3:02 pm , December 9, 2019
কাজী আফরোজা ॥ সমগ্র বিশ্বে এ দিবসটি পালিত হচ্ছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে দিবসটি উদযাপন করছে। এছাড়াও সার্বজনীন মানবাধিকার সংক্রান্ত ঘোষণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ দিনকে নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বছরের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে মানবাধিকার উন্নয়নে যুব সমাজ। মানুষের জীবন, অধিকার, সমতা এবং মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের জন্য আবশ্যকীয় সুযোগ সুবিধাগুলোই হল মানবাধিকার। মানবাধিকার মানুষের জন্মগত অধিকার। অধিকার কেউ কারো কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে পারবে না। ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘ মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র গ্রহণ করে। বাংলাদেশ সংবিধানের ১১ নং অনুচ্ছেদে মানবাধিকার সম্পর্কে বলা হয়েছে, প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র যেখানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকিবে। মানবসত্ত্বার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত হইবে। সংবিধানে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা, জনস্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, বিশ্রাম, চিত্ত বিনোদন এবং সামাজিক নিরাপত্তার মত অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকারসমূহ এবং নাগরিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার সুরক্ষার বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন রাষ্ট্রের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এবং যথাযথ পর্যালোচনা শেষে রাষ্ট্রকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান করে। সরকারকে মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান করে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকে পরামর্শ প্রদান করে। মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণা পত্রের ৩০ টি অনুচ্ছেদে মানুষের প্রতি মানুষের সহমর্মিতা, মানুষের মর্যাদা ও অধিকার রক্ষার ঘোষণা রয়েছে। বলা হয়েছে বন্ধনহীন অবস্থায় এবং সমমর্যাদা ও অধিকারা-দি নিয়ে সব মানুষই জন্মগ্রহণ করে। বুদ্ধি ও বিবেক তাদের অর্জন করা হয়েছে। অতএব ভ্রাতৃত্ব সুলভ মনোভাব নিয়ে তাদের একে অন্যের প্রতি আচরণ করা উচিত। প্রত্যেকেরই জীবনধারণ, স্বাধীনতা ও ব্যক্তি নিরাপত্তার অধিকার রয়েছে। কাউকে নির্যাতন বা নিষ্ঠুর, অমানবিক অথবা অবমাননাকর আচরণ অথবা শাস্তি ভোগে বাধ্য করা চলবে না। আইনের সমক্ষে প্রত্যেকেরই সর্বত্র ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃতি লাভের অধিকার রয়েছে। কাউকে খেয়াল খুশিমতো গ্রেফতার, আটক বা নির্বাসন দন্ডে দন্ডিত করা যাবে না। কাউকে যথেচ্ছভাবে তার জাতীয়তা থেকে অথবা তাকে তার জাতীয়তা পরিবর্তনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা চলবেনা। প্রত্যেকেরই চিন্তা, বিবেক ও ধর্মের স্বাধীনতার অধিকার রয়েছে। “মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না” ভূপেন হাজারিকার এ কালজয়ী গানের মাধ্যমে মানবাধিকারের সাফল্যের জয়গান গাইতে চাই। মানবাধিকার স্বকীয়তায় মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হোক।