দশ বছর পর শুরু হচ্ছে শের-ই-বাংলা মেডিকেলের বর্ধিত ভবনের কাজ দশ বছর পর শুরু হচ্ছে শের-ই-বাংলা মেডিকেলের বর্ধিত ভবনের কাজ - ajkerparibartan.com
দশ বছর পর শুরু হচ্ছে শের-ই-বাংলা মেডিকেলের বর্ধিত ভবনের কাজ

6:46 pm , May 24, 2018

মর্তুজা জুয়েল ॥ দীর্ঘ ১০ বছর বন্ধ থাকার পর পুরনায় শুরু করা হয়েছে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের বর্ধিত ভবনের নির্মান কাজ। দুই দফায় মোট ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মনাধীন ভবনটির কাজ সম্পন্ন হলে দক্ষিণাঞ্চলে চিকিৎসা দুর্ভোগ অনেকটা কমে অসবে বলে আশাবাদ সংশ্লিষ্টদের। আগামী বছর জুন মাসের মধ্যে ভবনটির কাজ সম্পন্ন করে গনপূর্ত বিভাগ শেবাচিম কতৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করবে। বরিশাল গনপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রিপন কুমার রয় জানান, নতুন করে ভবনটির নির্মানের জন্য পুনরায় দরপত্র আহবান করে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। এতে নতুন করে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স কহিনুর কনষ্ট্রাকশন কার্যাদেশ পেয়েছে। দরপত্র অনুযায়ী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ৫ তলা ভবনটির অসমাপ্ত সকল কাজ সম্পন্ন করবে। এর মধ্যে বিদ্যুত ও পানি সংযোগ, লিফট ও টাইলস স্থাপনসহ মূল অবকাঠামোর সকল ধরনের কাজ রয়েছে।

গণপূর্ত বিভাগ ও শেবাচিম কার্যালয় থেকে জানাগেছে, শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপর রোগীর চাপ কমাতে ২০০৮ সালে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বর্ধিত ৮ তলা ভবন নির্মাণে ৩০ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। পরবর্তীতে তিনতলা কর্তন করে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫ তলা ভবনের কার্যাদেশ দেয়া স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়। ওই বছরের ৭ মার্চ সিকদার আজাদ কনস্ট্রাকশন মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসের ৩০ শতাংশ জমির উপর ৫ ’শ শয্যার ৫তলা ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করে। ভবনের নীচতলায় রোগীদের জন্য আউটডোর, ২য় তলায় প্রশাসনিক ব্লক ও রোগীদের জেনারেল বেড, ৩য় তলায় পোষ্ট অপারেটিভ ও কেবিন, ৪র্থ ও ৫ম তলায় ওটি। এছাড়া পাঁচ তলায় ওঠানামার জন্য ৪টি লিফট ও ৫টি সিঁড়ির ব্যবস্থা রাখা হয়।

সকল কাজ সম্পন্ন করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ২০১০ সালের মার্চ মাসের মধ্যে ভবন হস্তান্তরের সময় বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ধীরগতির কারণে অদ্যবধি ৬০ ভাগ কাজও সম্পন্ন হয়নি। নির্দিষ্ট সময় কাজ সম্পন্ন করতে না পারায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা করে ২০১১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ভবন হস্তান্তরের সময়সীমা বেঁধে দেয় গণপূর্ত। কিন্তু তারপরও কাজে অগ্রগতি না থাকায় ২০১২ সালের মাঝামাঝি সময় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে অব্যাহতি দেয়া হয়। সেই সাথে ঠিকাদারের জামানত বাজেয়াপ্ত করে গণপূর্ত বিভাগ। যে কারনে শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এতে করে ভবন নির্মাণ পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়ে।

এদিকে আদালতে মামলার জটিলতা কাটিয়ে ২০১৪ সালে নতুন করে দরপত্রের মাধ্যমে অবশিষ্ট কাজ সমাপ্তের ব্যয় ধরা হয় ১৯ কোটি টাকা। কিন্তু ৪ বার রীট মামলার জটিলতায় দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর ধরে ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল। জরাজীর্ন অবস্থায় পড়ে থাকা পাঁচতলা ভবনটি মাদক ব্যবসায়ী এবং গরু-ছাগলের ভাগাড়ে পরিনত থাকার পর এখন পুনরায় নির্মান কাজ চলছে।

এদিকে দির্ঘদিন ধরে ৫শ’ শয্যার শেবাচিমের ৩৬টি ওয়ার্ডে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার আবাসিক রোগীকে চিকিৎসা দিতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। ওয়ার্ডে সংকুলান না হওয়ায় রোগীরা মেঝে, বারান্দা, সিড়িকোঠা এবং ফাঁকা স্থানগুলোতে অবস্থান নিয়ে বছরের পর বছর চিকিৎসা সেবা নিতে বাধ্য হচ্ছে।

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন জানান, নির্মানাধীন বর্ধিত ভবন হস্তান্তর করা হলে হাসপাতাল কতৃপক্ষ সেখানে মেডিকেল ইকুয়েপমেন্টস স্থাপন করবে। বর্ধিত ভবনটি আমাদের নিকট বুঝিয়ে দিলেই শেবাচিমের চলমান রোগীর শয্যা সংকট কমে আসবে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT