3:08 pm , March 27, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পুলিশের সামনে গলায় ব্লেড দিয়ে আঘাত করা শিশু অপরহণ ও হত্যা মামলার সেই আসামী দুখু মিয়া এবার পুলিশের হ্যান্ডকাপ সহ হাসপাতালের চতুর্থ তলার বাথরুম থেকে পালিয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে পুলিশের চোখে ধুলা দিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের ইএনটি ওয়ার্ডের বাথরুমের গ্রিল খুলে পালিয়ে যায় বলে দাবী পুলিশের। এই ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে আসামীর হেফাজতের দায়িত্বে থাকা পুলিশের এএসআই আমিনুল ইসলাম ও কনস্টেবল রিয়াদকে পুলিশ বাহিনী থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া দুখু মিয়া রংপুরের বাসিন্দা। সে নারায়নগঞ্জের ফতুল্লা থানার এক শিশু অপহরণ করে মুক্তিপন আদায় ও পরবর্তীতে হত্যার অভিযোগে দায়েরকৃত একটি মামলার আসামী। গত ৪ মার্চ ঢাকা পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুলিশ তাকে বরিশাল নগরীর পলাশপুরের গুচ্ছগ্রামে ভাড়া বাসা থেকে গ্রেপ্তার করতে আসলে পুলিশের সামনে গলায় ব্লেড দিয়ে আঘাত করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলো দুখু মিয়া। হাসপাতালে আসামী দুখু মিয়াকে হেফাজতের দায়িত্বে থাকা বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এএসআই আমিনুল ইসলাম জানান, গলায় আঘাতজনিত করনে গত ৪ ফেব্রুয়ারী থেকে দুখু মিয়াকে শেবাচিম হাসপাতালের চতুর্থ তলায় ইএনটি ওয়ার্ডে ১নং বেডে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিলো। এএসআই আমিনুল বলেন, মঙ্গলবার রাত সোয়া ৩টার দিকে দুখু বাথরুমে যাবার কথা বলে। এজন্য আমি (এএসআই আমিনুল) এবং কনস্টেবল রিয়াদ তার এক হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে ওয়ার্ডের বাথরুমে নিয়ে যাই। দুখু বাথরুমে ঢুকে অনেক জোড়ে কল ছেড়ে দেয়। এসময় আমি নিজেও বাথরুমের দরজার পাশে অবস্থান করছিলাম। কিন্তু বাথরুম থেকে বের হতে দেরী হওয়া এবং কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে বাথরুমের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখতে পাই বাথরুমের জানালার গ্রিল খুলে বাথরুমের প্যান এর উপর ফালানো। যে জুতা পড়ে বাথরুমে প্রবেশ করে সেই জুতা জোড়াও পড়ে আছে। তাৎক্ষনিকভাবে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করার পাশাপাশি নিজেরা খোঁজ খবর নিতে নেমে পড়লেও কোন লাভ হয়নি। এএসআই আমিনুল দাবী করে বলেন, আসামী দুখু মিয়া সুস্থ ছিলো। এজন্য ইএনটি ওয়ার্ডের চিকিৎসকদের একাধিকবার বলেছি হাসপাতালের প্রিজন সেলে পাঠানোর জন্য। কিন্তু তাদের আসা-যাওয়ায় কষ্ট হবে বলে তাকে ওয়ার্ডেই ভর্তি রাখে। আসামীর পালানোর বিষয়ে তার (আমিনুল) কিংবা দায়িত্বে থাকা কনস্টেবল রিয়াদ এর কোন গাফেলতী নেই বলেও দাবী করেন তিনি।
এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম বলেন, আসামীর হেফাজতের দায়িত্বে থাকা পুলিশ জানিয়েছে যে দুখু মিয়া জানালার গ্রীল খুলে হ্যান্ডকাপ নিয়ে পালিয়েছে। এ বিষয়ে আমরা পুলিশ হেড কোয়ার্টারে আমাদের প্রতিবেদন দাখিল করেছি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার সময় দায়িত্বে থাকা এএসআই ও কনস্টেবলকে সাময়িকভাবে বহিস্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি পালিয়ে যাওয়া আসামীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।