ঘাটতি নেই তবুও বিদ্যুৎ বিভ্রাট কৃত্রিম লোডশেডিংএ অস্থির নগরবাসি ঘাটতি নেই তবুও বিদ্যুৎ বিভ্রাট কৃত্রিম লোডশেডিংএ অস্থির নগরবাসি - ajkerparibartan.com
ঘাটতি নেই তবুও বিদ্যুৎ বিভ্রাট কৃত্রিম লোডশেডিংএ অস্থির নগরবাসি

3:47 pm , March 15, 2019

খান রুবেল ॥ বিদ্যুৎ এর লুকোচুরিতে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছে নগর জীবন। সরবরাহে ঘাটতি না থাকা সত্যেও দিনের মধ্যে অন্তত ১০ বার বিদুৎ আসা যাওয়া করছে। এমনকি বিদ্যুৎ এর লুকোচুরি খেলা থেকে নিস্তার পাওয়া যাচ্ছে না ছুটির দিন শুক্রবারেও। উন্নয়ন কাজের দোহাই দিয়ে বিদ্যুৎ এর কৃত্রিম লোডসেডিং সৃষ্টি করে রেখেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। ফলে ভোগান্তির অন্ত নেই নগরীর কয়েক লাখ বিদ্যুৎ গ্রাহকের। বিদ্যুৎ এর কৃত্রিম লোডসেডিং এর কারনে একদিকে জনজীবন যেমন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে তেমনি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ব্যবসায়ীক ক্ষেত্রে। মাস শেষে লাখ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল দিয়েও কথিত লোডসেডিং থেকে রেহাই পাচ্ছে না গ্রাহকরা। এ নিয়ে ক্ষোভের শেষ নেই নগরবাসির মধ্যে। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ এর দাবীতে যে কোন সময় ফুঁসে উঠতে পারেন তারা। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বর্তমানে বরিশাল নগরীতে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) অধিনে দুটি বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ রয়েছে। এ দুটি বিভাগের মাধ্যমেই মহানগরী এলাকায় বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সেবা প্রদান করা হচ্ছে। রূপাতলী ওজোপাডিকো এর কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়েছে, নগরীতে বিদ্যুৎ এর কোন ঘাটতি নেই। পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ রয়েছে গ্রাহকদের জন্য। যে কারনে অহেতুক লোডসেডিং এর কোন কারন নেই। কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে নগরীতে ছুটির দিন ছাড়া যে কোন দিন বিদ্যুৎ এর চাহিদা রয়েছে ১০৪ থেকে ১০৮ মেগাওয়ার্ট পর্যন্ত। এছাড়া ছুটির দিনে বিদ্যুৎ এর চাহিদা থাকতে ৯০ থেকে ৯৮ মেগাওয়ার্ট পর্যন্ত। ছুটির দিনে মিল কারখানা বন্ধ থাকার ফলে বিদ্যুৎ এর চাহিদাও কম থাকে। যে কারনে ছুটির দিনে কোন প্রকার যান্ত্রিক ত্রুটি না থাকলে লোডসেডিং এর সুযোগ নেই। কন্ট্রোল রুম থেকে এমন তথ্য জানানো হলেও বাস্তবতা পুরোপুরিই ভিন্ন। কেননা চাহিদা কম এবং পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্যেও কথিত লোডসেডিং এর কবলে নাস্তানাবুথ হতে হচ্ছে বিদ্যুৎ এর গ্রাহকদের। দিনের মধ্যে একাধিকবার বিদ্যুৎ আসা যাওয়ার ফলে বর্তমান ফাল্গুনের ভ্যাপসা গরমে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বসবাসকারিদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত নগরীর প্রায় প্রতিটি ফিডারেই বিদ্যুৎ বিদ্যুৎ এর লোড সেড দেয়া হয়েছে। কোন কোন ফিডারে ৫ থেকে ৬ বারও বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করেছে। এর ফলে নগরবাসির দৈনন্দিন স্বাভাবিক জীবন যাপন বিপর্যস্থ হয়েছে। যদিও বর্তমান সময়ে বিদ্যুৎ এর লুকোচুরি খেলাকে লোডসেডিং বলে মানতে নারাজ বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তাদের দাবী বিদ্যুৎ উন্নয়ন কাজের জন্য দিনের বেলায় প্রতিদিন বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হচ্ছে। তবে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখলেও পত্রিকায় বিজ্ঞাপন কিংবা মাইকিং না করার কারণে গ্রাহকদের ভোগান্তি আরও চরমে উঠেছে।
ওজোপাডিকো’র বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরন বিভাগ-২ এর সহকারী প্রকৌশলী উৎপল চন্দ্র দে বলেন, আমাদের অধিনে ১২টি ফিডার রয়েছে। যেখানে স্বাভাবিক দিনে বিদ্যুৎ এর চাহিদা রয়েছে ৩৫ মেগাওয়াট। এছাড়া শুক্রবার সহ যে কোন সরকারি ছুটির দিনে বিদ্যুৎ এর চাহিদা হচ্ছে ২৮ থেকে ৩০ মেগাওয়াট পর্যন্ত। যা আমরা স্বাভাবিক নিয়মেই জাতীয় গ্রীড থেকে পেয়ে থাকি। তিনি বলেন, প্রায় মাস খানে ধরে কাশিপুর সাবস্টেশন থেকে রূপাতলী বিদ্যুৎ অফিস পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার ৩৩ কেভি কন্ড্রাকটার এন্ড পুল চেঞ্জ এর কাজ চলছে। যা প্রজেক্ট এর মাধ্যমে করা হচ্ছে। এ কাজের আওতায় পুল তোলা এবং ১৯৬৮ সালের পুরানো তার পরিবর্তন করে নতুন তার লাগানো হচ্ছে। এ উন্নয়ন কাজের জন্য দিনের বেলায় সিসটেম অফ করে রাখতে হয়। নয়তো দুর্ঘটনা ঘটনার সম্ভাবনা থেকে যায়। তাই দিনের বেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহে কিছুটা ঝামেলা হচ্ছে। অবশ্য রাতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে না বলে দাবি করেন এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, শীতের সময়েও এই উন্নয়ন কাজ হয়েছে। তবে তখন বিদ্যুৎ এর চাহিদা কম থাকায় তখন সমস্যা ততটা অনুভুতি হয়নি। তবে বর্তমান সময়ে আমাদের কাছেও এটা একটি বেশিই সমস্যা মনে হচ্ছে। তাই প্রজেক্ট এর লোকদের দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য বলা হয়েছে। অবশ্য এই উন্নয়ন কাজ শেষ হলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট আর থাকবে না বলেও দাবি জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা। এদিকে উন্নয়ন কাজ হলেও বিষয়টি পূর্বে প্রচারনা কিংবা মাইকিং করে গ্রাহকদের অবগত না করার বিষয়ে তিনি বলেন, ফুল টাইম সিস্টেম অফ করে যখন বিদ্যুৎ এর উন্নয়ন কাজ করা হয় শুধুমাত্র তখনই আমরা মাইকিং করে আগে ভাগে গ্রাহকদের বিষয়টি অবগত করে থাকি। কিন্তু বর্তমানে যে কাজ চলছে সেটা ফুল টাইম নয়। কিছু সময়ের জন্য হওয়ায় প্রচারনার প্রয়োজন মনে হয়নি। তবে উন্নয়নের কাজের জন্য নগরবাসিকে আর কতদিন কৃত্রিম লোডসেডিং এর শিকার হতে হবে তার উত্তার জানা নেই বিদ্যুৎ বিভাগের ওই কর্মকর্তার।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT