শেবাচিম হাসপাতালের বেয়াদপ মামুনের বদলী ॥ আদেশ পেয়ে পরিচালককে দেখে নেওয়ার হুমকি শেবাচিম হাসপাতালের বেয়াদপ মামুনের বদলী ॥ আদেশ পেয়ে পরিচালককে দেখে নেওয়ার হুমকি - ajkerparibartan.com
শেবাচিম হাসপাতালের বেয়াদপ মামুনের বদলী ॥ আদেশ পেয়ে পরিচালককে দেখে নেওয়ার হুমকি

2:54 pm , November 27, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ অবশেষে বদলি করা হলো বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের মাদকাসক্ত অফিস সহায়ক আল মামুন মুসা ওরফে গালকাটা মামুন। মঙ্গলবার রাতে মামুনসহ চার উৎশৃঙ্খল কর্মচারীর শাস্তিমুলক বদলির আদেশ শেবাচিম হাসপাতালে এসে পৌঁছায়। এতেই ক্ষুব্ধ হয়েছে আলোচিত মাদকাসক্ত এবং হত্যা চেষ্টা মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামি আল মামুন মুসা। বদলি করায় গতকাল বুধবার সকালে হাসপাতালের প্রশাসনিক বিভাগে গিয়ে পরিচালকে জড়িয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল দেয় সে। ছুড়ে ফেলে দেয় দাপ্তরিক কাগজপত্র। তাই এই ঘটনায় মামুনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের প্রস্তুতি নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বদলি হওয়া অপর তিন কর্মচারীর মধ্যে শেবাচিম হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার রাসেদুল ইসলামকে বরগুনা সদরে, চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী আবুল বাশারকে হিজলা ও কর্মচারী মনিরকে ভোলায় বদলি করা হয়েছে। আর মামুনকে বদলি করা হয়েছে উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এছাড়া পূর্বে বদলি হওয়া ওয়ার্ড মাস্টার আবুল কালাম আজাদকে বরগুনা থেকে পুনরায় শেবাচিম হাসপাতালে বদলি করা হয়েছে।
শেবাচিম হাসপাতাল পরিচালকের দেয়া ফরোয়াডিং এর প্রেক্ষিতে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ওই পাঁচ জনকে বদলির আদেশ দেন।
জানাগেছে, ‘হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি চার্জশীটভুক্ত আসামী এবং মাদকাসক্ত আল মামুন মুসা অবৈধ উপায়ে শেবাচিম হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী পদে চাকুরি পায়। হাসপাতালের সরকারি ওষুধ চুরির ঘটনায় আলোচিত মামুন যোগদানের পর থেকেই একের পর এক বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে। হাসপাতালকে মাদকের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিনত করে সে। এমনটি করতে গিয়ে ইতিপূর্বে মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের হাতে গাঁজাসহ আটক এবং গণধোলাই’র শিকারও হয় গালকাটা মামুন। তাতেও থেমে থাকেনি সে। অপরাধের শাস্তি না হওয়ায় কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত, কর্মচারীদের গায়ে হাত তোলাসহ এমন কোন কাজ নেই যা করেনি মামুন। তার লাগামহিন অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে হাপিয়ে ওঠে গোটা হাসপাতালের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা। তাই সম্প্রতি মামুনের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারীরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে মামুনের বদলির জন্য দেয়া হয় আল্টিমেটাম।
এ কারনে শেষ পর্যন্ত মামুনসহ চারজনকে বদলির সুপারিশ বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়ে প্রেরণ করেন শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন। এর প্রেক্ষিতে ওই চারজনকে শেবাচিম হাসপাতাল থেকে বদলি করা হয়েছে। বিশেষ করে মামুনের বদলির খবরে হাসপাতালের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে স্বস্থি ফিরে আসে। শুকরানা আদায় করেন তারা।
কর্মচারীরা বলেন, ‘এক মামুনের জন্য সকল কর্মচারী অতিষ্ঠ ছিলো। এমনকি রোগী এবং তাদের স্বজনদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করে আসছিলো সে। তার পাশাপাশি নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে বদলি হওয়া কর্মচারী আবুল বাশার। এরা দু’জনই নতুন নিয়োগে চাকুরী পেয়েছে। তাদের দু’জনই সরকারি চাকুরিতে অযোগ্য হলেও অর্থের বিনিময়ে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে চাকুরি নেয়। এছাড়া বদলি হওয়া ওয়ার্ড মাস্টার রাশেদুল ইসলাম মাদকাসক্ত মামুনের মাদকের পার্টনার ছিলো বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব কারনেই তাদের বদলি করা হয়। যদিও ওয়ার্ড মাস্টার রাশেদুল বরগুনার বাসিন্দা হওয়ায় বদলির বিষয়ে তার পূর্ব সম্মতি ছিলো বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন বলেন, ‘মামুন উৎশৃঙ্খল বিধায় তাকে বদলি করা হয়েছে। বদলি করার কারনে সে ওই একই উৎশৃঙ্খল কান্ড ঘটিয়েছে। হাসপাতালের প্রশাসনিক শাখায় গিয়ে গালাগাল ও হুমকি ধামকী দিয়েছে বলে শুনেছি। আমি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করায় এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানতে পারিনি। তবে এ ঘটনায় মামুনের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরী করার জন্য দায়িত্বে থাকা হাসপাতালের উপ-পরিচালককে বলা হয়েছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT