শেবাচিম’র প্রশাসনিক কর্মকর্তার দুই স্ত্রী শোকজ’র জবাব না দিয়ে কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত শেবাচিম’র প্রশাসনিক কর্মকর্তার দুই স্ত্রী শোকজ’র জবাব না দিয়ে কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত - ajkerparibartan.com
শেবাচিম’র প্রশাসনিক কর্মকর্তার দুই স্ত্রী শোকজ’র জবাব না দিয়ে কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত

6:01 pm , May 12, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে নিয়োগ দুর্নীতির দায়ে বরখাস্ত হওয়া প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল জলিল এর মতই বেপরোয়া তার দুই স্ত্রী। কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন না করায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জলিলের দুই স্ত্রী সহ তিনজনকে শোকজ করেন। কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো শোকজ প্রাপ্ত একজন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জবাব দিলেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন জলিলের দুই স্ত্রী। জবাব দেয়ার সময় পেরিয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষের দেয়া আদেশের কর্নপাত হয়নি তাদের। ফলে হাসপাতালে দুর্নীতিবাজ জলিল ও তার দুই স্ত্রীর নিয়ে সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চলছে কানাঘুষা।
হাসপাতালের প্রশাসনিক বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, গত ৩ মে শেবাচিম হাসপাতাল পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন তৃতীয় তলায় গাইনী বিভাগ পরিদর্শন করেন। এসময় ওই বিভাগে দায়িত্ব পাওয়া হাসপাতালের নিয়োগ দুর্নীতিতে আলোচিত এবং বরখাস্ত হওয়া প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল জলিল এর স্ত্রী অফিস সহায়ক (এমএলএসএস) ছালমা বেগম ও নাসিমা হক ডেইজীকে কর্মস্থলে পাননি তিনি। একই সাথে হাসপাতালে ঝাড়–দারদের সর্দার মো. জাফর ফকিরকেও কর্মস্থলে পাননি পরিচালক। কোন প্রকার ছুটি কিংবা অনুমতি ছাড়াই তাদের কর্মস্থলে অনুপস্থিতি সরকারী কর্মচারী (শৃংখলা ও আপীল) বিধিমালা ২০১৮ এর পরিপন্থী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত হয়। এই অপরাধের কারনে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে আইনানুগ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কেন গ্রহন করা হবে না তার সন্তোষ জনক জবাব নোটিশ জারীর তিন দিনের মধ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরিচালকের কার্যালয়ে দাখিল করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, গত ৬ মে জারিকৃত শোকজ নোটিশের জবাব দেয়ার সময় অতিবাহিত হয়েছে ৮ মে। কর্তৃপক্ষের বেধে দেয়া সময়ের মধ্যেই সর্দার মো. জাফর ফকির লিখিত ভাবে শোকজের জবাব দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের প্রধান সহকারী আব্দুল জব্বার। জবাবে তিনি স্ত্রীর অসুস্থতার কারনে সাময়িক সময়ের জন্য কাজের মধ্যে থাকতে পারেননি বলে উল্লেখ করেছেন। অবশ্য কাজে মধ্যে না থাকলেও তিনি হাসপাতালের মধ্যেই ছিলেন বলে লিখিত জবাব দিয়েছেন।
এদিকে জাফর ফকির কর্তৃপক্ষের দেয়া শোকজ নোটিশের যথাযথ সম্মান দেখিয়ে জবাব দিলেও নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে আরো ৪ দিন অতিবাহিত হলেও শোকজের জবাব দেননি দুর্নীতিবাজ জলিলের দুই স্ত্রী ছালমা বেগম ও নাছিমা হক ডেইজী। এমনকি তারা নোটিশ প্রাপ্ত হয়েও কর্মস্থলে নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট গাইনী বিভাগের দায়িত্বরত নার্স এবং কর্মচারীরা জানান, স্বামী প্রশাসনিক কর্মকর্তা হওয়ার দাপটে ছালমা ও তার সতীন নাছিমা হাসপাতাল পরিচালকের নির্দেশকেও বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখাচ্ছে। কর্তৃপক্ষের করা এই শোকজে তাদের কিছুই হবে না বলে প্রচার করছে।
হাসপাতালের সাধারণ কর্মচারীরা বলছেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা জলিল প্রকাশ্যে নিয়োগ দুর্নীতি করেছে। তার পরেও তিনি বহাল তবিয়তে রয়েছেন। তাকে মন্ত্রনালয় থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের যে আদেশ দেয়া হয়েছে তাও প্রত্যাহারের জন্য লবিং চালাচ্ছে। এমনকি অদৃশ্য ক্ষমতাধর জলিল সফল হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এত বড় দুর্নীতি করেও পার পেয়ে যাওয়া জলিল এর দুই স্ত্রীও স্বামীর দাপটে পার পেয়ে যাবে বলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন সাধারণ কর্মচারীরা।
এবিষয়ে হাসপাতাল পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি ব্যস্ততার কথা বলে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদকের প্রশ্ন সোনেননি। তবে হাসপাতালের প্রধান সহকারী ফারুক বলেন, শোকজের জবাব দেয়ার সময় পেরিয়ে গেছে। এর মধ্যে একজন মাত্র জবাব দিয়েছে। বাকি দু’জনের জবাব পাওয়া যায়নি। তাই যিনি জবাব দিয়েছেন শুধুমাত্র তার লিখিত বক্তব্য পরিচালক মহোদয়ের নিকট জমা দেয়া হবে। বাকি দু’জনের জবাব না দেয়ার বিষয়টি তাকে জানানো হবে। এ বিষয়ে যে ব্যবস্থা নেয়ার তার সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষই নিবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT