3:12 pm , January 4, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ক্ষমতা দখল অসন্তোষ বাড়ছে নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে। দীর্ঘ দুই যুগের বেশি সময় বাস মালিক সমিতি’র নিয়ন্ত্রক আফতাব হোসেনকে সরিয়ে ক্ষমতা দখলের চেষ্টায় মরিয়া বিশেষ মহল। গত এক বছর ধরে ভেতরগতভাবে ক্ষমতা দখলের যুদ্ধ চললেও তা বর্তমানে ওপেন সিক্রেট। আর যার পেছনে রয়েছেন বাস ও থ্রি-হুইলার শ্রমিক ইউনিয়নের দুই প্রভাবশালী নেতা। বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপ ও শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্রে জানাগেছে, দীর্ঘ প্রায় ২৭ বছর ধরে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে একক আধিপত্ত বিস্তার করে আসছেন মহানগর শ্রমিক লীগের সভাপতি আফতাব আহমেদ। পূর্বে তিনি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি থাকলেও বর্তমানে তিনি জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি। ক্ষমতাসিন দলের প্রভাবশালী নেতা হওয়ার সুবাধে বাস মালিক এবং শ্রমিকদের শাসন এবং শোসনের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে অনেক আগে থেকেই। সাধারণ বাস মালিকদের অভিযোগ ঢাকা বা অন্য কোন রুট থেকে নতুন কোন গাড়ি বরিশালে প্রবেশের সিদ্ধান্ত একমাত্র আফতাবই দিয়ে থাকেন। মনমত অর্থের যোগান না পেলে নতুন কোন পরিবহন ঢোকার অনুমতি দিচ্ছেন না তিনি। এ কারনেই গত কয়েক বছর পূর্বে বরিশাল-মাওয়া রুটে বন্ধ হয়ে যায় ইলিশ পরিবহন। সূত্র আরো জানায়, আফতাব হোসেন সামান্য বিষয় নিয়ে সাধারণ শ্রমিক এবং মালিকদের নির্যাতন করতেন। যার অহরন প্রমান মালিক এবং শ্রমিকদের কাছে রয়েছে। প্রশাসনের লোকেদের উপর হামলার ইন্দোন এবং পরিবহন সেক্টরকে কাজে লাগিয়ে সর্বমহলকে জিম্মি করার নজিরও রয়েছে একাধিক। তার মধ্যেই উপর মহলকে ম্যানেজ করেই চলছিলো আফবাত হোসেন এর ক্ষমতার দাপট। যা নিয়ে সাধারণ মালিক ও শ্রমিকরা অসন্তোষ হয়ে পড়েছে। সেই সুযোগটিকেই হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে বিশেষ মহল। তারা শ্রমিক নির্যাতন এবং লুটপাটের ইস্যু ধরে আফবাত সাইজ মিশন শুরু হয়েছে। এমনকি বর্তমান পরিস্থিতিতে তার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার সম্ভাবনাও দেখা ফুটে উঠছে। কেননা এরই মধ্যে শ্রমিককে মারধরের ঘটনাকে ইস্যু করে বাস মালিক সমিতিতে অবাঞ্চিত ঘোষনা করা হয়েছে মহানগর শ্রমিক লীগের সভাপতি ও বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি আফতাব হোসেনকে। হামলার ঘটনায় ক্ষমা চেয়েও শেষ রক্ষা না পাওয়া আফতাব হোসেনকে ঢুকতে দেয়া হয়নি মালিক সমিতি কার্যালয়ে। তাছাড়া বৃহস্পতিবার রাতে ট্রাক ও থ্রি-হুইলার শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা কালাম মোল্লার নেতৃত্বে দখলে নেয়া হয়েছে নথুল্লাবাদ বাস মালিক সমিতি কার্যালয়। ট্রাক ও থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের নিয়ে তিনি সমিতি দখলে যান। এর ফলে গত বুধবারের পর থেকে বাস টার্মিনালে প্রবেশ করতে পারছেন না আফতাব হোসেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে জেলা বাস মালিক গ্রুপ ও মহানগর শ্রমিক লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন বলেন, শ্রমিককে মারধরের বিষয়টি এখানে মুল বিষয় নয়। বর্তমান যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তার পেছনে কারন একটাই। তা হলো বাস মালিক গ্রুপের সভাপতির চেয়ারটি দখল করার। তিনি বলেন, এমনটি হবে তা আমি গত এক বছর আগেই টের পেয়েছিলাম। আর এখন তা প্রকাশ্যে। যারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে তা এখন আর বোঝার বাকি নেই। তারা এখন ওপেন কাজ করছে। তবে এই মুহুর্তে এ নিয়ে মুখ খুলতে অপরাগতা প্রকাশ করে আফতাব বলেন, আরো দু’একদিন দেখবো। তার পরেই যা সিদ্ধান্ত নেয়ার তা নেয়া হবে। এদিকে সাধারণ বাস মালিক ও শ্রমিকরা বলেন, ক্ষমতা দখল নিয়ে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল অচলাবস্থার দিকে আগাচ্ছে। এমনকি এ নিয়ে বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকাও করছেন তারা। তাই বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার আগেই রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।