দক্ষিণাঞ্চলে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপদাহ ॥ রোজাদারদের দূর্ভোগ দক্ষিণাঞ্চলে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপদাহ ॥ রোজাদারদের দূর্ভোগ - ajkerparibartan.com
দক্ষিণাঞ্চলে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপদাহ ॥ রোজাদারদের দূর্ভোগ

6:16 pm , May 27, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপ প্রবাহে দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে রোজাদারদের দূর্ভোগ চরমে। ঈদের বাজারের কেনাকাটার ভিড়কে যথেষ্ঠ হালকা করে দিচ্ছে জৈষ্ঠ্যের এ তাপপ্রবাহ। গতকাল বরিশালে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর সর্বনিম্ন ২৬.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপপ্রবাহে রোজাদারদের ছাতি ফাটার উপক্রম গত দুদিনে। গত শনিবার বরিশালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৭.৭ ডিগ্রি। অথচ আবহাওয়া বিভাগের হিসেব অনুযায়ী চলতি মে মাসে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ২৪.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকার কথা। প্রথম রোজা থেকে ৮ রমজান পর্যন্ত প্রতিদিনই বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলে কমবেশী বৃষ্টিপাতের পরে গত দুদিনের কাঠ ফাটা রোদ জনজীবনে যথেষ্ঠ দূর্ভোগ বৃদ্ধি করছে। তাপমাত্রার পারদ ক্রমশ ওপরে উঠছে। ফলে রোজাদারদের কষ্টও কিছুটা বাড়ছে। এক সপ্তাহ আগে গত ২১ মে বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮.৫ ও সর্বনিম্ন ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপপ্রবাহের সাথে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থারও ক্রমশ অবনতি ঘটছে। বিদ্যুৎ ঘাটতি না থাকলেও বরিশাল মহানগরীর কাশিপুর সাব-স্টেশনের ৩৩/১১ কেভি ট্রান্সফর্মারগুলো ওভারলোড হয়ে যাওয়ায় নগরীর ৭টি ফিডারে সন্ধ্যা হলেই লোডশেডিং শুরু হচ্ছে। অথচ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুতের কোন ঘাটতি নেই। একই পরিস্থিতি দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য এলাকাতেও।

আবহাওয়া বিভাগ থেকে চলতি মাসে বরিশাল অঞ্চলে স্বাভাবিক ২৬০ মিলিমিটারের স্থলে ১৫০-৩১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হলেও ইতোমধ্যে তা অতিক্রমের পরে গত দু’দিনের হালকা তাপপ্রবাহ জনজীবনে দূর্ভোগ যথেষ্ট বৃদ্ধি করেছে। এমনকি চলতি মৌসুমে আগাম বর্ষণে এবার দক্ষিণাঞ্চল সহ সারা দেশেই পাট আবাদকেও যথেষ্ঠ ব্যাহত করেছে। আবাদের শেষ সময় আর এক সপ্তাহ বাকি থাকলেও এখনো লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দেড় লাখ হেক্টর পেছনে রয়েছে এ সোনালী আঁশের আবাদ। এমনকি এবার আগাম বর্ষণে দক্ষিণাঞ্চলে আউশের আবাদও যথেষ্ট ব্যাহত হচ্ছে। অথচ সারা দেশের ২০ ভাগের বেশী আউশ ধানের আবাদ হয় দক্ষিণাঞ্চলে।

এবার শীত শেষে তাপমাত্রার আধিক্য জনজীবনে যথেষ্ট দূর্ভোগ বৃদ্ধি করে। এমনকি ফাল্গুনে তাপমাত্রার পারদ গ্রীষ্মের আগাম বার্তা দেয়ায় বসন্ত আসার আগেই হারিয়ে যায়। আবার জৈষ্ঠ্যের শুরুতেই বর্ষা কড়া নাড়তে শুরু করে। তবে এবার আগাম বর্ষণ গত বছরের মত অতি বর্ষণের রূপ নেয়নি। তবে তাপমাত্রার আধিক্য জনজীবনে যথেষ্ট দূর্ভোগ নিয়ে আসে। এ বছর ফাল্গুনে তাপমাত্রার পারদ গ্রীষ্মের আগাম জানান দেয়ায় বসন্তের খুব একটা দেখা মেলেনি। এবছর গত এপ্রিলে সারা দেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা ৩৬.৭% বেশী বৃষ্টি হলেও বরিশালে তা ছিল স্বাভাবিকের ৬.১% কম। অথচ গতবছর এপ্রিলে বরিশালে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৬০%-এবং মার্চে ১৫২%-এর মত বেশী বৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু এ বছর মার্চে বরিশাল অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৯০ ভাগ কম। ফেব্রুয়ারিতে তা ছিল প্রায় ১শ’ ভাগ কম। অথচ গতবছর মার্চ ও এপ্রিলের অতি বর্ষণে দক্ষিণাঞ্চলে তরমুজ ও গোল আলু সহ প্রচুর পরিমান রবি ফসল ছাড়াও এ অঞ্চলের দ্বিতীয় প্রধান খাদ্য ফসল বোরো ধানেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়।

তবে আবহাওয়া বিভাগের মতে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ ভারতের বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। তবে গতকাল আবহাওয়ার পূর্বাভাসে দক্ষিণাঞ্চল সহ উপকূলভাগে বৃষ্টিপাতের কোন পূর্বাভাস না থাকলেও খুলনা সহ উত্তরবঙ্গের কোন কোন এলাকায় মৃদু তাপ প্রবাহের কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাতে সামান্য বৃদ্ধি পাবার কথাও বলা হয়েছে। এমনকি আজ সকালের পরবর্তী ৪৮ ঘন্টায় আবহাওয়া পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য কোন পরিবর্তনের কথাও বলতে পারেনি আবহাওয়া বিভাগ।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT