7:09 pm , May 23, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ র্যাব-৮ ও র্যাব-৬ এর যৌথ অভিযান কালে সুন্দরবনের আরো ৬টি কুখ্যাত জলদস্যু ও বনদস্যু বাহিনীর ৫৪ দস্যু আত্মসমর্পন করেছে। এসময় তারা র্যাবের কাছে সোপর্দ করেছে বিপুল পরিমান অগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ। গত ১০ মে থেকে ২২ মে পর্যন্ত সুন্দরবনের বরিশাল, খুলনা ও সাতক্ষীরা রেঞ্জে এই অভিযান পরিচালিত হয়। গতকাল বুধবার র্যাব-৮ ও র্যাব-৬ এর অভিযানে আটক ৬ বাহিনীর ৫৪ দস্যু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল-এমপি ও র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ এর কাছে আনুষ্ঠানিক ভাবে আত্মসমর্পন করেছে।
এদিকে দস্যু আত্মসমর্পন করা ছয়টি বাহিনী’র ৫৪ সদস্য নিয়ে এ পর্যন্ত গত ২৩ মাসে সুন্দরবনের মোট ২০টি জলদস্যু ও বনদস্যু বাহিনী’র ২১৭ জন সদস্য আত্মসমর্পন করেছে। পাশাপাশি র্যাবের কাছে জমা দিয়েছে দেশী বিদেশী ৩৪৬ টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১৭ হাজার ৮৬৯ রাউন্ড গোলাবারুদ। র্যাবের তৎপরতায় একের পর এক দস্যু বাহিনীর আত্মসমর্পনের ফলে সুন্দরবের অন্যান্য দস্যু বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক আতংকের সৃষ্টি হয়। অবশ্য ম্যানগ্রোব খ্যাত সুন্দরবন ও বঙ্গপসাগর কেন্দ্রিক জীবিকা নির্বাহকারী মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।
র্যাব-৮ সদর দপ্তর থেকে প্রেরিত ই-মেইলত বার্তায় জানানো হয়েছে- গত ১০ মে থেকে সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জে র্যাব-৮ এর বিশেষ অভিযান শুরু হয়। যার সমাপ্ত হয় ২৩ মে। ১৩ দিনের টানা অভিযানের শেষ দিন অর্থাৎ ২৩ মে চাঁদপাই রেঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান কালে র্যাবের কঠোর অবস্থান ও তৎপরতার কারনে প্রান হারানোর ভয়ে আত্মসমর্পন করে ৩টি কুখ্যাত দস্যু বাহিনী। এর মধ্যে কুখ্যাত সূর্য্য বাহিনীর প্রধান মো. আবুল হোসেন সহ বাহিনীর ১০ জন সক্রিয় সদস্য ১১টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩৭০ রাউন্ড গোলাবারুদ নিয়ে আত্মসমর্পন করে। এছাড়া মুন্না বাহিনীর প্রধান মো. মোস্তাক তার বাহিনীর ৭ জন সদস্য নিয়ে আত্মসপর্মন করেছে। বাহিনীটি ১২টি অস্ত্র ও ২৫৫ রাউন্ড গোলাবারুদ র্যাবের কাছে সমর্পন করেছে। এছাড়াও ছোট সামসু বাহিনীর ৯ সদস্য ১০টি অস্ত্র ও ৩১০ রাউন্ড গোলাবারুদ নিয়ে র্যাবের কাছে আত্মসমর্পন করেছে। সে অনুযায়ী যৌথ অভিযানে র্যাব-৮ এর কাছে আত্মসমর্পন করেছে তিন বাহিনীর মোট ২৬ জন। তাদের কাছ থেকে ৩৩টি অস্ত্র ও ৯৩৫ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।
অপরদিকে র্যাব-৬ এর কাছে আত্মসমর্পন করেছে আরো তিনটি কুখ্যাত জলদস্যু বাহিনী। সুন্দরবনের পূর্ব চাঁদপাই রেঞ্জ এলাকাধিন বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান কালে তারা আগ্নে অস্ত্র সহ আত্মসমর্পন করে। আত্মসমর্পনকারী বাহিনীগুলো হলো দাদা ভাই বাহিনী, আমির আলী বাহিনী ও হান্নান বাহিনী।
এর মধ্যে দাদাভাই বাহিনীর প্রধান মো. জয়নাল আবেদীন রাজন ওরফে দাদাভাই তার বাহিনীর ১৩ জন সদস্য ১২টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১৭৮ রাউন্ড গুলি নিয়ে আত্মসমর্পন করে। এছাড়া হান্নান বাহিনীর প্রধান মো. হান্নান শেখ তার বাহিনীর ৮ জন সদস্য নিয়ে আত্মসমর্পন করে। এসময় তাদের কাছ থেকে র্যাব-৬ উদ্ধার করে ৮টি অস্ত্র ও ১৩০ রাউন্ড গোলাবারুদ। এছাড়া আমির আলী বাহিনী’র প্রধান আমিরুল ইসলাম তার বাহিনীর ৭ জন সদস্য নিয়ে র্যাব-৬ এর কাছে আত্মসমর্পন করেছে। এসময় র্যাব তাদের কাছ থেকে ৫টি অস্ত্র ও ৪১ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে।