6:19 pm , May 21, 2018
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দেশ ব্যাপী বন্দুক যুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ী নিহত হওয়ার ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে নগরী মাদকের গড ফাদাররা। কেননা র্যাব-পুলিশও খুঁজে বেড়াচ্ছে মাদকের গড ফাদারদের। নতুন ও পুরাতন মাদক স¤্রাটদের তালিকা নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছে তারা। এরই মধ্যে নগরীর এক সময়ের আলোচিত মাদক সম্রাট বিসিক বাবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নগরীর কাউনিয়া বিসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ। তবে তার সাথে কোন মাদক দ্রব্য পায়নি বলে জানিয়েছেন কাউনিয়া থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম-পিপিএম।
এদিকে মহানগর পুলিশের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী রমজান মাস উপলক্ষ্যে পুলিশের শুরু হওয়া মাদক ও সন্ত্রাসী বিরোধী বিশেষ অভিযানে গত তিন দিনে ২২ জন মাদক ব্যবসায়ী আটক হয়েছে। যাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৮৯১ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ৬০০ গ্রাম গাঁজা। মহানগরীর চার থানা ও গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অভিযানে আটক মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে চার থানায় পৃথকভাবে ২০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) এর সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. নাসির উদ্দিন মল্লিক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশা অনুযায়ী মহানগরীর এলাকায় ১ রমজান থেকে মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু করা হয়েছে। শুরু থেকে তিন রমজান পর্যন্ত মহানগরীর চার থানা ও গোয়েন্দা পুলিশের পৃথক অভিযানে ২২ জন মাদক ব্যবসায়ীকে ৮৯১ পিস ইয়াবা ও এক কেজি একশ’ গ্রাম গাঁজা সহ আটক করা হয়। যাদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা দায়ের করেছে।
এদিকে মহানগরীর কাউনিয়া থানার ওসি নূরুল ইসলাম জানিয়েছেন, নগরীর ভাটিখানা জানুকিসিং রোড এলাকার বাসিন্দা মাদক স¤্রাট বিসিক বাবুলকে তারা গ্রেপ্তার করেছেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় বিসিক এলাকা থেকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার কালে তার কাছে কোন প্রকার মাদক দ্রব্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ওসি। তবে তার বিরুদ্ধে মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানান তিনি। অবশ্য বিসিক বাবুলের পরিবার দাবী করেছে, বছর খানেক পূর্বে বাবুল মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছে। বর্তমানে তিনি ইসলামের পথ অনুসরন করে চলছে। তার বিষয়টি ভালোভাবে তদন্ত করে দেখতে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট দাবী জানিয়েছেন স্বজনরা।
এদিকে পুলিশ ও র্যাব-৮ সূত্র জানিয়েছে, নগরীতে শুরু হওয়া মাদক বিরোধী অভিযানে নতুন মাদক ব্যবসায়ীর পাশাপাশি পুরানো মাদক স¤্রাটদের বিষয়েও গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। যারা ভালো হওয়ার লেভাস ধারন করে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই মাদক ব্যবসার নতুন গড ফাদারদের পাশাপাশি পুরাতনদের তালিকা নিয়ে ঘুরছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
অপরদিকে দেশ ব্যাপী আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে মাদক ব্যবসায়ীদের বন্ধুক যুদ্ধ ও ক্রস ফায়ারে মাদক ব্যবসায়ীদের নিহত হওয়ার ঘটনায় আতংক ভর করেছে বরিশালের মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে। যে কারনে চুনোপুটি থেকে শুরু করে রাঘব বোয়ালরাও মাদক ব্যবসা ছেড়ে গাঁ ঢাকা দিয়েছে। এমনকি মাদক সেবনকারীরাও সতর্কতা অবলম্বন করছে। এসব কারনে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাদক বিরোধী যে উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কেননা তাদের এই উদ্যোগ দেশকে মাদক মুক্ত সামাজ উপহার দিতে সহায়তা করবে বলে মনে করেন তারা।
অভিযান প্রসঙ্গে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মো. মাহফুজুর রহমান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী র্যাব এবং পুলিশের আইজিপিকে ডেকে নিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্যই পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা অভিযান পরিচালনা করছি। আশা করছি এই অভিযানে মাদক পুরোপুরি নির্মুল করা না গেলেও আমরা এর নিয়ন্ত্রন করতে পারবো। পাশাপাশি মাদকের চাহিদাও কমিয়ে আনতে পারবো। আর চাহিদা না থাকলে মাদকের আমদানিও থাকবে না। তাই পুলিশের চলমান মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।