জনবল সংকটসহ নানা সীমাবদ্ধতায় দক্ষিণাঞ্চলে বেড়েছে আয়কর আহরন জনবল সংকটসহ নানা সীমাবদ্ধতায় দক্ষিণাঞ্চলে বেড়েছে আয়কর আহরন - ajkerparibartan.com
জনবল সংকটসহ নানা সীমাবদ্ধতায় দক্ষিণাঞ্চলে বেড়েছে আয়কর আহরন

3:48 pm , November 22, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে গত অর্থবছরে আয়কর আহরন প্রায় ৫শ কোটিতে উন্নীত হয়েছে। যা চলতি অর্থ বছরে ৫৭৮ কোটিতে নিয়ে যাবার লক্ষ্যে কাজ করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাঠ পর্যায়ের কর্মীগন। করদাতার সংখ্যাও কুড়ি হাজার থেকে প্রায় একলাখ ৫৫ হাজারে উন্নীত হয়েছে। সদ্যসমাপ্ত কর মেলায় দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলা সহ ১১টি স্থানে অভুতপূর্ব সাড়া পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল কর অঞ্চলের দায়িত্বশীল মহল। এবারের কর মেলা থেকে প্রায় ৯ কোটি টাকার আয়কর আয় হয়েছে বলে জানা গেছে। গত বছরে কর মেলায় এর পরিমান ছিল ৮.৩৩ কোটি টাকার মত। দক্ষিণাঞ্চলে কর আহরন প্রবৃদ্ধিকে অত্যন্ত ইতিবাচক বলেই মনে করছেন অর্থ মন্ত্রনালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগন।
আয়করের প্রতি ভীতি দুর করা সহ কর প্রদানে নৈতিক দায়িত্বের বিষয়টি মানুষের মধ্যে ক্রমে প্রতিষ্ঠিত হবার ফলে দক্ষিণাঞ্চলে আয়কর আহরন ক্রমে বাড়ছে বলেও মনে করছেন কর বিভাগের দায়িত্বশীল মহল। তবে একই সাথে করদাতাদের সাথে আরো সৌজন্যমূলক আচরন সহ কর প্রশাসনকে পরিপূর্ণ হয়রানী বিহীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলারও তাগিদ দিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর দাতাগন। পাশাপাশি যেকোন অসৎ উদ্দেশ্যে করদাতাদের উপর নুন্যতম বাড়তি চাপ প্রয়োগের বিষয়টিও পরিহারের আহবান জানানো হয়েছে সাধারন করদাতাদের তরফ থেকে। এক্ষেত্রে করদাতাদের প্রতি ন্যায়বিচার সহ সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব প্রদানের আহবান জানিয়েছেন একাধিক করদাতা।
২০০১-২০০২ অর্থবছরে মাত্র কুড়ি হাজার করদাতা নিয়ে বরিশাল কর অঞ্চল প্রতিষ্ঠার সময় বছরে আয়কর আদায়ের পরিমান ছিল ২৩ কোটি টাকার কিছু বেশী। সেখান থেকে গত অর্থবছরে দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলায় করদাতার সংখ্যা ১ লাখ ৪১ হাজারের কাছাকাছি উন্নীত হলেও চলতি অর্থ বছরে তা ১ লাখ ৫৫ হাজারে উন্নীত হচ্ছে। গত অর্থ বছরে দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ৪৮১ কোটি টাকা আয়কর আদায়ের পরে চলতি অর্থ বছরে কর আদাযের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে প্রায় ৫৮০ কোটি টাকা। চলতি অর্থ বছরের প্রথম প্রান্তিকে প্রায় ৯৬ কোটি টাকার কর আদায় হয়েছে বলেও জানা গেছে।
এবার দক্ষিণাঞ্চলের ১১টি জেলা উপজেলার কর মেলায় প্রায় ৯৪ হাজার করদাতা বিভিন্ন ধরনের সেবা গ্রহন করেন। এসময় মেলাগুলোতে ২৪ হাজারেরও বেশী করদাতা তাদের আয়কর রিটার্ণ জমা দেন । নতুন টিআইএন সংগ্রহকারীর সংখ্যাও ছিল প্রায় হাজার খানেক।
তবে এসব কিছুর পরেও দক্ষিণাঞ্চলে কর প্রশাসনকে এখনো চলতে হচ্ছে জনবল সংকট সহ নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে। বরিশাল কর অঞ্চলের ২২টি সার্কেলে প্রায় ২৬৫ জনবলের মধ্যে ৪৫টি পদই শূণ্য পড়ে আছে। ফলে একজন কর্মকর্তাকে একাধিক সার্কেলের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। যুগ্ম কর কমিশনারের ৩টি পদে আছেন মাত্র একজন।
অপরদিকে বরিশালে কর কমিশনারেট-এর জন্য একটি বহুতল ভবন নির্মানের বিষয়টি গত এক দশকেরও বেশী সময় ধরে অনুমোদনের অপেক্ষায় এক দপ্তর থেকে আরেক দপ্তরে ঘুরছে। প্রায় ৮০ কোটি টাকার প্রাক্কলিত ব্যয় সাপেক্ষ ঐ ভবন নির্মান প্রকল্পটি এখনো পরিকল্পনা কমিশনের প্রাথমিক অনুমোদনও লাভ করেনি বলে জানা গেছে।
বরিশাল কর অঞ্চলের সার্বিক বিষয়ে কর কমিশনার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলামের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, দক্ষিণাঞ্চলে কর আহরন প্রবৃদ্ধি যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক। এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে কর প্রদানে নতুন সংস্কৃতি যথেষ্ট ইতিবাচক বলেও জানান তিনি। কর দাতাদের উপর কোন অনৈতিক চাপ প্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে সব কর্মকর্তাকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে বলে জানিয়ে যেকোন অনিয়মের ক্ষেত্রে সব সময়ই জিরো টলারেন্স নিয়ে কাজ করার কথাও জানান তিনি। কর প্রশাসনে জনবল সংকটের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে বিষয়টি এনবিআর ও মন্ত্রনালয়কে নিয়মিত অবহিত করার কথাও জানান কর কমিশনার। অদুর ভবিষ্যতেই সমস্যা সমাধানে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT