ভোলায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাই ভোলায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাই - ajkerparibartan.com
ভোলায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাই

7:06 pm , April 28, 2018

ভোলা অফিস ॥ শুক্রবার মধ্যরাতে ভোলা শহরের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে শতাধিক ব্যববসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাই হয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ভাসমান আরো ১০টি দোকান। দমকল বাহিনীর ৬টি ইউনিট প্রায় আড়াই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে রাত সোয়া ৩টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় আগুন নিভাতে গিয়ে কমপক্ষে ৫ জন আহত হয়েছে। মনিহারিপট্টির একটি হাডওয়্যারের দোকানের বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, শুক্রবার রাত পৌনে একটায় ভোলা শহরের বাণিজ্যিক এলাকা মনিহারি পট্টির একটি রংয়ের দোকান থেকে আগুন লেগে মুহুর্তে পাশ্ববর্তী চকবাজার ও খালপাড় এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদর ইউনিটের একটি টিম আগুন নিভানোর কাজ শুরু করলেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে নি। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে দমকল বাহিনীর অন্য উপজেলার আরো ৫টি ইউনিট এসে অংশ নেয়। তাদের আড়াই ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর মধ্যে মনিহারি পট্টি, চকবাজার ও খালপাড়ের একাংশের শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে যায়। পুড়ে যাওয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছিল হার্ডওয়্যার, চাপাতা প্রক্রিয়া করণ, মুদি, ও স্টেশনারী দোকান। মুদি দোকানের তেল ও হার্ডওয়ার দোকানের রং ও স্প্রীটের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। মধ্যরাতের এ ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে পুরো শহরে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। অপরদিকে গতকাল শনিবার দিনভর ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের সাথে নিয়ে দমকল বাহিনী ও পুলিশ পুড়ে যাওয়া মালামাল অপসারণের কাজ করেছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ভয়াবহ এ অগ্নিকাল্ডে তাদের প্রায় ১শ’ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি পুষিয়ে পূর্ণবাসনের জন্য সরকারের সাহায্য চেয়েছে ব্যবসায়ীরা।
ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, অগ্নিকান্ডের শুরুতেই দমকল বাহিনীর সদস্যরা আসলেও পাশ্ববর্তী ভোলাখালে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় তারা কর্যকর ভুমিকা রাখতে পারে নি। এতে ব্যবসায়ীদের বেশি ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া ভোলা খালের যেটুকু পানি ছিল ময়লা আবর্জনার কারণে তাও উঠানো যায় নি। পরে কোর্ট জামে মসজিদের পুকুরের পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ভবিষ্যতে এ ধরনের দূর্ঘটনা থেকে রেহাই পেতে ভোলা খালটিকে দখলমুক্ত করে জোয়ার-ভাটার স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তারা।
এদিকে রাতেই ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে তদারকী করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মমিন টুলু সহ স্থানীয় প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। পুলিশ ও দমকল বাহিনীর পক্ষ থেকে আলাদা আলাদা তালিকা করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তের জন্য ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত টিম গঠন করা হবে।
সদর মডেল থানার ওসি মো. ছগির মিয়া জানিয়েছেন, তারা প্রাথমিকভাবে ৭০টি ক্ষতিগ্রস্থ ঘরের তালিকা করেছেন। এতে প্রায় ৩৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারনা করছেন তারা।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বরিশাল বিভাগের উপ পরিচালক মো. আবদুস সাত্তার মন্ডল জানিয়েছে, তাদের ৬টি ইউনিট একসাথে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে। পানির সমস্যার কারণে নিয়ন্ত্রণকাজে বেগ পেতে হয়েছে। আগুনের লাগার কারণ উদঘাটনের জন্য তাদের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল ইসলাম জানিয়েছেন, সিঙ্গাপুর অবস্থানরত বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসয়ীদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ব্যবসায়ীদের পূর্ণবাসনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন। গতকাল সকালে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করে আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহাবুবুর রহমান হিরণ ব্যসায়ীদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে সহায়তার আশ্বাস দেন। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT