3:22 pm , November 18, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ জেএসসি পরীক্ষার্থী মুহিম খন্দকারকে (১৪) ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো ও থানায় নিয়ে অমানুষিক নির্যাতনের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে নগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম ইছাকাঠীর বাসিন্দারা। এই ঘটনার জন্য দায়ী বিমানবন্দর থানার উপ পরিদর্শক এনামুল হকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে গতকাল সোমবার দুপুরে নগরীর কাশীপুর বাজার সংলগ্ন ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে শত শত নারী-পুরুষ মানববন্ধন করেছেন। বিভিন্ন শ্রেণীর-পেশার মানুষ এ মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ক্ষুদ্ধ মত প্রকাশ করেন। মানববন্ধনে অংশ নিয়ে মানবধিকার কমিশন বিমান বন্দর থানা শাখার সভাপতি মুকুল মুখার্জী বলেন, মুহিম খন্দকার একটি নিরীহ কিশোর। এলাকার শতভাগ মানুষ এ সত্য স্বীকার করবেন। তাকে আটকের পর স্থানীয় নারী-পুরুষ উপস্থিত হয়ে এ কথা বলেছে। ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও গণ্যমান্যগন থানায় গিয়েও একই কথা বলেছেন। পুলিশ সবকিছু উপেক্ষা করে তাকে থানায় এনে অমানুষিক নির্যাতন করেছে এবং একটি মনগড়া এজাহার লিখে আদালতে পাঠিয়েছে। এটা শিশু নির্যাতনের সামিল। তিনি দায়ী এসআই এনামুল হকের বিরুদ্ধে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন। মানববন্ধনে অংশ নেয়া এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, নিরিহ শিশু ছাত্র মুহিমকে এভাবে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়ায় এখন তারা আতংকে রয়েছেন সন্তান নিয়ে। বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোখলেসুর রহমান বাচ্চু বলেন, কারাবন্দী কিশোর মুহিমের জামিন চেয়ে সোমবার আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার শিশু আদালতে আবেদনের শুনানী হবে বলে তিনি জানান। প্রসঙ্গত, শুক্রবার সন্ধ্যায় পশ্চিম ইছাকাঠীতে বাড়ির সামনে থেকে মুহিম খন্দকারকে আটকের পর তার কাছে ইয়াবা পাওয়া গেছে অভিযোগ তুলে আটক করে নিয়ে যায় এবং ১৪ পিস ইয়াবা পাওয়া গেছে বলে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা দায়ের করেছেন এসআই এনামুল হক। তবে ওই মামলার সাক্ষীসহ উপস্থিত অন্যান্যরা জানান, পুলিশ তাৎক্ষনিক তাদের ইয়াবা দেখাতে পারেনি। তার মোবাইল ফোনে খবর পেয়ে অন্য দুই পুলিশ সদস্য আসার পর তল্লাসীর নামে অন্ধকারের মধ্যে বাগান থেকে ইয়াবাসহ একটি সিগারেটের প্যাকেট উদ্ধার করেছে। যা পুরোটাই পুলিশের সাজানো বলে তাদের দাবী। মুহিম খন্দকারের বাবা সাইদুর রহমান হিরন জানান, জমিজমা নিয়ে নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে তার বিরোধ করেছে। তাদের যোগাসাজসে পুলিশ কথিত ইয়াবা উদ্ধার নাটক সাজিয়েছে। এদিকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো এবং এক কিশোরকে থানায় নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করার ঘটনায় গনমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় এসআই এনামুল নিজেকে বাঁচাতে সমঝোতার প্রস্তাবসহ নানামুখী তৎপরতা শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) মোকতার হোসেন।