3:21 pm , January 24, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামীম বলেছেন, ‘আমি চোর নই। টিআর, কাবিখার টাকা খাওয়ার লোক আমি নই, চাকুরী দিয়ে টাকা খাবার লোকও নই। তাই আপনারা নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন। বরিশালের উন্নয়ন হবেই। সাংবাদিকদের সহযোগিতা পেলে বরিশাল সিটি মেয়রকে সাথে নিয়ে বরিশালকে একটি মিনি সিঙ্গাপুরে রূপান্তরিত করবো। গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর সার্কিট হাউস মিলনায়তে বরিশাল জেলার সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় বরিশাল সদর-৫ আসনের এমপি ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম এসব কথা বলেছেন। জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।
প্রধান অতিথি’র বক্তৃতায় পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি এবং আমার মন্ত্রনালয়ের উপ-মন্ত্রী দু’জনই নদী ভাঙন এলাকার মানুষ। সেটা বুঝতে পেরেই হয়তো প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি ভেবেছেন ভাঙন এলার মানুষ হিসেবে নদী ভাঙনের গুরুত্ব কতটুকু তা আমরাই বুঝতে পারবো। আমি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েই বরিশালে আসতে পারতাম। কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ’র অসুস্থতার কারনে আসতে পারিনি। তিনিই আমাকে বলেছেন বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে সাথে নিয়ে বরিশালে আসার জন্য। আর তাই সাদিক আবদুল্লাহকে সাথে নিয়েই বরিশালে এসেছি। তিনি বলেন, সাদিক আবদুল্লাহ বলেছিলো আমাকে সংবর্ধনা দেয়ার জন্য। কিন্তু আমি তাতে রাজি হয়নি। কারন আমার অভিভাবক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ-এমপি আসেননি। আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, আমি এবং সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এক সাথে রাজনৈতিক সংবর্ধনা নিতে চাই। একই পরিবারের লোক হয়ে আমরা তিনজন মিলে বরিশালকে একটি স্বপ্নের শহরে পরিনত করবো। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পত্রিকা ভালোভাবে চালানোর জন্য আমাদের নিয়ে অসত্য কথা লিখে বিভেধ সৃষ্টি করবেন না। যে যেভাবে বলবে সেভাবেই লিখুন, পত্রিকা ভালো চালাতে বাড়িয়ে লিখবেন না। এতে হয়তো আপনাদের পত্রিকা ভালো চলবে, কিন্তু আমাদের যে কাঙ্খিত উন্নয়ন তা আর হবে না’। তিনি বলেন, নির্বাচনের পূর্বে আমি এবং সাদিক আবদুল্লাহ এক সাথে কাজ করেছি। আমাকে বিজয়ী করতে সাদিক আবদুল্লাহ এতটা আন্তরিক ছিলো যে সে তার স্ত্রী-সন্তানদের আমেরিকা থেকে বরিশালে নিয়ে আসেন প্রচার প্রচারনার জন্য। এটা যে আমার জন্য কত বড় একটি পাওয়া এবং তার এই উপকারের কথা আমি খকনই ভুলব না। বরং কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ রাখব। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, নদী ভাঙনের কষ্ট একমাত্র সেই বোঝে যার ঘর বাড়ি নদী ভাঙনে বিলিন হয়েছে। তাই নদী ভাঙনের হাত থেকে বরিশালবাসিকে রক্ষা করাই আমার প্রধান কাজ। আর আগে থেকেই এটা আমার স্বপ্ন ছিলো। আল্লাহ আমার সেই স্বপ্ন পুরনের সুযোগ দিয়েছেন। তিনি বলেন, এরই মধ্যে আমি কীর্তনখোলা নদীর চরবাড়িয়া, বেলতলা, চরকাউয়া, চরমোনাই সহ বিভিন্ন নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারী ভাঙন রোধে চরবাড়িয়া এলাকায় কীর্তনখোলা নদীতে জিও ব্যাগ ফেলার কার্যক্রম শুরু হবে। এর পর ১৫ মার্চ শুরু হবে ব্লক এর কাজ। যথ দ্রুত সম্ভব এই কাজ শেষ করা হবে। তাছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার সাথে সড়ক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম দোয়ারিকা শিকার পুর সেতু নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষায় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীদের পূর্বের গৃহিত সকল ফাইলপত্র চাওয়া হয়েছে। শুক্রবার তাদের নিয়ে আমি নিজে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করবো। মন্ত্রী আরো বলেন, শুধু নদী ভাঙন প্রতিরোধ নয়, আপনারা দেখবেন আগামী ৫ বছরের মধ্যে শুধুমাত্র সিটি এলাকাই নয়, বরং বরিশাল সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নকে শহরে রূপান্তরিত করবো। আর বরিশাল হবে একটি মিনি সিঙ্গাপুর। মতবিনিময় সভায় বরিশালের বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন বরিশাল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এসএম ইকবাল, টেলিভিশন মিডিয়া এ্যাসোসিয়শন ও সাংবাদিক ইউনিয়ন বরিশাল এর সভাপতি হুমায়ুন কবির, মেট্রোপলিটন প্রেসক্লাকের সভাপতি কাজী আবুল কালাম আজাদ, মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম বরিশাল জেলার সভাপতি কাজী মিরাজ মাহমুদ, সিনিয়র সাংবাদিক তপন চক্রবর্তী, পুলক চ্যাটার্জী, নাসিমুল আলম, রাহাত খান, সুশান্ত ঘোষ, আব্দুর রাজ্জাক ভুইয়া, সাইফুর রহমান মিরন প্রমুখ। এছাড়াও মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল, সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকে একেএম জাহাঙ্গীর, শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী নাসির উদ্দিন বাবুল, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নজরুল বিশ্বাস প্রমুখ।