3:16 pm , March 25, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আজ স্বাধীনতা দিবসের ৪৮তম বার্ষিকী। স্বাধীনতার ঘোষণা ও মুক্তিযুদ্ধের সূচনার এই দিনে বাঙালি জাতি বিন¤্র শ্রদ্ধা ও গভীর কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করবে দেশমাতৃকার জন্য আত্মদান করা বীর সন্তানদের। জাতি নিবিড় আবেগের সঙ্গে শহীদদের স্মরণ করে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা নেবে এই দিনে। নিরীহ বাঙালির উপর একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদারের নির্মম হত্যাযজ্ঞের বিভীষিকা থেকে এ দিনে এক হয়ে মাথা তুলে দাড়িয়েছিল দেশের মানুষ। একাত্তরের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। বলেন, ‘এটাই হয়তো আমার শেষ বার্তা। আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন।’ বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বীর বাঙালি মাতৃভূমিকে হানাদারমুক্ত করতে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। প্রশিক্ষণহীন নিরস্ত্র বাঙালিরা যেভাবে একটি সুশৃঙ্খল অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল, পৃথিবীর ইতিহাসে তেমন সংগ্রামের দৃষ্টান্ত বিরল। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষের আত্মদান, তিন লাখ নারীর সম্ভ্রম আর বিপুল ক্ষয়ক্ষতির মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় বিজয়। পৃথিবীর মানচিত্রে অভ্যদয় ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশের। মুক্তিযুদ্ধের সময় এ দেশেরই কিছু লোক বিশ্বাসঘাতকতা করে হাত মিলিয়েছিল পাকিস্তানি ঘাতকদের সঙ্গে। তারা অংশ নেয় গণহত্যা, নারী নির্যাতন ও লুটতরাজ-অগ্নিকা-ের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে। সেই চিহ্নিত শত্রুদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর প্রত্যয় নিয়ে চার দশকের বেশি সময় ধরে স্বাধীনতা বা বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার অবশেষে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করে। বরাবরের মতো গোটা জাতি আজ শোক ও গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে অবনতচিত্তে স্মরণ করছে স্বাধীনতার জন্য আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের। বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপিত হবে। আজ সকাল আটটায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জাতীয় শিশু-কিশোর সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে এই অনুষ্ঠান থেকে সারা দেশে ও বিদেশে একযোগে একই সময়ে শুদ্ধ সুরে জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হবে। নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানেও একই সময়ে শুদ্ধ সুরে জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হবে। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সকালে নগরীর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ফলকে পুস্পস্তবক অর্পন করা হবে। এরপর ত্রিশ গোডাউন বধ্যভুমিতে পদযাত্রা, সকল সরকারী-আধাসরকারী, স্বায়ত্বশাসিতও বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, একত্রিশবার তোপধ্বনি, বঙ্গবন্ধু উদ্যানে শিশু-কিশোর সংগঠনদের সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও শরীর চর্চা প্রদর্শনী, শিশুদের চিত্রাংকন, দেশাত্মবোধক গান, কবিতা আবৃতি প্রতিযোগিতা, শিশুদের জন্য প্রমান্য চিত্র প্রদর্শন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের পরিবারকে গনসংবর্ধনা প্রদান, স্কুল কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপসানালয়ে জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি অগ্রগতি কামনা করে প্রার্থনা, উন্নত মানের খাবার পরিবেশন, নৌবাহিনীর জাহাজ প্রদর্শন, শিশুদের জন্য প্লানেট পার্ক উন্মুক্ত রাখা, মহিলাদের জন্য আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, আধা-সরকারি , স্বায়ত্বশাসিত এবং বেসরকারি ভবনে আলোকসজ্জা, মুক্তিযুদ্ধের দলিল, রেকর্ডপত্র ও চিত্র প্রদর্শনী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের তাৎপর্য ও উন্নয়ন অগ্রগতি বিষয়ে আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।