটিতে থাকতে হবে। আর নয়তো তিনি পদত্যাগ করবেন। এমনটি না হলে শুক্রবার এবং দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত সড়ক অবরোধ সহ আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, ‘শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় আন্দোলন করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এজন্য ভিসি এসএম ইমামুল হক তাদের রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেন। এর প্রতিবাদে গত ২৬ মার্চ থেকে ভিসি’র পদত্যাগ অন্যথায় স্বেচ্ছায় ছুটিতে যাওয়ার দাবীতে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। এর ফলে গত ১৬ দিন ধরে অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।