3:05 pm , February 11, 2019

খান রুবেল \ রাজধানী সহ সারাদেশে নদী দলখমুক্ত করতে অভিযান চালাচ্ছে সরকার। ঠিক সেই মুহুর্তে কীর্তনখোলা নদীতে চলছে প্রকাশ্য দখল উৎসব। নদীর তীর থেকে প্রায় ৫ থেকে ৮ ফুট দীর্ঘ জমি দখল করে নির্মান করা হচ্ছে পাকা স্থাপনা। কীর্তনখোলা নদীর নগর প্রান্তে কেডিসি’র বিএডিসি ঘাট সংলগ্নে বিআইডবিøউটিএ’র ওই জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে ভবন ও গুদাম ঘর। প্রকাশ্যে দখল উৎসব চললেও বিষয়টিতে নজর নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর এক সময়ের জনপ্রিয় বিনোদন কেন্দ্র ছিলো কেডিসি নদীর তীর। কীর্তনখোলা গার্ডেন হিসেবে পরিচিত বিনোদন কেন্দ্রটি কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে। গার্ডেনের ওই জমিতে নির্মান করা হয়েছে সারের গুদাম। শুধু গার্ডেনের জমিতেই নয়, বরং তৎসংলগ্ন নদীর বিশাল অংশ ভরাট করে গড়ে নির্মান করা হচ্ছে আরো একটি নতুন গুদাম ঘর ও পাকা ভবন। নগরীর জর্ডন রোডের বধুয়া লজ এর বাসিন্দা মোস্তাক হোসেন নামক ব্যক্তি এই দখল কার্যক্রম চালাচ্ছেন। অপরদিকে অনেক আগেই বিএডিসি ঘাটের পশ্চিম পাশে নদীর বিশাল অংশ দখল করেছে হাওলাদার আয়রন নামক অপর একটি প্রতিষ্ঠান। সেখানেও নদীর বিশাল অংশ দখল করে নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের গুদাম ঘর বানিয়েছেন তারা। তার পাশে ইট-বালু-পাথরের খোলার আড়লে দখল করা হয়েছে নদীর বিশাল অংশ। এছাড়াও কীর্তনখোলা নদীর দীর্ঘ এলাকা অনেক আগে থেকেই অবৈধ দখল হয়ে আছে। এদিকে বিএডিসি ঘাট সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদী দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে মোস্তাক হোসেন বলেন, ২০০৪ সালে আমি এবং কাজী ফখরুল আলম নামে দু’জন মিলে ৪২ লাখ টাকা দিয়ে বিএডিসি ঘাট সংলগ্ন ৩৪ শতাংশ জমি ক্রয় করি। যেখানে গুদাম ঘর নির্মান করা হচ্ছে সেটা ওই জমির অংশ। তিনি বলেন, আমাদের পূর্বে জমির মালিক ছিলেন ফরিদা বেগম নামের একজন নারী। তিনি একজন সচিবের স্ত্রী। ফরিদা বেগম জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে জমিটি লিজ নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে সরকারের অনুমতি সাপেক্ষেই তিনি ওই জমি আমাদের কাছে বিক্রি করেছেন। আমাদের কাছে জমির বৈধ দলিলপত্রও রয়েছে। সুতরাং নদী দখলের যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা ঠিক নয়’ বলে মন্তব্য করেন ওই ব্যক্তি। এ প্রসঙ্গে বরিশাল বন্দর কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কেডিসি এলাকায় নদী বন্দরের জমি রয়েছে। সেই জমিতে ওই ভবন নির্মান হচ্ছে নাকি নদী দখল করা হচ্ছে সে বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে বিএডিসি ঘাট সংলগ্নে কোন জমি বিআইডবিøউটিএ লিজ দেয়নি। তাই বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবেন বলে জানান তিনি। অপরদিকে বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, সরকারি জমি ইজারা নেয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে বিক্রির কোন সুযোগ নেই। কেউ চাইলেই ওই জমি কেনা-বেচা করতে পারবে না। ওই জমি কিসের উপর ভিত্তি করে নিজের দাবী করছেন সেটা আমার বোধগম্য নয়। তবে ঘটনাস্থলে লোক পাঠিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান জেলা প্রশাসক।