2:56 pm , March 31, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বাকেরগঞ্জের দাঁড়িয়াল ইউনিয়নের কোষাবড় গ্রামের রাজ্জাক হাওলাদারের অবৈধভাবে দখলকৃত জমির নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। এতে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে রাজ্জাক বাহিনী। সূত্র মতে, বাকেরগঞ্জ উপজেলার দাঁড়িয়াল ইউনিয়নের কোষাবড় গ্রামের স্থানীয় মৃত: জোনাব আলী হাওলাদারের পুত্র ও কামারখালী হযরত আলী ডিগ্রী কলেজের অফিস সহকারি এবং যুদ্ধাপরাধী গনি হাওলাদারের আপন ভাই রাজ্জাক হাওলাদার। তার জমি দখলের কারনে গত ৩০ বছর ধরে দাঁড়িয়ালের কোষাবর গ্রামের প্রায় ১০/১৫টি পরিবার নি.স্ব হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ভূমি সংক্রান্ত বিষয় জ্ঞান না থাকা মানুষদের জমির রেকর্ড, ডিগ্রী, খাজনা করে দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে রাজ্জাক নিজ পরিবারের সদস্য আরিফুর রহমান ও আবুল কালাম আজাদ শামিমকে নিয়ে নিরবভাবে জমি দখল করে। রাজ্জাকের খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত হয়েছে একই এলাকার অটোচালক জাকির হোসেন, রশিদ হাওলাদার, দেলোয়ার হোসেন, আঃ রহমান, এছাহাকসহ আরো অনেকে। সর্বশেষ রাতের আধারে প্রায় ২৬ শতাংশ জমি দখল নেওয়ার চেষ্টা করে সংখা লঘু পরিবারের পিতৃ-মাতৃহীন এসএন পলাশ ও প্রশান্ত দাসের জমি। জানা যায়, এসএন পলাশ গণমাধ্যমে কাজ করার সুবাদে নগরীতেই বসবাস করে এবং প্রশান্ত ঢাকাতে পড়াশুনা করে। এ সুযোগে রাজ্জাক তার ভূমি দস্যুবাহিনী নিয়ে গত মঙ্গলবার দুই ভ্ইায়ের জমিতে অবৈধভাবে স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ শুরু করার চেষ্টা করে। স্থানীয় মানুষের মাধ্যমে খবর পেয়ে গত বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ বরিশাল অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর দপ্তরে স্থায়ী ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে নিষেধাজ্ঞা মামলা দায়ের করে। যাহার নম্বর- ৭১/২০১৯। স্থানীয় থানা পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আদেশ দেয় আদালত । পরে পুলিশ রাজ্জাকের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। এ ব্যাপারে বাকেরগঞ্জ থানার ওসি মাকসুদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি জেনেছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এদিকে রাজ্জাকের বিরুদ্ধে নিজ কর্মস্থল হযরত আলী ডিগ্রী কলেজের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে। কলেজের ভবন নির্মাণের সময় মালামাল রাতের আধারে চুরি করে নিজের বাড়িতে ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে এই রাজ্জাক। কলেজে কেরানীর চাকুরী করে বলে নিজেকে জাহির করলেও জালিয়াতি তার আসল পেশা ও নেশা। যার মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়েছে এই রাজ্জাক। এ ব্যাপারে রাজ্জাক বলেন, আমার প্রায় ১০/১২ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। কিন্তু খাওয়ার মানুষ নেই। দুটি সন্তান রয়েছে তাও একযুগ যাবত অসুস্থ্য হয়ে বিছানায় পড়ে রয়েছে। সর্বশেষ ভূমি দস্যু রাজ্জাকের শিকার গণমাধ্যম কর্মী পলাশ বলেন, আমার পিতা-মাতার মৃত্যুর পড়ে শহরে বসবাস করি। আর আমার একটি ভাই ঢাকায় পড়াশুনা করে। ফলে মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসি। কিন্তু ভূমি দস্যু রাজ্জাক রাতের আধারে আমার পৈত্রিক সম্পত্তি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বৃদ্ধাগুলী দেখিয়ে শুরু করে অবৈধভাবে দালান নির্মাণ কাজ। স্থানীয় বাসিন্দা সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মিজান মিঞা বলেন, রাজ্জাক কোষাবর এলাকার একজন মুর্তিমান আতংক। সরকারি জমি থেকে শুরু করে সংখ্যালঘু পরিবারসহ নিজের বংশের মানুষের জমিও আত্মসাত করে ভোগ দখল করছে। উল্লেখ্য কোষাবর গ্রামের গৌরাঙ্গ দাসের ভূয়া সই করা স্টাম্পের কাগজ দেখিয়ে কোষাবর মৌজার ১০৩৭ দাগের ২৬ শতাংশ জমি দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে মামলাবাজ রাজ্জাক চক্র।