3:12 pm , January 1, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজে বিলিন হয়ে গেলো ৫০ দশকের পুরানো নেট হাউস ও মাঠ পরীক্ষণ এবং গবেষনা কেন্দ্রটি (বোটানিক্যাল গার্ডেন)। মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধীন এই গবেষনা কেন্দ্রের প্রায় বিরল প্রজাতীর গাছ কেটে বানানো হচ্ছে ট্রেনিস গ্রাউন্ড। যা নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। বিএম কলেজ এলাকার বাসিন্দা ও একই কলেজের সাবেক ছাত্র মোহাম্মদ আলী জানান, প্রায় ৫০ দশক পূর্বে বিএম কলেজের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের গবেষনা কাজের জন্য নেট হাউস ও মাঠ পরীক্ষন কেন্দ্রটি বানানো হয়েছিলো। যা বোটানিক্যাল গার্ডেন নামেই পরিচিত। এখানে শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে শিক্ষা দেয়া হত। তবে হঠাৎ করেই বোটানিক্যাল গার্ডেন ধ্বংস করে সেখানে শিক্ষকদের খেলাধুলার জন্য টেনিস গ্রাউন্ড বানানো হয়েছে। সেই সাথে কেটে ফেলা হয়েছে বিরল প্রজাতীর কিছু বৃক্ষ। মৃত্তিকা ও বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র অনুষ কুমার চক্রবর্তী বলেন, দীর্ঘ বছর ধরেই বোটানিক্যাল গার্ডেনটি রয়েছে। তবে আমি বিএম কলেজে ভর্তি হওয়ার গত তিন বছরেও দেখিনি এখানে কোন গবেষনা কাজ হয়েছে। স্যাররা আমাদের আমাদের মাঠ গবেষনার বিষয়ে কখনো উৎসাহিত করেননি। বৃক্ষ সংকটের অজুহাতে এখানে গবেষনা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। একই বিভাগের ছাত্রী মালিহা তাসফী নিশি বলেন, গবেষনা কেন্দ্রে বর্তমানে নাগলিঙ্গম, সুন্দরী সহ বিরল প্রজাতীর কিছু গাছ রয়েছে। গবেষনা কেন্দ্রের মাঝামাঝি স্থানে থাকা ওইসব গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে হচ্ছে। মাঠ প্রশিক্ষক কেন্দ্রটি গবেষনা কাজের জন্য সংস্কার কিংবা উন্নয়ন না করে সেখানে শিক্ষকদের খেলাধুলার জন্য টেনিস গ্রাউন্ড নির্মানের বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওই শিক্ষার্থী। বিএম কলেজের একটি দায়িত্বশিল সূত্র জানায়, বিএম কলেজে যত গাছ রয়েছে তার সবগুলোই গণপূর্ত বিভাগের অধিনে। এসব গাছ কাটার জন্য চার সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিও রয়েছে। যার প্রধান জেলা প্রশাসক এবং সদস্য সচিব বিএম কলেজ অধ্যক্ষ। বাকি দু’জন সদস্য গণপূর্ত ও বনবিভাগের প্রতিনিধি। কিন্তু বোটানিক্যাল গার্ডেনের গাছ কাটার জন্য কমিটি কিংবা বন বিভাগের অনুমতী নেয়া হয়নি। তবে এ বিষয়ে বনবিভাগের কারোর বক্তব্য না পাওয়া গেলেও বিএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শফিকুর রহমান সিকদার বলেন, নেট হাউসে দীর্ঘ বছর ধরেই গবেষনা কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে ওখানে টেনিস গ্রাউন্ড অনেক আগে থেকেই আছে। নতুন করে বানানো হচ্ছে না। পুরানো টেনিস গ্রাউন্ডটিকেই পুনঃসংস্কার করা হচ্ছে মাত্র। তাছাড়া নেট হাউসে দু-একটি ছাড়া বিরল প্রজাতীর গাছও নেই। যে গাছ কাটা হয়েছে তা মেহেগুনী গাছ। তাও একটি মাত্র গাছ কাটা হয়েছে। এজন্যই কাউকে বলার প্রয়োজন মনে হয়নি বলে মন্তব্য করেন অধ্যক্ষ।