জাপার মুরতজার বিরুদ্ধে শক্ত প্রার্থী খুঁজছে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা জাপার মুরতজার বিরুদ্ধে শক্ত প্রার্থী খুঁজছে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা - ajkerparibartan.com
জাপার মুরতজার বিরুদ্ধে শক্ত প্রার্থী খুঁজছে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা

6:14 pm , May 30, 2018

রুবেল খান ॥ বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টির অবস্থান তেমন একটা ভালো অবস্থায় নেই। তবে তার মধ্যেই বিসিসি’র ২নং ওয়ার্ডে ভোটের রাজনীতিতে একক অধিপত্য গড়ে তুলেছেন জাতীয় পার্টি বরিশাল মহানগর শাখার সভাপতি এ্যাড. একেএম মুরতজা আবেদিন। পর পর চার বার কমিশনার ও কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে জনপ্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি। তবে এবারের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এ্যাড. একেএম মুরতজা আবেদীন এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন একাধিক প্রার্থী। যারা আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নিয়েছেন। অবশ্য পূর্বের মতো করেই একাধিক প্রার্থীর বিরুদ্ধে একাই ভোটের লাড়াইয়ের প্রস্তুতি নিয়েছেন এ্যাড. মুরতজা আবেদীন। জানাগেছে, নগরীর কাউনিয়া এলাকাধীন বিসিসি’র ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে বরাবরই শক্তিশালী প্রার্থী জাতীয় পার্টির মহানগর কমিটির সভাপতি এ্যাড. একেএম মুরতজা আবেদিন। যিনি ১৯৯৫ সাল থেকে পর পর টানা চার বার পৌর কমিশনার ও সিটি’র কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। দলের বাইরে ব্যক্তি হিসেবেও মুরতজা আবেদীন ভোটারদের কাছে অনেক জনপ্রিয়। যে কারনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরাও তার ভোটের রাজনীতির কাছে পরাস্ত হয়ে আসছে।

সর্বশেষ ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত বিসিসি’র ৩য় পরিষদ নির্বাচনে প্রতিপক্ষের দুই প্রার্থীকে পরাজিত করে ৪ হাজার ২শ’ ভোটে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিনি। এবারের চতুর্থ পরিষদেও তিনি পঞ্চম বারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নিয়েছেন। অবশ্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারনে এবারে কাউন্সিলর পদ ছেড়ে মেয়র পদে লড়াই করতে হতে পারে তাকে। তবে সে আশংকা অনেক কম বলে মনে করছেন এই প্রার্থী। তাই কাউন্সিলর হিসেবেই ওয়ার্ড ভিত্তিক প্রচার-প্রচারনা ও নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন এ্যাড. মুরতজা আবেদীন।

তবে এবারের নির্বাচনে ২নং ওয়ার্ডে মুরতজা আবেদীনের বিরুদ্ধে ভোটের লড়াইতে মাঠে নামার সম্ভাবনা রয়েছে একাধিক প্রার্থীর। যার মধ্যে রয়েছে নতুন মুখও। এমনকি এই ওয়ার্ডে এবার শক্ত প্রার্থী দেয়ার কথা ভাবছে মহানগর আওয়ামী লীগ। সে হিসেবে এখন পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী আলহাজ্ব আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ-এমপির শ্যালক কাজী নজরুল ইসলাম মনু। যিনি ইতিপূর্বে অর্থাৎ ২০০৩ ও ২০০৮ সালে মুরজতা আবেদীন এর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু দু’বারই পরাজিত হয়েছেন তিনি। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে কাজী নজরুল ইসলাম মনু’র অবস্থান পূর্বের থেকে অনেকটা ভালো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কেননা বর্তমানে আওয়ামী লীগ এর পাশাপাশি স্থানীয় জনগনেরও সমর্থন বেড়েছে তার। যার আভাস মিলেছে গতকাল বুধবার বিসিসি’র ২নং ওয়ার্ডে সরেজমিন পরিদর্শন কালে। বেশ কিছু ভোটার দাবি করেছেন এলাকার উন্নয়নে কাজী নজরুল ইসলাম মনুর বিকল্প নেই। বিশেষ করে তিনি প্রভাব খাটিয়ে এলাকার যেকোন সমস্যার সমাধান করতে পারেন। এছাড়াও সজ্জন ও ভদ্র হিসেবে এলাকায় তার ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে।

