দক্ষিনাঞ্চলে মারাত্মক বিদ্যুৎ সংকট দক্ষিনাঞ্চলে মারাত্মক বিদ্যুৎ সংকট - ajkerparibartan.com
দক্ষিনাঞ্চলে মারাত্মক বিদ্যুৎ সংকট

6:12 pm , May 30, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থায় কোন ঘাটতি না থাকলেও বিতরন ব্যবস্থার ত্রুটির কারনে নগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ নিয়ে চরম দূর্ভোগে আমজনতা। গত দুবছরে ঢালাওভাবে নতুন সংযোগ দেয়ার সাথে সাথে বিদ্যমান গ্রাহকগন অধিক ক্ষমতার বিভিন্ন বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার করায় চাহিদা প্রায় দ্বিগুন বেড়ে গেছে বলে বর্তমান সংকট ঘনিভুত হয়েছে। এ বক্তব্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বশীল মহলের। আর এ নগরীতে বেশীরভাগ গ্রাহকই কোন ধরনের অনুমোদন ব্যতিরকেই এয়ারকুলার সহ বিভিন্ন ধরনের অধিক ক্ষমতার বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার করলেও তা নিয়ে কোন ধরনের নিয়ন্ত্রন নেই ওজোপাডিকো’র।

ফলে চলতি রমজান মাসের ইফতার থেকে তারবীর নামাজ হয়ে সেহেরী পর্যন্ত দফায় দফায় লোডশেডিং হচ্ছে খোদ নগরীতেও। কিন্তু বিদ্যুতের কোন ঘাটতি নেই। ভোলা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর ও বরগুনারও প্রায় একই চিত্র। প্রায় এক যুগ আগে নির্বিঘœ বিদ্যুৎ সরবারহের কথা বলে বরিশাল ও খুলনা বিভাগ এবং ফরিদপুরের ৫টি সহ দক্ষিন ও দক্ষিন-পশ্চিমের ২১টি জেলা নিয়ে ‘পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরন কোম্পানী-ওজোপাডিকো’ গঠন করা হলেও এ দীর্ঘ সময়েও তারা সরবরাহ ও বিতরন ব্যবস্থার কোন উন্নতি করতে পারেনি।

ফলে জরাজীর্ণ বিদ্যুৎ বিতরন ব্যবস্থা সাধারন মানুষের দূর্ভোগকে ইতোমধ্যে সব বর্ণনার বাইরে নিয়ে গেছে। পাওয়ার গ্রীড কোম্পানীর গ্রীড সাব-স্টেশন থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে ওজোপাডিকো’র ৩৩ কেভী লাইন ও ৩টি ৩৩/১১ কেভী সাব-স্টেশনের মাধ্যমে নগরী ছাড়াও ঝালকাঠী শহর ও সন্নিহিত এলাকায় .০৪ কেভী বিতরন লাইনের মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে সরবরাহ করা হয়। কিন্তু নগরীর রূপাতলী মূল ৩৩ কেভী সাব-স্টেশন ছাড়াও কাশীপুর ও পলাশপুর ৩৩/১১ কেভী সাব-স্টেশন দুটির পাওয়ার ট্রান্সফর্মারগুলো ওভারলোডেড হয়ে যাওয়ায় ঘাটতি না থাকলেও চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ দিতে পারছে না ওজোপাডিকো। ফলে এ রমজানেও কাশিপুর সাব-স্টেশনে সংযূক্ত ৩টি ফিডারে ইফতারী থেকে সেহেরী পর্যন্তই লোডশেডিং নির্ধারিত হয়ে গেছে। এখানে ৩০ বছরের পুরনো ১০ এমভিএ দুটি পাওয়ার ট্রান্সফর্মারের মাধ্যমে বর্তমান কোন অবস্থাতেই ১৮ মেগাওয়াটের বেশী বিদ্যৎ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। অথচ চাহিদা প্রায় ২৫ মেগাওয়াট। উপরন্তু তিন দশকের পুরনো এসব ট্রান্সফর্মার-এর মাধ্যমে বাড়তি চাপ দুরের কথা ক্ষমতানুযায়ীও বিদ্যৎ বিতরন করা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছেন কতৃপক্ষ।

প্রায় একই পরিস্থিতি নগরীর পলাশপুর সাব-স্টেশনেও। সেখানের ১০এমভিএ দুটি পাওয়ার ট্রান্সফর্মারের মাধ্যমে ১৮-১৯ মেগাওয়াটের বেশী বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব না হলেও চাহিদা প্রায় ২২ মেগাওয়াট। ফলে সান্ধ্য পীক আওয়ার থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বিভিন্ন ফিডারে লোডশেড করতে হচ্ছে। দুঃসহ দূর্ভোগেই তারাবীর নামাজ আদায় করতে হচ্ছে রোজাদার মুসুল্লীদের। ওভারলোডেড হয়ে গতবছর পলাশপুর সাব-স্টেশনের ১১ এমভিএ’র একটি ট্রান্সফর্মার পুড়ে গেলে মাস দুয়েকের চেষ্টায় সেখানে ১টি নতুন ট্রান্সফর্মার স্থাপন করা হয়। কিন্তু পরনো ট্রান্সফর্মারটি আর মেরামত করা হয়নি।

রূপাতলী মূল ৩৩ কেভী সাব-স্টেশনেও ৩০ বছরের পুরনো ১০ এমভিএ দুটি ট্রান্সফর্মার দিয়ে কাজ চলছে। এমনকি মৃদু তাপপ্রবাহের সময় দিনের বেলাতেও এসব সাব-স্টেশনের পাওয়ার ট্রান্সফর্মারগুলো ওভারলোডেড হয়ে যাচ্ছে। ফলে অনেক সময়ই দিনের বেলাতেও লোডশেড অবধারতি হয়ে পড়ছে নগরীতে।

তবে এসব বিষয়ে গতকাল ওজোপাডিকো’র প্রধান প্রকৌশলী ও ভারপ্রাপ্ত পরিচালক-কারিগরি’র সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, ‘আমরা বরিশালে একটি অতি স্পর্শকাতর-অন্তবর্তিকালীন সময় পার করছি। আগামী মাসের মধ্যেই রূপাতলী সাব-স্টেশনে ৪০ এমভি’এর দুটি নতুন ট্রান্সফর্মার চালু হলে কাশীপুর ও পলাশপুরের কিছু ফিডারের লোড ভাগ করে দেয়া সম্ভব হবে। ফলে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে। পাশাপাশি কাশীপুর ও পলাশপুর সাব-স্টেশন দুটিতে ২০ এমভিএ’র নতুন পাওয়ার ট্রান্সফর্মার সরবরাহ ও সংযোজনে সরবারকারীকে কার্যাদেশ দেয়ার কথা জানান তিনি। চলতি বছরের শেষভাগেই এসব ট্রান্সফর্মার চালু হলে পরিস্থিতির আশাব্যঞ্জক উন্নতি ঘটবে বলেও জানান তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT