ইয়াবাসহ বাবুগঞ্জের যুবলীগ নেতার আটক নিয়ে ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় ইয়াবাসহ বাবুগঞ্জের যুবলীগ নেতার আটক নিয়ে ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় - ajkerparibartan.com
ইয়াবাসহ বাবুগঞ্জের যুবলীগ নেতার আটক নিয়ে ফেসবুকে সমালোচনার ঝড়

6:20 pm , May 21, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দেশ ব্যাপী চলছে র‌্যাব, পুলিশ ও ডিবি’র মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান। সারা দেশের ন্যায় বরিশালেও মাদকের বিরুদ্ধে এক প্রকার অঘোষিত রেড এলার্ট জারি করেছে প্রশাসন। প্রতিনিয়ত তাদের সাঁড়াশি অভিযানে আটক হচ্ছে মাদক ব্যবসায়ী এবং উদ্ধার হচ্ছে মাদক দ্রব্য। কিন্তু তার মধ্যেই বাবুগঞ্জ উপজেলায় চলছে জমজমাট মাদক ব্যবসা। যার নিয়ন্ত্রন করছে হাতে গোনা স্থানীয় কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী। এর মধ্যে এক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে র‌্যাব-৮। অবশ্য এর পেছনে সরকার দলীয় এক শীর্ষ নেতা ও জনপ্রতিনিধির নিয়ন্ত্রন রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে ইয়াবা সহ উপজেলা চেয়ারম্যানের অন্যতম সহযোগীকে আটকের বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে আলোচনা-সমালচনার ঝড়। “বাবুগঞ্জ কন্ঠ” নামের একটি ফেসবুক পেজকে ঘিরেই এই সমালোচনা চলছে। আলোচনা-সমালচনায় টেনে আনা হচ্ছে বাবুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার খালেদ হোসেন স্বপনকে। কেউ কেউ মাদক ব্যবসায়ীদের গডফাদার হিসেবে তাকেই অভিযুক্ত করছেন। আবার অনেকে স্বপনের জনসমর্থন নষ্ট করতে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা হুমকি দিচ্ছে “বাবুগঞ্জ কন্ঠ” নামের ওই ফেসবুক পেজের এডমিনকে।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, প্রধানমন্ত্রীর কড়া নির্দেশনার পাশাপাশি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারির মধ্যেও বাবুগঞ্জ উপজেলায় মাদক ব্যবসা চলছে। সম্পূর্ন গোপনীয়তা বজায় রেখে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মাদক ব্যবসায়ী চক্র তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, উপজেলা পরিষদের পূর্ব পার্শ্বের বাসিন্দা মো. মনির হোসেন ওরফে ম্যাকগাইভার মনির, মো. জালাল হোসেন, গাজীপুর গ্রামের মো. জহিরুল ইসলাম মুরাদ, কেদারপুরের প্রিন্স মাহমুদ রুবেল, খানপুরার ফারুক হোসেন সহ বেশ কয়েকজন মাদক সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অবশ্য এই সিন্ডিকেটের হোতা ছিলো উপজেলা চেয়ারম্যানের সহযোগী শাহীন রানাকে সম্প্রতি ৪৮ পিস ইয়াবা সহ এয়ারপোর্ট মোড় থেকে আটক করেছে র‌্যাব-৮ সদস্যরা। এর পর পরই তার সহযোগী হিসেবে উল্লেখিত মাদক ব্যবসায়ীরা আত্মগোপনে যায়। তবে গোপনীয়তা বজায় রেখে গোটা উপজেলা জুড়েই তাদের মাদক ব্যবসা অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে মাদক ব্যবসায়ী শাহীন রানাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। শাহীন রানার মাদক ব্যবসার নেতৃত্ব দাতা হিসেবে উপজেলা চেয়ারম্যান সরদার খালেদ হোসেন স্বপনকে দায়ী করছে। কমেন্টস এর মাধ্যমে সারাসরি অভিযোগ তুলছেন তার বিরুদ্ধে। “বাবুগঞ্জ কন্ঠ” নামের ফেসবুক পেইজে দেয়া কিছু কমেন্ট্স ও পোষ্ট হুবহু তুলে ধরা হলো। সুমন হোসেন নামের একজন লিখেছেন, ‘ব্রেকিং নিউজঃ পাপ কোন দিন চাপা থাকে না। স্বপন চেয়ারম্যানের পাপের বোঝা ভারী হইতে হইতে এমন অবস্থায় গিয়ে পৌছাইছে যে তার সাথে বিএনপি ছাত্রদলের ছেলেপেলে নামহীন পরিচয়হীন যাদের সাথে নিয়ে ঘোরে নিজের নিরাপত্তা ও অন্যকে অসম্মান করার জন্য। তারা প্রত্যেকেই আজ ধরাশায়ী হচ্ছে। কিছুদিন পূর্বে বিপুল পরিমান ইয়াবা সহ ধরা পড়ছিলো চাঁদপাশার মিন্টু। স্বপন চেয়ারম্যান অনেক তদবীর করে তাকে ছাড়াইছে। সে ছাত্রদল করত। তারেও এনে সাথে রাখছে এই স্বপন চেয়ারম্যান। কারন একটাই বিভিন্ন লোকরে বেইজ্জতি করানো। কিছুদিন আগে খানপুরার শিক্ষিত ও ভদ্র পরিবারের সন্তান ছাত্রলীগের আকিব মেহেদীকে বেইজ্জতি করছে। এদের নিয়ে চলার পরও স্বপন চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রান….? তার লোকরাই কেন ইয়াবা সহ ধরা পরে.. ?? মুরাদ তো চাঁদপাশা ইউনিয়নকেই মাদকে ধ্বংস করে দেছে। অপু দাসঃ সে তো নিজেই ইয়াবা ব্যবসায়ী ও মাদকাসক্ত। স্বপন চেয়ারম্যান এই মাদকাসক্ত লোকদের নিয়ে চলে। তার একটাই কারন তাদেরকে কোন টাকা পয়সা দেয়া লাগে না।

স্টাটাসে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি এমনই একজন রাজনীতিবীদ যে কই মাছ দিয়ে কই মাছ ধরে। তার রাজনীতিতে কোন খরচ নাই। তার পোষ্য সন্ত্রাসীরা নিজেরা মাদকের ব্যবসা করে নিজেদের খরচ চালিয়ে নেয়। ফলে চেয়ারম্যানের পকেট থেকে এক টাকাও দেয়া লাগে না। সে বাবুগঞ্জে কোন আওয়ামী লীগ পরিবারের লোকেদের রাজনীতি করতে দেয়নি। বরং নিজের পোষ্য বাহিনী দিয়েই সব করে। চেয়ারম্যান সাব আপনি তো রানাকে ছাড়াতে র‌্যাবের কাছে গেছিলেন। আপনার সামনে থেকেই তারে ধরে নিয়ে গেছিলো। র‌্যাব আপনাকে এমন কি বলল যে আপনি লেজ গুটিয়ে চলে আসলেন ? একটা বিষয় জানতে পারলাম এই রানা নাকি আপনার গাড়ী থেকেই ধরা পড়ছিলো। যদিও কার গাড়িতে ধরা পড়ছে সেটা মূখ্য নয়। আপনার একান্ত কাছের আশ্রিত ইয়াবা ব্যবসায়ী সেটাই মূখ্য। মিন্টু, মুরাদ, রানা, অপু এরা তো চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার পরও এদেরকে ছায়াসঙ্গী হিসেবে রাখছেন কেন। জাতি জানতে চায়…। মিন্টু, মুরাদ, রানা, অপু স্বপন চেয়ারম্যানের কত কাছের তা নিচের ছবিগুলো প্রমান। স্বপন চেয়ারম্যান এখনও সময় আছে এসব বন্ধ করুন। সংশোধন হন। পাপ কিন্তু চাপা থাকে না। সব বেরিয়ে আসবে বলে ওই পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে। শুধু এই একটি পোস্টই নয়, এমন বহু পোস্ট এবং কমেন্টস করা হচ্ছে মাদক ব্যবসায়ী ও উপজেলা চেয়ারম্যানকে জড়িয়ে। অবশ্য কেউ কেউ উপজেলা চেয়ারম্যানের পক্ষেও লিখছেন। কয়েকটি পোস্ট পড়ে দেখাগেছে, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, উপজেলা চেয়ারম্যান সরদার খালেদ হোসেন স্বপন উপজেলার বাসির জন্য একজন নিবেদিত প্রান। তিনি এলাকার একজন জনপ্রিয় চেয়ারম্যান। যে কারনে তার জনপ্রিয়তা নষ্ট করার জন্যই তার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবীও জানানো হচ্ছে পোস্ট এর মাধ্যমে। দুই পক্ষের মধ্যে থেকে অনেকেই বলছেন, কে, কোথায়, কেন এবং কিভাবে মাদক ব্যবসা করছে তা জানার প্রয়োজন নেই। বরং মাদক বন্ধ করার দাবী তুলে ধরছেন তারা। অনেকে প্রশাসনের সহযোগিতাও চেয়েছেন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT