3:31 pm , December 15, 2018
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আজ ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে টানা ৯ মাস লড়াই করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিলেন দেশের সূর্য্য সন্তানরা। ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর দেশ হানাদার মুক্ত করনের মাধ্যমে একটি লাল সবুজের জিয় পতাকা উঠেছিলো বাংলার বুকে। সেই থেকেই প্রতি বছর ১৬ই ডিসেম্বর দিনটি মহান বিজয় দিবস হিসেবে পালন হয়ে আসছি। প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও মহান বিজয় দিবস উদযাপন ও স্মরনীয় করে রাখতে বর্ণাঢ্য কর্মসূচি গ্রহন করা হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সরকারিভাবে গৃহিত কর্মসূচি আজ সকাল থেকে পালন করা হবে। তবে দিবসটিকে ঘিরে নানা কর্মসূচী হাতে নিয়েছে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। দিবসটি উপলক্ষে বরিশাল জেলা প্রশাসন দিন ব্যাপী নানা কর্মসূচীর আয়োজন করেছে। এদিকে বরিশালের ২৭টি সংগঠনের জোট সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের আওয়াজনে চলছে ৭ দিন ব্যাপী নানা সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড। তারই ধারাবাহিকতায় নগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিকেল থেকে এই অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। প্রথমে আপন সংগীত সংগঠনের আয়োজনে গীতি আলেখ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সুচনা করা হয়। পরে আলোচনা অনুষ্ঠানে বাসুদেব ঘোষ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন সংসদ সদস্য এ্যাড. তালুকদার মো: ইউনুস, গণশিল্পী সংস্থার সভাপতি শান্তি দাস ও মিজানুর রহমান। পরে জাতীয় কবিতা পরিষদের কবিতা পাঠ, শহীদ আলতাফ মাহামুদ সংগীত বিদ্যালয়, সুরলহরী, সংগীতানুষ্ঠান, প্রান্তিকের নৃত্য, বরিশাল নাটকের ও নাট্যমের নাটক মঞ্চায়িত হয়।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে মহান বিজয় দিবস উদযাপনের লক্ষে বর্ণাঢ্য কর্মসূচি ঘোষনা করেছে বরিশাল জেলা প্রশাসন। আজ ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৬ টা ৩৫ মিনিটে জেলা পুলিশ লাইন্স মাঠে একত্রিশ বার তোপধ্বনির মধ্যে দিয়ে শুরু হবে তাদের বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানমালা। ৬টা ৪০ মিনিট থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি ফলকে পুষ্পস্তাবক অর্পন ও সকাল ৭টা ১০ মিনিট থেকে ত্রিশ গোডাউন সংলগ্ন বধ্যভূমি অভিমুখে পদযাত্রা ও পুষ্পস্তাবক অর্পন করা হবে।
এছাড়া সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারী- বেসরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত, ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল ৯ টায় বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও কুচকাওয়াজ এবং শরীর চর্চা প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
তাছাড়া সকাল ১টায় নগরীর সদর রোডস্থ অভিরুচি সিনেমা হলে থাকছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রামান্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। হলের নীচতলায় ছেলে এবং দ্বিতীয় তলায় মেয়েদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বেলা ১১টায় বগুড়া রোডে কবি জীবনানন্দ দাস স্মৃতি পাঠাগার ও ক্লাবে শিশুদের দেশাত্মবোধক গান ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, বেলা সাড়ে সাড়ে ১১ টায় মহিলা ক্লাবে জেলা পর্যায়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা, মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা প্রদান ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারন, বাদ জোহর জাতীয় শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনায় স্থানীয় সকল মসজিদে বিশেষ দোয়া-মোনাজাত, সুবিধাজনক সময়ে অন্যান্য ধর্মীয়ও উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা, দুপুরে সকল সরকারি হাসপাতাল, জেলখানা, এতিমখানা, সরকারি শিশু সদন, দুস্থ মহিলাদের আশ্রয়কেন্দ্র সহ অনুরুপ প্রতিষ্ঠানে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন, দুপুর আড়াইটায় সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মহিলাদের জন্য ক্রিড়ানুষ্ঠান, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক আলোচনা সভা, বিকাল ৩ টায় বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জেলা মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বনাম জেলা প্রশাসনের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় অশ্বিনী কুমার টাউন হলে সুখী, সমৃদ্ধ, ক্ষুদা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির সার্বজনীন ব্যবহার এবং মুক্তিযুদ্ধ শীর্ষক আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এর বাইরে দুপুর ১টা হতে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর জাহাজ সকলের দর্শনের জন্য উম্মুক্ত থাকবে।
এদিকে দিবসটি উদযাপনের লক্ষে কর্মসূচি রয়েছে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক সগঠনের। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শহীদ ব্যদীতে পুষ্পস্তাবক অর্পন ছাড়াও বিজয় র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। অনুরুপ কর্মসূচি রয়েছে জেলা ও মহানগর বিএনপি’র। এর আগে দুটি রাজনৈতিক সংগঠনের বিজয় দিবসের কর্মসূচির মধ্যে থাকছে সকালে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন কর্মসূচি। এর বাইরে দিন ব্যাপী নানান কর্মসূচি রয়েছে।
