2:18 pm , November 11, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর প্রভাবে ১০ উপজেলায় ৩ হাজার ৫০টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আরও ৬০টি স্কুল ও ১৪২ কিলোমিটার রাস্তা এবং বাঁধ। তবে ঘূর্ণিঝড়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ফসলী জমি-গাছপালা এবং মৎস্য খামারের। মাত্র একদিনের মাত্র ৯ ঘন্টার ঝড়ে এক লাখ ৬ হাজার হেক্টর ফসলী জমি, ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির এক লাখ গাছ এবং ৪৩৫টি মৎস্য খামার, ঘের এবং পুকুরের মাছের ক্ষতি হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে ক্ষয়ক্ষতির আংশিক এ পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে। তবে পরবর্তীতে এর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নদীর তীরবর্তী উপকূলীয় এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমান বেশি। সব মিলিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া ঘরবাড়ির মধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৫০টি। বাকিগুলো আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
তাছাড়া ক্ষতিগ্রস্থ এক লাখ ছোট-বড় গাছের মধ্যে আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ গাছেল সংখ্যাই বেশি। পাশাপাশি উফশী আমন ধান ১ লক্ষ হেক্টর, খেসারী ডাল ২ হাজার হেক্টর ও আরও ৪ হাজার হেক্টর অন্যান্য জমির সবজি’র ক্ষতি হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘ক্ষতিগ্রস্থ ৬০টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫০টি প্রাথমিক এবং বাকি ১০টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে ৬০টি প্রতিষ্ঠানই আংশিক ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া ক্ষতিগ্রস্থ কাঁচা রাস্তার আয়োতন ১২০ কিলোমিটার ও নদীর বাঁধ ২২ কিলোমিটার।
জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আঘাত হানার পরবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এ নিয়ে মাঠ পর্যায়ে এখনো কাজ চলছে। উপজেলা প্রশাসন তালিকা তৈরী করে তা জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে প্রেরণ করছেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উজিরপুরে আশালতা মজুমদার (৬৫) নামের এক নারীর গাছ চাপা পড়ে মারা গেছে। এছাড়া আর কোথাও কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ঘূর্ণিঝড়ের সময় জেলার ২৩২টি সাইক্লোন শেল্টারসহ ৬৫৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলো। যার মধ্যে নারী ও শিশু ৬১ হাজার এবং পুরুষ ৫৯ হাজার জন।
জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্থ সকলকেই সহায়তা প্রদানের চেষ্টা করছি। যাদের ঘর-বাড়ি ভেঙে গেছে তাদেরকে ঘর নির্মানের জন্য ঢেউটিন, ত্রান সামগ্রী ও কম্বল বিতরণ করা হবে। তবে তার আগে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া মানুষের মাঝে শুকনো খাবার দেয়া হয়। এছাড়াও কোন কোন আশ্রয় কেন্দ্রে খিচুরির ব্যবস্থাও ছিল।