তবে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আশা থাকলেও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন কাজী নজরুল ইসলাম মনু। কেননা এবারের নির্বাচনে তার ভাগ্নে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ মেয়র প্রার্থী। তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশি। তাই ভাগ্নে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ মেয়র নির্বাচন করলে নিজের চিন্তা বাদ দিয়ে ভাগ্নের নির্বাচনই করবেন বলে জানিয়েছেন কাজী নজরুল ইসলাম মনু।

এদিকে ২নং ওয়ার্ডে এবারেও প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নিয়েছেন ওয়ার্ড যুবলীগ সদস্য আহসান উল্লাহ মাঈনুল। গত নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তখন তিনি তিনজন প্রার্থীর মধ্যে সর্বনিম্ন ভোট পেয়েছিলেন। এবারেও আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আশা প্রকাশ করেছেন। তবে সরেজমিন পরিদর্শনে আহসান উল্লাহ মাঈনুল এর অবস্থান অনেকটা নাজুক দেখা গেছে। ভোটারদের সাথে তার সংযোগ খুবই কম বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাছাড়া ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিশাল একটি অংশ তার বিরোধিতা করছেন। দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে আহসান উল্লাহ মাঈনুলের সু-সম্পর্কের অবনতির কারনেই ওই অংশটি তার বিরোধী ভূমিকা পালন করছে।

ওদিকে মুরতজা আবেদীনের বিপক্ষে দলের প্রার্থী জয় করার লক্ষ্যে বিকল্প চিন্তাও রয়েছে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের। এক্ষত্রে নির্বাচনী কলাকৌশলে প্রার্থী হতে পারেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী জিয়াউদ্দিন। তবে কাজী জিয়াউদ্দিন জানিয়েছেন, নির্বাচন করার কোন প্রস্তুতি তার নেই। এবারের নির্বাচনে ২নং ওয়ার্ডে কাজী নজরুল ইসলাম মনুকেই কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে তারা সমর্থন দিচ্ছেন।

এদিকে আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির পাশাপাশি ২নং ওয়ার্ডে রয়েছে বিএনপি’র একাধিক প্রার্থী। যারা সবাই নতুন। ইতিপূর্বে ওয়ার্ড বিএনপি নেতা সাইদুল হক হিরু ওই ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন। এবারে দলীয়ভাবে তাকেই সমর্থন দেয়ার পরিকল্পনা ছিলো ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দের। কিন্তু শারীরিক ভাবে অসুস্থতার করনে এবারের নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না সাইদুল হক হিরু। তবে বিএনপি থেকে প্রার্থীতার আশা প্রকাশ করেছেন ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি এ্যাড. আব্দুল মান্নান মৃধা ও ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন তালুকদার। যদিও তারা নির্বাচনের বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন। বিশেষ করে বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও মহানগর কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার নির্দেশ দিলে তারা ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি ও ছাত্রদলের ওই নেতা। এর বাইরে শাহ জাহান নামের আরো একজন প্রার্থী রয়েছেন এই ওয়ার্ডে।

ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হিসেবে ৩ জনের নাম শোনা গেছে। তবে এদের মধ্যে মাওলানা মহিবুল্লাহ দলীয় সমর্থন পেতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র। ওদিকে বামপন্থি রাজনৈতিক সংগঠন বাসদ ও সিপিপি’র পক্ষ থেকে এখনো কোন প্রার্থী নির্ধারন হয়নি ২নং ওয়ার্ডে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT