2:35 pm , December 20, 2019

পরিবর্তন ডেস্ক ॥ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। আওয়ামী লীগই এদেশের মানুষকে কিছু দিতে পেরেছে। আওয়ামী লীগই একমাত্র দল যারা অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কাজ করছে। আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবো, এটাই আমাদের লক্ষ্য। গতকাল শুক্রবার বিকেলে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বক্তব্যের শুরুতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের উপর আঘাত এসেছে বারবার। জাতির পিতাকেও কতবার হয়রানি করা হয়েছে, মিথ্যা মামলা হয়েছে, ফাঁসির আদেশ হয়েছে। তারপরও তিনি সততার সঙ্গে এগিয়ে গিয়েছিলেন বলেই বাঙালি একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ শেষ করার অনেক চেষ্টা হয়েছে। যখনই আঘাত এসেছে, সবার আগে এসেছে আওয়ামী লীগের ওপরই। কিন্তু জাতির পিতার হাতে গড়া এই সংগঠন ধ্বংস করতে পারেনি কেউই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ থেকে ২০১৯ আজ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। এই এক দশকেই বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, দারিদ্র্যের হার ২০ দশমিক ৫ ভাগে নামিয়ে এনেছি। জাতির পিতা যে স্বল্পোন্নত দেশ রেখে গিয়েছিলেন, আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি। এটা ধরে রাখতে হবে। আমাদের লক্ষ্য সামনে আরও এগিয়ে যাওয়া। তিনি বলেন, যিনি ত্যাগ স্বীকার করতে পারেন, তিনি সফল হবেন। আর এই কাজটা আওয়ামী লীগই সবচেয়ে বেশি করেছে। এর জন্যই জনগণ কিছু পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, কাউন্সিলের মধ্য দিয়েই সংগঠন চাঙ্গা হয়, সংগঠন শক্তিশালী হয়। আমরা সেভাবেই দলকে গড়ে তুলতে চাচ্ছি। এর আগে বিকেল ৩টা ৫ মিনিটে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এরপর পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে দেশের অন্যতম প্রাচীন এ রাজনৈতিক দলটির সম্মেলন উদ্বোধন ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কানায় কানায় পূর্ণ। সম্মেলনের প্রথম দিনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রতিবেদন পেশ করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেন। আজ শনিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে কাউন্সিল অধিবেশন হবে। সেখানে নতুন কমিটি নির্বাচন করবেন দলের কাউন্সিলররা। সম্মেলন সঞ্চালনা করছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ। সকাল থেকে নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমবেত হয়েছেন। সম্মেলনকে ঘিরে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে নেতাকর্মীদের মধ্যে রয়েছে উৎসবের আমেজ। সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণ, আলোকসজ্জায় ঝলমল করছে পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। সম্মেলনে সারা দেশ থেকে প্রায় ৭ হাজার কাউন্সিলর, ১৫ হাজার ডেলিগেটসহ ৫০ হাজার নেতাকর্মী ও আমন্ত্রিত অতিথি অংশ নিয়েছে। ৮১ সদস্যের মধ্যে চারটি পদ শূন্য থাকায় মূল মঞ্চে চেয়ার ছিল ৭৭টি। মঞ্চের সামনে নেতাকর্মীদের জন্য চেয়ার ছিল ৩০ হাজার। এ ছাড়া সম্প্রসারিত মঞ্চে ১৫ হাজার চেয়ার ছিল। ২৮টি এলইডি পর্দায় দেখানো হয় সম্মেলনের পুরো অনুষ্ঠান। আওয়ামী লীগের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ও ঐতিহ্যের বিভিন্ন নিদর্শন প্রদর্শন করেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)। স্বাধীনতাসংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়া দল আওয়ামী লীগের দীর্ঘ পথচলার বিভিন্ন ইতিহাসের ওপর ভিত্তি করে ১০টি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করছে তারা। এ ছাড়া ২১তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে ওয়েব পেজ উদ্বোধন করেছে প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটি। ওয়েব পেজের ভিডিও অংশে সম্মেলন লাইভ দেখানো হচ্ছে। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন রোজ গার্ডেনে জন্ম আওয়ামী লীগের। এখন ঐতিহ্যবাহী এই দলটির বয়স ৭০ বছর। এ পর্যন্ত দলটির ২০টি জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে দুই দিনব্যাপী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন ২০১৬ সালের ২২ ও ২৩ অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে শেখ হাসিনা সভাপতি ও ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।