3:19 pm , February 10, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক \ শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পর্যাপ্ত লিফট থাকার পরেও সেবা পাচ্ছে না রোগী ও তাদের স্বজনরা। বন্ধ করে রাখা হচ্ছে দুই-তৃতীয়াংশ লিফট। এর ফলে সীমাহিন দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। বিশেষ করে শুক্রবার কিংবা যে কোন ছুটির দিন এবং রাত হলে লিফট সেবা পুরোপুরিই ভেঙে পড়ছে। গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে হাসপাতাল পরিদর্শন কালে এমন চিত্রই পরিবর্তনের চোখে পড়ে। গতকাল শুক্রবার হাসপাতালে ঘুরে দেখা যায় জরুরী বিভাগে একটি লিফট চলছে। মাঝের বøকে চলছে একটি ছোট লিফট। পূর্বে প্রান্তে থাকা অপর দুটি লিফটের একটিও চলছে না। অর্থাৎ রোগী, স্বজন, চিকিৎসক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাঁচ তলায় ওঠা নামার জন্য দুটি মাত্র লিফট চালু রয়েছে। তার মধ্যে গ্রামগঞ্জ থেকে আসা রোগীর স্বজনদের লিফটে তুলছেন না অপারেটররা। তবে সুট-বুট টাই পড়া দালালদেরও খাতির করে নিচ তলা থেকে উপর পর্যন্ত পৌছে দিচ্ছেন অপারেটররা। হাসপাতালের কয়েকজন লিফট অপারেটরদের সাথে কথা হলে তারা জানান, হাসপাতালে মোট ১০টি লিফট রয়েছে। তার মধ্যে তিনটি লিফট রয়েছে সম্পূর্ণ আধুনিক প্রযুক্তির। পর্যাপ্ত লিফট থাকা সত্যেও সিন্ডিকেট করে সেগুলো বন্ধ রাখা হয়। এর কারন হিসেবে তারা অভিযোগ করেন, প্রকৃত অপারেটররা লিফট চালান না। চুক্তিভিত্তিক লোকের কিংবা বহিরাগত লোক দিয়ে চালানো হয় লিফট গুলো। যারা লিফট পরিচালনা করেন তারা রোগী ওঠা-নামানোর জন্য বকশিসের নামে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। লিফট কম থাকার কারনে অবৈধ আয়ও ভালো হয় বিধায় কৌশলগতভাবে লিফট বন্ধ করে রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
তবে শেবাচিম হাসপাতালে লিফট রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বে থাকা গণপূর্ত মেডিকেল কলেজ ই-এম উপ-বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফিরোজ আলম পরিবর্তনকে বলেন, হাসপাতালে যে ১০টি লিফট রয়েছে তার মধ্যে ৩টি নতুন। বাকি ৭টি অর্ধশত বছরের পুরানো। যে কারনে পুরানো লিফটগুলো প্রায়শই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সংস্কার করে পুনরায় চালানো হচ্ছে। এজন্য মাঝে মধ্যে একটু সমস্যায় পড়তে হয়।
তিনি বলেন, পুরাতন সবকটি লিফই এখন সচল। তবে নতুন তিনটি লিফটের মধ্যে ২টি বন্ধ। এর কারনে লিফট তিনটি বিশেষ সফটওয়ারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এজন্য লিফটগুলো রক্ষনাবেক্ষনের জন্য নির্দিষ্ট একটি মেয়াদ দেয়া থাকে। ওই মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে স্বাভাবিক ভাবে ওগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। লিফট সরবরাহকারী কোম্পানি বিশেষ গোপন কোড নম্বরের মাধ্যমে পুনরায় মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়।
এসও ফিরোজ আলম বলেন, গত দু’দিন পূর্বে লিফট দুটি বন্ধ হয়েছে। কোম্পানির লোকেদের খবর দেয়া হয়েছে। শনিবারের মধ্যে তাদের আসার কথা রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে দু’একদিনের মধ্যেই লিফট দুটি চালু হবে জানিয়ে ফিরোজ আলম বলেন, জনবল সংকটের কারনে আমরা নিয়মিত লিফট পরিচালনা করতে পারছিনা। আমাদের ৬০ জন লোকের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু সেখানে আছে মাত্র ১৮ জন। এ কারনেই সেবা দেয়া সম্ভব হয় না। তার মধ্যে শুক্রবার ছুটির দিনে অনেকে ছুটিতে থাকেন। তাই ছুটির দিনে লিফট চলাচলে একটি সমস্যায় পড়তে হয়। জনবল সংকট দুর হলে এ সমস্যা থাকবে না বলে জানান তিনি।