7:08 pm , May 26, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ঈদ উপলক্ষে সড়ক ও নৌ-পথের লঞ্চ ও বাসের ঘষা মাঝায় ব্যস্ত সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে তারা লঞ্চ ও বাসে ঘষা মাজা আর রং-তুলির ছোয়ায় সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছে। এছাড়াও যান্ত্রিক ত্রুটি মেরামতের কাজ করছে। ঈদের অন্তত ১০ দিন আগেই কাজ শেষ করার পরিকল্পনা তাদের।
গতকাল শনিবার দুপুরের দিকে নগরীর নৌ বন্দরের দেখা যায় ঢাকায় ছেড়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে চারটি লঞ্চ নোঙ্গর করা অবস্থায় রয়েছে। সে অবস্থাতেই লঞ্চের অবকাঠামো উন্নয়ন ও রং-তুলির কাজ চলছে কোন কোন লঞ্চে। বিশেষ করে সুন্দরবন-১১ লঞ্চের সামনের অংশে রং এর কাজ করছে শ্রমিকরা। শুধু নৌ টার্মিনালেই নয়, বিভিন্ন ডকয়ার্ডেও চলছে পুরানো লঞ্চ’র তুলতে ঘষা-মাজার কাজ।
অবশ্য পুরানো যানবাহন ঘষা-মাঝা করে নতুন রূপে ফিরিয়ে আনার দৃশ্য বেশি দৃশ্যমান হচ্ছে বাস এবং পরিবহনের ক্ষেত্রে। বেসরকারি পরিবহনের পাশাপাশি রাষ্ট্রিয় সংস্থা বিআরটিসি’র যাত্রীবাহী বাসে চলছে একই কর্মযজ্ঞ। যাত্রীবাহী পরিবহনগুলোতে নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দেয়ার লক্ষ্যে পরিবহন মালিক পক্ষের এমন আগাম প্রস্তুতি বাৎসরিক রুটিন ওয়ার্কে পরিনত হয়েছে।
নগরীর কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল ও রূপাতলী বাস টার্মিনাল এলাকা পরিদর্শন কালে চোখে পড়ে যায় পরিবহন মালিকদের ঈদ প্রস্তুতির দৃশ্য। রাস্তার পাশে, টার্মিনালে কিংবা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্কশপের নির্ধারিত স্থানে রাখা পরিবহন গুলোর পুরানো রং ঘষে উঠিয়ে ফেলা হচ্ছে। যান্ত্রিক ত্রুটি রয়েছে কিনা তার খোঁজ খবর নেয়া যাচ্ছে। সমস্যা থাকলে তা চলাচলের উপযোগী করে তোলা হচ্ছে। আর এসব কারনে ঈদের পূর্বে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ওয়ার্কশপ মিস্ত্রিরা।
অপরদিকে নগরীর বিআরটিসি ডিপোতে দেখা যায় পুরানো বাস গুলোতে চলছে মেরামত কাজ। বিশেষ করে মান্দাতার আমলের বাস গুলোতে ওয়েল্ডিং এর কাজ চলছে। ছাদ থেকে পানি পড়া রোডে রিপিয়ারিং চলছে। এসি বাসগুলো যাত্রীদের জন্য আরামদায়ক হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। চলছে আরো ব্যাপক কর্মযজ্ঞ।
বরিশাল-ঢাকা রুটের একটি পরিবহন কোম্পানির কাউন্টার ব্যবস্থাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, ঈদের অন্তত ১০ দিন আগে থেকে যাত্রীদের চাপ বাড়বে। যা ঈদের পরবর্তী ১৫ দিন পর্যন্ত থাকবে। এর মধ্যে পরিবহন যাতে রাস্তায় না দাড়ায় সে জন্যই পরিবাহনের টুকিটাকি সমস্যা সমাধানে কাজ করা হচ্ছে।
বরিশালের অভ্যন্তরিন রুটে চলাচলকারী রূপাতলী সমিতির কয়েকজন বাস মালিক বলেন, আমাদের সমিতির পরিবহন পূর্বের থেকে অনেক আধুনিকায়ন হয়েছে। তার পরেও ঈদে যাত্রীদের চাপ বেশি থাকে। চোখে দেখতে ভালো লাগা জিনিসটাই মানুষ বেশি পছন্দ করে। যাত্রার ক্ষেত্রেও তার ভিন্নটি হচ্ছে না। যে গাড়িটি সুন্দর সে দিকেই যাত্রীদের নজর বেশি যায়। তাই ঈদের আগেই বাসগুলোতে ডেন-পেইন্ড এর কাজ করানো হচ্ছে।
অবশ্য বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটে লঞ্চে মাঝা-ঘষার কারন কিছুটা ভিন্ন। কেননা এবার ঈদ সার্ভিসে বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটে যাত্রী সেবায় নিয়জিত থাকবে দেশের সর্বোবৃহৎ ও সর্বাধুনিক বিলাশবহুল নৌযান এমভি কীর্তনখোলা-১০। তার মধ্যে আবার ওই নৌযানটি সম্প্রতি সময়ে চলাচল শুরু করেছে। বর্তমানে সাজসজ্জা কিংবা চলাচলের দিক থেকে এই লঞ্চটির সামনে অন্য লঞ্চগুলোর অবস্থান পিছিয়ে রয়েছে। তার মধ্যে এই ঈদেই নতুন করে যুক্ত হচ্ছে আরো একটি দিবা সার্ভিসের অত্যাধুনিক ও বিলাশবহুল নৌযান। সে জন্যই মাঝা-ঘষা এর রং তুলির মাধ্যমে নৌ রুটের অন্যান্য লঞ্চগুলোর সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা চলছে। অবশ্য ঈদ সার্ভিসে যাত্রীরা সৌন্দর্যের অপেক্ষায় তাকিয়ে থাকে না বলে মনে করছেন লঞ্চ মালিকরা।