3:34 pm , February 12, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক \ এসএসসি পরীক্ষার সময় কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার সরকারি সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে চলছে বরিশালের বেশকিছু কোচিং সেন্টার। জেলা প্রশাসনের তৎপরতায় অধিকাংশ কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকলেও কিছু অতি মুনাফা লোভী শিক্ষক গোপনে চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের কোচিং বানিজ্য। অনেকে কোচিং সেন্টারের বাইরে তালা ঝুলিয়ে ভেতরে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেয়া হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে কোচিং সেন্টার গুলো বন্ধ থাকলেও নগরীর বেশ কিছু বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অতিরিক্ত ক্লাসের নামে প্রকাশ্যেই কোচিং বানিজ্য করছেন। তবে এক্ষেত্রেপ্রশাসন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সরোজমিনে বরিশাল নগরীর জিলা স্কুল, উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, হালিমাখাতুন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, সরকারি শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও শহীদ আরজু মনি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দেখা গেছে প্রতিদিন সকাল ও বিকাল দুই বেলা অতিরিক্ত ক্লাসের নামে কোচিং বানিজ্য চলছে। আবার যে সকল বিদ্যারয়ে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র রয়েছে সেখানেও পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর পরই শুরু হয় কোচিং ক্লাস। এদিকে এসএসসি পরীক্ষা শুরুর পূর্বে থেকেই কোচিং সেন্টারের বিরুদ্ধে সরকারের দেয়া নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে বরিশাল জেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষ। তারা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে সংশ্লিষ্ট কোচিং সেন্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করছে। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার (১২ ফেব্রæয়ারী) সকালে বরিশাল নগরীর বগুরা রোড ও ফকির বাড়ি রোডের দুটি কোচিং সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাসেল ইকবাল। এসময় অক্সফোর্ড মিশন স্কুলের গনিতের শিক্ষক শ্যাম প্রসাদ বৈরাগী ও ফকির বাড়ি রোডের মো. সাইফুল ইসলাম নামের দুই শিক্ষককে সর্তক করে দেয়ার পাশাপাশি তাদের কোচিং সেন্টার বন্ধ করে দেন তিনি। এই অভিযানে বরিশাল র্যাব-৮ এর মেজর খান সজীবুল ইসলাম এর নেতৃত্বাধিন একটি টিম সহযোগিতা করে। এর আগেও বরিশালের আরো কয়েকটি কোচিং সেন্টারে জরিমানার পাশাপাশি কোচিং সেন্টার গুলো বন্ধ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত। তবে স্কুলে অতিরিক্ত ক্লাসের নামে হওয়া কোচিং এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না তারা। ফলে বিষয়টি নিয়ে জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। নগরীর হালিমাখাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসএম ফখরুজ্জামান বলেন, কোচিং এর বিষয়ে নীতিমালা রয়েছে। কিন্তু অতিরিক্ত ক্লাসের বিষয়ে নেই। আর পরীক্ষা চলাকালে অতিরিক্ত ক্লাস বন্ধ রাখতে হবে এমন কোন নির্দেশনা আমরা পাইনি। তাছাড়া পরিক্ষা চলাকালে কোচিং এর পাশাপাশি অতিরিক্ত ক্লাসও বন্ধ থাকলে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া বিঘিœত হবে। নগরীতে কোচিং সেন্টারে অভিযান পরিচালনাকারী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল ইকবাল বলেন, এসএসসি পরীক্ষা উপলক্ষে সরকার সব ধরনের কোচিং বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশক্রমে আমরা বরিশালের বিভিন্ন এলাকায় কোচিং সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করছি। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. ইকবাল আখতার বলেন, চোকিং সংক্রান্ত যে নীতিমালা হয়েছে তাতে পরীক্ষা চলাকালে কোচিং বন্ধ রাখার নির্দেশনা রয়েছে। তবে স্ব স্ব স্কুলে শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ক্লাস নেয়ার সুযোগ রয়েছে। এজন্য মহানগরী এলাকায় বিষয় প্রতি সর্বোচ্চ ৩শত টাকা নিতে পারবে। এছাড়া সর্বোচ্চ চারটি বিষয়ের জন্য ১২শ টাকা নেয়ার বিষয়টি নীতিমালায় উল্লেখ রয়েছে। তিনি বলেন, স্কুলের কোন শিক্ষক বাইরে গিয়ে কোচিং করাতে পারবে না। তাই এই বিষয়টিই আমরা দেখছি। তবে পরীক্ষা চলাকালে কোচিং সেন্টারের পাশাপাশি বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত ক্লাস না নেয়ার জন্যও আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছি। সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করে কেউ অতিরিক্ত ক্লাস নিলে সে বিষয়টিও দেখবেন বলে জানান জেলা প্রশাসনের ওই কর্মকর্তা।