7:07 pm , May 23, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল-এমপি খুলনা শিপইয়ার্ডে বাংলাদেশ কোষ্ট গার্ড-এর জন্য নির্মিত ইনশোর প্রেটোল ভ্যাসেল ‘সিজিএস সোনার বাংলা’ আনুষ্ঠানিকভাবে রূপসা নদীতে ভাসিয়েছেন গতকাল। এ উপলক্ষে শিপইয়ার্ডের রিভারসাইড পার্কে এক আনন্দঘন অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ-এমপি, খুলনা সিটি করপোরেশনের সদ্য নির্বাচিত মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক ছাড়াও কোষ্ট গার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার এ্যাডমিরাল এএমএমএম আওরঙ্গজেব চৌধুরী এনবিপি, ওএসপি, বিসিজিওএমএস, এনডিসি, পিএসসি-বিএন, সহকারী নৌবাহিনী প্রধান রিয়ার এ্যডমিরাল এম সফিউল আজম এনইউপি, এনডিসি, পিএসসি- বিএন, র্যাব-এর মহাপরিচালক বেনজির আহমদ এবং খুলনা শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর আনিসুর রহমান মোল্লা ও বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর খুলনার কমোডর কমান্ডিং ছাড়াও উর্ধতন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কোষ্ট গার্ডের উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে চীনা কারিগরি সহায়তায় প্রায় ১৬৫ ফুট দৈর্ঘ ও ২৫ ফুট প্রস্থ ৩টি ইনশোর প্রেটোল ভ্যাসেলের প্রথমটি গতকাল খুলনা শিপইয়ার্ডের স্লিপওয়ে থেকে রূপসা নদীতে ভাসান হল। প্রায় ৭ ফুট গভীরতার এসব নৌযান ৩শ টন পানি অপসারন করে ঘন্টায় প্রায় ৪৮ কিলোমিটার বেগে দেশের অভ্যন্তরীন ও উপকূলীয় নৌপথে অতিক্রমে সক্ষম। এসব নৌযানের সাহায্যে চোরাচালান বিরোধী অভিযান ছাড়াও যেকোন দূর্যোগের আগে-পড়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হবে।
খুলনা শিপইয়ার্ড কোষ্ট গার্ডের জন্য সেলফ ফোলাটিং ক্রেন ছাড়াও আরো একাধীক বিভিন্ন ধরনের সামরিক ও আধা সামরিক নৌযান নির্মান করছে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি ইতোপূর্বে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর জন্য ২টি বড় মাপের যুদ্ধ জাহাজ ছাড়াও ৫টি টহল নৌযান এবং সাবমেরিন টগ-এর নির্মান কাজও সাফল্যজনকভাবে সম্পন্ন করেছে।
দেশের বিশাল সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকার নিরাপত্তা, সম্পদ আহরন ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষে কোষ্টগার্ড তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে ২০১৫ থেকে ৩০ সাল পর্যন্ত স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী কৌশলগত পরিকল্পনা প্রনয়ন করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ৩টি ইনশোর পেট্রোল ভেসেল-এর নির্মান কাজ শুরু করে খুলনা শিপইয়ার্ড। কোষ্ট গার্ডের আধুনিকায়নে সরকার সব ধরনের কার্যক্রম গ্রহন করছে বলে গতকালের অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জানান। প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সমুদ্র সীমা নির্ধারিত হওয়ায় আমাদের ব্লু-ইকনমীর যে দ্বার উন্মোচিত হয়েছে সে অপর সম্ভবনাকে কাজে লাগাতে সরকার কোষ্ট গার্ডকে যুগপোযোগী করে গড়ে তুলছে। আর এরই অংশ হিসেবে কোষ্ট গার্ডের জন্য খুলনা শিপইয়ার্ডেই ৩টি ‘ইনশোর পেট্রোল ভেসেল’-এর নির্মাজ কাজ চলছে।
দেশের বিশাল সমুদ্র এলাকার নিরাপত্তা, সম্পদ আহরন ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষে কোষ্টগার্ড বিশেষ সহায়ক ভূমিকা পালন করে আসছে। বাংলাদেশ কোষ্ট গার্ড তার টহল নৌযানসমুহের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরীন ও উপকূলীয় এলাকায় নিয়মিত টহল প্রদান করে আসছে। চোরাচালান ও মাদাক বিরোধী অভিযান ছাড়াও আইনÑশৃংখলা রক্ষায়ও কোষ্ট গার্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বাংলাদেশ কোষ্ট গার্ড দেশের সমৃদ্ধ সমুদ্র সম্পদের পাশাপাশি আমাদের নৌসীমা সহ উপকূলীয় ও অভ্যšতরীন এলাকায় অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করছে। কোষ্ট গার্ড ইতোমধ্যে দেশের বিশাল উপকূলীয় এলাকা সহ বিভিন্ন নদী বন্দর এবং নৌপথে আস্থা ও নির্ভরতাও অর্জন করেছে। এমনকি ইলিশ সহ আমাদের বিশাল মৎস সম্পদ রক্ষায়ও কোষ্ট গার্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। প্রকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ আমাদের বিশাল সমুদ্র এলাকা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আর এলক্ষেই সরকার কোষ্টগার্ডকে একটি অত্যাধুনিক আধা সামরিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলছে।