2:45 pm , December 12, 2019
হেলাল উদ্দিন ॥ ভবিষ্যতে র্যাগিংসহ যে কোন অপরাধের সাথে জড়িত না হওয়ার লিখিত শর্তে শাস্তি থেকে রক্ষা পাচ্ছে বরিশাল ইনিষ্টিটিউট অব হেলথ এন্ড টেকনোলোজির (আইএইচটি) জুনিয়রকে র্যাগিংকারী ৫ ছাত্রী। তবে সেই রক্ষা পাওয়ার বিষয়টিও এখন পর্যন্ত চুড়ান্ত হয়নি। বিষয়টির চুড়ান্ত সিদ্বান্ত দেবেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। আইএইচটি’র কর্তৃপক্ষের কাছে ছাত্রী ও অভিভাবকদের দেয়া লিখিত শর্ত মঞ্জুরের জন্য তার কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি যদি মঞ্জুর করেন তাহলে রক্ষা পাবেন অভিযুক্ত ওই পাঁচ ছাত্রী বলে জানিয়েছেন আইএইচটি’র অধ্যক্ষ ডা. মো. সাইফুল ইসলাম।
আইএইচটি এর দ্বিতীয় বর্ষের ফিজিওথ্রেরাপি বিষয়ের ছাত্রীকে র্যাগিং করে তৃতীয় বর্ষের পাঁচ শিক্ষার্থী। র্যাগিংয়ের শিকার ওই ছাত্রী গত ২৫ নভেম্বর আইএইচটি’র ছাত্রী নিবাসে মাত্রারিক্ত ঘুমের বড়ি সেবন করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। বিষয়টি সারাদেশব্যাপি আলোচিত ঘটনায় পরিনত হয়। তাই ঘটনা তদন্তে পরের দিন ৭ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবার নির্দেশনা দিয়ে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। এরই প্রেক্ষিতে ১ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষের কাছে এ রিপোর্ট জমা দেন তদন্ত কমিটির প্রধান উপাধ্যক্ষ শুভংকর বাড়ৈ। তবে ঘটনাটি আলোচিত হওয়ায় কর্তৃপক্ষ প্রতিবেদন প্রকাশ না করে পরবর্তী সিদ্ধান্তের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক’র কাছে পাঠানো হয়। প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ডা. মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত ছাত্রী ও অভিভাবকরা বিষয়টি সমাধানের জন্য প্রস্তাব দেয়। তখন বিষয়টি সমাধানের জন্য তাদের শর্ত দেয়া হয়। শত হলো-ভবিষ্যতে তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ উঠলে কোন ধরনের তদন্ত ও আতœপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে বহিস্কার করা হবে। ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা শর্তে রাজি হয়ে স্ট্যাম্পে লিখিত দিয়েছে। যে কারনে অভিযুক্ত ছাত্রীদের বিরুদ্ধে আপাতত কোন ব্যবস্থা গ্রহন হয়নি। এছাড়া অভিযোগকারী ছাত্রী ও তথা দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীরাও এ সিদ্ধান্তে একমত পোষন করেছে। তাই তাদের লিখিত কপি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে। এর আগে তদন্ত রিপোর্টও পাঠিয়েছি। ডিজি প্রতিবেদন ও লিখিত শর্ত দেখে এখন পর্যন্ত কোন নির্দেশনা দেননি। তিনি (ডিজি) যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটাই বাস্তবায়ন করা হবে।
মহাপরিচালক স্বপ্রনোদিত হয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে কঠিনতর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন তাহলে সেটাই বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি আরো বলেন এছাড়া আমরা সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে সে জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে। অধ্যক্ষ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ভবিষ্যতে অনাকাঙ্খিত এসব ঘটনার আর সম্মুখীন হতে হবে না।
পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে হলে সার্বক্ষনিক ভাবে শিক্ষক থাকার ব্যবস্থা করা, এক বর্ষের ছাত্রীদের এক স্থানে থাকার ব্যবস্থা করা, যাতে জুনিয়র সিনিয়র অপেক্ষাকৃত দুরুত্বে অবস্থান করতে পারে এবং ছাত্রী নিবাসে বিভিন্ন খেলাধুলার ব্যবস্থা করা। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে কর্তৃপক্ষের এসব পদক্ষেপে ছাত্র ও ছাত্রী হলে ফের শান্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। এটা চলমান থাকলে ভবিষ্যতে জুনিয়র শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ও হলে নিরাপদ থাকবে।