দরিদ্রদের জন্য এক কেজি আর সামর্থ্যবানরা যত খুশি দরিদ্রদের জন্য এক কেজি আর সামর্থ্যবানরা যত খুশি - ajkerparibartan.com
দরিদ্রদের জন্য এক কেজি আর সামর্থ্যবানরা যত খুশি

2:41 pm , December 12, 2019

 

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বাজার সিন্ডিকেট এবং দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রনে ন্যায্য মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি করছে সরকার। ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ডিলারদের মাধ্যমে নগরীর ৭টি পয়েন্টে প্রতিদিন পেঁয়াজ বিক্রি কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। তবে ন্যায্য মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি কার্যক্রমে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ডিলারদের বিরুদ্ধে।
কখনো নির্ধারিত মূল্যের থেকে বেশি আদায় আবার কখনো নির্ধারিত পরিমানের উপরে পেঁয়াজ বিক্রি করছে তারা। ফলে সরকারের উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাশাপাশি নি¤œ আয়ের মানুষ ন্যায্য মূল্যে পেঁয়াজ ক্রয় কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যদিও এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানিয়েছেন টিসিবি বরিশাল আঞ্চলিক প্রধান আনিসুর রহমান।
টিসিবি সূত্রে জানাগেছে, ‘বাজার দর নিয়ন্ত্রনের পাশাপাশি সকল পর্যায়ের মানুষ যাতে পেঁয়াজ কিনতে পারে সে জন্য মূল্য এবং বিক্রি’র পরিমান নির্ধারন করে দিয়েছে সরকার। সে অনুযায়ী প্রেতি কেজি পেঁয়াজ ৪৫ টাকা এবং এক একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ এক কেজি পেঁয়াজ কিনতে পারবে বলে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ বিক্রিতে শুরুতেই সাড়া পড়ে যায়। পেঁয়াজ নিতে নির্ধারিত পয়েন্টে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়।
এদিকে টিসিবি’র পেঁয়াজের চাহিদা বেশি থাকা এবং তৃনমুলের ভোক্তা পর্যায়ে সরকারের ন্যায্য মূল্যের পেঁয়াজ পৌছে দিতে প্রথমে নগরীতে ৫টি ট্রাকে বিক্রি কার্যক্রম চালালেও পরে আরও দুটি বৃদ্ধি করা হয়। বর্তমানে ৭টি ট্রাকে নগরীর ৭টি পয়েন্টে ঘুরে ঘুরে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে।
অপরদিকে দীর্ঘ লাইনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থেকে এক কেজি পেঁয়াজ ক্রয়ের সুযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ কারনে ভোক্তা প্রতি পেঁয়াজের পরিমান বৃদ্ধি করা হয়। পূর্বে এক কেজি বিক্রি’র নিয়ম থাকলেও বর্তমানে প্রতি জন ভোক্তা এক সঙ্গে সর্বোচ্চ দুই কেজি পেঁয়াজ কিনতে পারবে বলে নিয়ম বেধে দেয়া হয়েছে।
কিন্তু নিয়ম এমনটি থাকলেও ঘটছে উল্টোটা। সরকার এবং টিসিবি’র নিয়ম না মেনে নিজেদের ইচ্ছামতই বিক্রি করা হচ্ছে পেঁয়াজ। কেউ কেউ যতখুশি তত কেজি পেঁয়াজ কেনার সুযোগ পেলেও অধিকাংশ ক্রেতারাই জানেনা এক সঙ্গে তারা দু’কেজি পেঁয়াজ কিনতে পারবেন। যারা জানে না তাদের সঙ্গে করা হচ্ছে অনিয়ম এবং প্রতারনা।
বৃহস্পতিবার সকালে টিসিবি থেকে পেঁয়াজ সংগ্রহ করা কয়েকজন নি¤œবিত্ত পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা ডিসি অফিস এবং নগর ভবনের সামনে থেকে পেঁয়াজ কিনেছি। এক কেজির উপরে দু’ কেজি পেঁয়াজ কেনায় ১০ টাকা বেশি অর্থাৎ একশত টাকা দিতে হয়েছে। বেশি না দিলে এক কেজির উপরে কিনতে পারেনা।
বেশ কয়েকজন ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ দু’কেজি পেঁয়াজ কিনতে পারছি। অথচ পুলিশ, প্রশাসন, আইনজীবী এবং সাংবাদিকরা এসে যে যার মতো করে পেঁয়াজ কিনে নিচ্ছে। এদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকাও নেয়া হচ্ছে না। কিন্তু নি¤œবিত্তরা বঞ্চিত হচ্ছে।
ক্রেতাদের এমন অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে নগর ভবনের সামনে টিসিবি’র পেঁয়াজ বিক্রি’র ট্রাকের সামনে কিছু সময় অবস্থানকালে দেখা যাচ্ছে কেউ এক কেজি, কেউ দুই কেজি আবার কেউ এক সঙ্গে পাঁচ কেজি পেঁয়াজ কিনে নিচ্ছে। যদিও এসময় বাড়তি টাকা আদায়ের সত্যতা পাওয়া যায়নি।
নিয়মের বাইরে পেঁয়াজ বিক্রি’র বিষয়ে নগর ভবনের সামনে পেঁয়াজ বিক্রি করা ডিলার বলেন, ‘টিসিবি থেকে নতুন নিয়ম করে দেয়া হয়েছে। প্রতিজন ডিলার সর্বোচ্চ সোয়া তিন কেজি পর্যন্ত পেঁয়াজ নিতে পারবে। কিন্তু আমরা প্রতিজনকে সর্বোচ্চ দেড়শ টাকায় যে পরিমান পেঁয়াজ পায় তাই বিক্রি করছি। এসময় ডিলারের নাম জানতে চাইলে তিনি নিজের নাম বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।
এ প্রসঙ্গে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান আনিসুর রহমান বলেন, ‘একজন ভোক্তা এক সঙ্গে সর্বোচ্চ দুই কেজি পেঁয়াজ ক্রয় করতে পারবে। আমরা ডিলারদের তেমনটিই বলে দিয়েছি। এর থেকে বেশি বিক্রির সুযোগ নেই। কেননা একজন বেশি কেনার সুযোগ পেলে অরেকজন বঞ্চিত হবে। অতিরিক্ত পরিমান এবং বাড়তি টাকা নেয়ার যে অভিযোগ উঠেছে সেটা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT