মনপুরার সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষন ও চেষ্টার অভিযোগে মামলা মনপুরার সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষন ও চেষ্টার অভিযোগে মামলা - ajkerparibartan.com
মনপুরার সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষন ও চেষ্টার অভিযোগে মামলা

3:05 pm , November 5, 2019

মোঃ আফজাল হোসেন, ভোলা ॥ ভোলার মনপুরাতে শিশু’র সামনে মাকে গণধর্ষনের রেশ না কাটতেই একই ইউনিয়নের সাবেক ও বর্তমান দুই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেই ধর্ষন এবং ধর্ষনের চেস্টার অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা বিশ্লেষন। তবে এখন পর্যন্ত কোন গ্রেফতার নেই।
মামলা সুত্রে জানা গেছে, গত ১৪ অক্টোবর বেলা সাড়ে ১১টায় মনপুরা উপজেলার মনপুরা ইউনিয়নের কাজীর চরের বাসিন্দা নারী নিজ ঘরে ধর্ষন চেস্টার শিকার হওয়ার অভিযোগ এনে থানায় মামলা করেছে। মামলায় প্রধান আসামী মনপুরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আলাউদ্দিন। অপর আসামীরা হলো- আব্দুল আজিজ (৩৫), মোঃ রিদু (৩৫), মোঃ সেলিম মাঝি (৪৭), মোঃ কালাম কসাই (৪৫), মোঃ শরীফ (৩৫), মোঃ মাকসুদ (২৫)।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, পানি খাওয়ার কথা বলে ঘরে প্রবেশ করে সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আলাউদ্দিন। বাদী পানি দিলে ঘরে কেউ না থাকার সুযোগে ধর্ষনের চেস্টা করে। তখন বাদীর চিৎকারে মামলার প্রধান স্বাক্ষী স্বামীসহ অন্যরা এসে তাকে উদ্ধার করে এবং প্রধান আসামী আলাউদ্দিনকে ধরে ফেলে। এ সময় দুরে দাড়িয়ে থাকা অপর আসামীরা এসে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। এ সময় ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে মনপুরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বামীর মাধ্যমে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও মামলার শেষে বলেছেন, হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে আত্বীয়-স্বজনদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে মামলা করতে দেরি হয়েছে। গত ১৬ অক্টোবর মনপুরা থানার ওই সময়ের ওসি মোঃ ফোরকান আলী মামলা রুজু করেন। মামলা নং ৯। তবে এ মামলায় কোন আসামীকে পুলিশ এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি।
অপরদিকে দ্বিতীয় ঘটনা ঘটে, একই ইউনিয়নের কাজীর চরের পাশের কলাতলীর চরে গত ১৯ অক্টোবর শনিবার দুপুর আনুমানিক ১২টায়। ঐ মামলায় প্রধান আসামী হচ্ছে, মনপুরা উপজেলার মনপুরা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ আমানত উল্ল্যাহ আলমগীর। মামলার আরো ৬ জনসহ মোট ৭ জনকে আসামী করা হয়েছে। মিজানুর রহমান (মিজান) (৪০), মোঃ ফারুক ফরাজী (৩৫), মোঃ নাহিছ (৩০), মোঃ ইলিয়াছ (৩৫), মোঃ শফিক(৩৫) ও মোঃ নাজিম উদ্দিন হাওলাদারকে (৩৫) আসামী করা হয়েছে।
এ মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, মামলার প্রধান আসামী মনপুরা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ আলমগীর বাদীনির ঘরের রান্না ঘরে প্রবেশ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। এ সময় বাদীনির ডাক-চিৎকার শুনে মামলার স্বাক্ষী স্বামীসহ অন্যরা এসে হাতেনাতে ধরে। এ সময় মোবাইল ফোনে অপর আসামীদের তাকে ছাড়িয়ে নেয়ার কথা বল্লে তারা এসে কিলঘুষি দিয়ে আসামীকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। পরে মনপুরা হাসপাতালে ভর্তি হতে গেলে আসামীদের ভয়ভীতির ফলে ভর্তি হতে পারেনি। শুধু তাই নয়, থানায় গত ২০ অক্টোবর মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা গ্রহন করেনি। যে কারনে আদালতে মামলা করা হয়েছে। ভোলার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে করা মামলা রুজুর পর তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য মনপুরা থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ সহিদুল্লাহ।
এদিকে মনপুরা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ আমানত উল্ল্যাহ আলমগীর বলেন, আমার বিরুদ্ধে সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন তার আত্মীয়কে দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলা দিয়েছে। আমি ঐ মেয়েকে চিনি না। মামলায় সাজানো মিথ্যা ঘটনা দেয়া হয়েছে। তার আগে আলাউদ্দিনকে আসামী করে করা অপর মামলা সম্পর্কে বলেন, আমি জানি না।
অপরদিকে মনপুরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আলাউদ্দিন বলেন, আমি এলাকার জনপ্রিয় চেয়ারম্যান। আমার বাবা দীর্যদিন চেয়ারম্যান ছিলেন, বড় ভাই উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যন ছিলেন। আমরা রাজনৈতিক পরিবার। আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমি। রাজনৈতিক কারনে আমার ও আমার লোকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে আলমগীর চেয়ারম্যান। অথচ মামলায় যে সময় ও দিন দেখানো হয়েছে, তখন আমি ভোলাতে ছিলাম। আদালতে কাজ ছিলো সেখানে ছিলাম। তা তদন্ত করলে বের হয়ে আসবে। আমি এঘটনার সাথে জড়িত থাকলে আমার বিচাঁর হোক এটা আমি চাই।
এ বিষয় মনপুরা থানার ওসি মোঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমি আসার আগেই একটি মামলা হয়েছে। ঐ মামলায় মনপুরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যানকে প্রধান করে ৭ জনকে আসামী করা হয়েছে। অপর একটি অভিযোগ ভোলার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল থেকে গত ৩১অক্টোবর থানায় এসেছে। আদালত এটিকে এজাহার হিসেবে গ্রহন করার জন্য বলেছেন। সেটা মনপুরা থানায় এজাহার হিসেবে গত ৩ নভেম্বর গ্রহন করা হয়েছে। মামলা নং ২। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন আসামীকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT