7:08 pm , April 28, 2018
গলাচিপা প্রতিবেদক ॥ গলাচিপা উপজেলা সদরের হাসপাতাল চত্বর থেকে কোলের দেড় বছরের শিশু মেয়েকে ফেলে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া মিষ্টি বেগমের খোঁজ ৬ দিনেও মেলেনি। এ ঘটনায় মিষ্টি বেগমের মা থানায় প্রথমে সাধারণ ডায়েরি ও পরে অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ অপহরণ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তারিক আজিজ সুমন নামের এক ভাড়াটে মটর সাইকেল ড্রাইভারকে গ্রেফতার করেছে। এদিকে, দেড় বছরের শিশু সিনথিয়া আক্তার মনিকা মায়ের সানিধ্য না পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়ছে। তাকে বাঁচিয়ে রাখা নানী জোসনা বেগমের পক্ষে ক্রমে কষ্টকর হয়ে উঠছে।
থানায় দায়ের করা মামলা সূত্রে জানা গেছে, গলাচিপা সদর ইউনিয়নের রতনদী-ইটবাড়িয়া গ্রামের রিক্সাচালক সালাম হাওলাদারের একমাত্র মেয়ে মিষ্টি আক্তারের (২২) সঙ্গে চার বছর আগে একই ইউনিয়নের চরখালী গ্রামের সাহিন মৃধার বিয়ে হয়। মিষ্টি আক্তারের দেড় বছর বয়সের সিনথিয়া আক্তার মনিকা নামে এক শিশু মেয়ে রয়েছে। মাস দেড়েক আগে মিষ্টি আক্তারের সঙ্গে তার স্বামীর তালাক হয়। এরপর থেকে মিষ্টি আক্তার তার শিশু মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ি থাকছেন। গত ২০ এপ্রিল শুক্রবার শিশু মেয়ে সিনথিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে গলাচিপা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশুটির সঙ্গে হাসপাতালে তার মা মিষ্টি আক্তার ও নানী জোসনা বেগম অবস্থান করছিলেন। গত ২৩ এপ্রিল সোমবার সকালে মিষ্টি আক্তার বাড়ি থেকে খাবার আনার কথা বলে মেয়েকে নানীর কাছে রেখে হাসপাতাল থেকে বের হন। কিন্তু দিন গড়িয়ে রাত হলেও মিষ্টি আক্তার ফিরে আসেন নি। পরেরদিন মঙ্গলবার ২৪ এপ্রিল জোসনা বেগম তার মেয়ের নিখোঁজের বিষয়টি জানিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এ বিষয়ে শুক্রবার গলাচিপা থানায় জোসনা বেগম অপহরণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, গলাচিপা শহরের ভিআইপি রোডের বাসিন্দা গোলাম মোস্তফার ছেলে তারেক আজিজ সুমন (৩০) অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন আসামির সহায়তায় মঙ্গলবার সকাল ৯ টা থেকে বেলা একটার মধ্যে যে কোন সময় হাসপাতালের উত্তর পাশের গেট থেকে মিষ্টি আক্তারকে অপহরণ করেছে। তারেক আজিজ সুমন পেশায় মটর সাইকেল ড্রাইভার।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নজরুল ইসলাম জানান, মামলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে তারেক আজিজ সুমনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার গলাচিপা উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গ্রেফতারকৃত সুমনকে সোপর্দ করে অধিকতর তদন্তের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। আদালতের বিচারক ছুটিতে রয়েছেন। যে কারণে রিমান্ড বিষয়ে আদেশ পাওয়া যায় নি। আশা করা হচ্ছে-ছুটির পরে আসামিকে রিমান্ডে পাওয়া যাবে এবং জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাহিদ হোসেন জানান, অপহৃত মিষ্টি আক্তারের খোঁজ পেতে এবং উদ্ধারে সর্বত্মক চেষ্টা চলছে।
এদিকে জোসনা বেগম জানান, অপহৃত মেয়ে মিষ্টি আক্তারের সানিধ্য এবং বুকের দুধ না পেয়ে নাতনী সিনথিয়া খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছে। সারাক্ষণ কাঁদছে। ফিডারের দুধও খেতে চাইছে না। অন্য কোন নারীও পাওয়া যাচ্ছে না, যার বুকের দুধ দিয়ে শিশুটিকে বাঁচিয়ে রাখা যেতে পারে।