নগরীতে বিয়ের ধুম পড়েছে নগরীতে বিয়ের ধুম পড়েছে - ajkerparibartan.com
নগরীতে বিয়ের ধুম পড়েছে

3:18 pm , December 14, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নগরীজুড়ে চলছে বিয়ের মৌসুম। বিগত এক সপ্তাহ থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বাসা বাড়ি সহ বিভিন্ন মিলনায়তনগুলোতে প্রায় শতাধিক বিয়ে হয়েছে। সাধ্য অনুযায়ী ছোট বড় আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে এই বিয়ের অনুষ্ঠানগুলো পালন করছে নগরীর বাসিন্দারা। নগরীর বিভিন্ন কমিউনিটি সেন্টার, মাঝারি আকারের চাইনিজ রেস্টুরেন্ট,পার্টি সেন্টারগুলো এক মাস আগে থেকেই বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য বুকিং করা রয়েছে। ক্লাব ও কমিউনিটি সেন্টারগুলো জায়গা না পেয়ে বাসা বাড়ি, ভবনের ছাদ জুড়ে প্যান্ডেল করে চলছে বিয়ের অনুষ্ঠান। এই মৌসুমে জমজমাট ব্যাবসা করছে বিয়ের অনুষ্ঠান সংশ্লিষ্ট ফুলের দোকান, লাইটিং ও সাউন্ড সিস্টেম এর ব্যাসায়ীরা। গতকাল শুক্রবার সহ তিন দিনের ছুটির কারনে চাপ সব চেয়ে বেশি থাকবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। মৌসুম হলেও আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় নির্বাচনের কারনে চাপ কমে যাবে বলে জানায় তারা। তবে তা আবার আগামী মাসের শুরুতে আবার বিয়ে চাপ পরবে বলেও জানায় কমিউনিটি সেন্টার গুলোর সূত্র। মুসলমান ও হিন্দু উভয় ধর্মের বিয়ের অনুষ্ঠান এর জন্য এই মৌসুমকে শুভ বা উপযোগি বলে ধরা হয় তাই এমন চাপ পরেছে বলেও জনায় সূত্র গুলো। অন্যদিকে বিয়ের প্রধান আকর্ষন কনে। আর কনে সাজাতে এখন মহা ব্যাস্ত নগরীর বিউটি পার্লারের বিউটিশিয়ানরা। প্রতিদিন ৫-৭ টি কনে সাজাতে হচ্ছে। নগরীর কাটপট্রি মুল এলাকা সহ নগরীর ছোট বড় সকল বিউটি পার্লারগুলোতেই কনে সাজের ধুম দেখা গেছে। দেশীয় ও মূলত ভারতীয় নানা স্থানের ঐতিহ্য পুর্ন সাজ এর কাজ বেশী হচ্ছে বলে জানান পার্লার মালিকরা।
বিয়ের মৌসুমের খবর নিতে আলাপ করা হয়েছে কমিউনিটি সেন্টার, ফুল ও লাইটিং এর প্রতিষ্ঠান এবং পার্লার মালিকদের সাথে।
খোজ নিয়ে দেখা গেছে, নগরীর বরিশাল ক্লাব, মহিলা ক্লাব, ফারিয়া কমিউনিটি সেন্টার, রঙ্গন কমিউনিটি সেন্টার, পার্টি হাউজ, তন্ময় কমিউনিটি সেন্টার, গাজী মিলনায়তন, মোহনা কমিউনিটি সেন্টার, বিএফজি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, গার্ডেন ইন রেস্তোরাঁ, রিভার ক্যাফের মত প্রায় সকল রেস্তোরাঁতেই গতকাল শুক্রবার সহ আগামিকাল শনিবার পর্যন্ত কোন না কোন বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য বুকিং রয়েছে। এই তিন দিনে তারা অনেক বুকিং বাধ্যহয়ে ছেড়ে দিয়েছেন। গত এক সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত গড়ে এসকল স্থানে চার থেকে পাঁচটি করে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে। এই সময়ে এমন ভিড় স্বাভাবিক বলে জানিয়েছে কমিউনিটি সেন্টার গুলোতে কর্মরত একাধিক কর্মচারী। তারা বলেছে, নির্বাচনের কারণে কয়েকদিন বিয়ের অনুষ্ঠান কম থাকবে তা আবার জানুয়ারির শুরুতে অনুষ্ঠিত হবে।
নগরীর রজনীগন্ধা কমিউনিটি সেন্টারের ম্যানেজার মশিউর রহমান জানান, বিগত সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত ৪টি বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে তাদের কমিউনিটি সেন্টারে। এগুলো সব ১৫ থেকে ৩০ দিন আগে বুকিং দেয়া। নির্বাচনের কারণে বর্তমানে তারা কোন বুকিং নিচ্ছেন না। আগামি মাসের শুরুতে ঐ সকল বিয়ের জন্য মিলনায়তন বুকিং দিচ্ছেন বলে জানান তিনি। এটি বিয়ের মৌসুম। তাই প্রতিবছরই ভিড় থাকে। কিন্তু এ বছর ভিড় থাকা স্বত্বেও নির্বাচনের কারণে তা একটু পরে শুরু হচ্ছে। অন্যদিকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন বাসা-বাড়িতে চলছে ছোটখাটো বিয়ের অনুষ্ঠান। কারো বাড়ির উঠান, কারো বাসার ছাদগুলো প্যান্ডেল, লাইটিং ও ফুলের কারুকাজে হয়ে উঠছে বিয়ের অনুষ্ঠানের আকর্ষণীয় স্থান। ফুল ও লাইটিং সংশ্লিষ্ট জেমি পুষ্প কর্ণারের স্বত্বাধিকারী ইভানের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, গত ১৫ দিন থেকে কনে আনার গাড়ি, বিয়ের প্যান্ডেল সহ বিয়ের কাজের অর্ডার হচ্ছে। বর্তমানের আর কোন অর্ডারও নেয়া হচ্ছেনা বলেও জানান তিনি।
বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য নগরীতে ভাড়া গাড়ি পাওয়া যাচ্ছেনা ৪-৫ দিন আগ থেকেই। বিয়ের প্রধান আকর্ষণ কনে সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করছে পার্লার ব্যবসায়ীরা। নগরীর অন্যতম বৃহৎ পার্লার কাটপট্টি রোডের ‘দোলা’ এর স্বত্বাধিকারি এডলিন রায় জানান, গত এক সপ্তাহ থেকেই কাজের চাপ অনেক বেড়েছে। বিগত সপ্তাহে ২০ এর অধিক কনে সাজিয়েছেন তারা। নগরীর বড়-ছোট মিলিয়ে ৩০ এর অধিক বিউটি পার্লারে প্রতিদিন গড়ে ২-৩ জন কনে সাজানোর কথা জানান তারা। ৩-৮ হাজার টাকা পর্যন্ত কনে সাজানো হয়। মূলত ৩ ধরণের কনের সাজ রয়েছে। নরমাল ব্রাইডাল, মিডিয়াম ব্রাইডাল ও ইন্ডিয়ান ব্রাইডাল। এছাড়াও রয়েছে বাংলাদেশি বধূসাজ। নগরীর কনেরা মূলত বাংলাদেশি ও ইন্ডিয়ান ব্রাইডালটি বেশি পছন্দ করছে। ইন্ডিয়ানের মধ্যে মুম্বাই ব্রাইডালটি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় বলে জানান এডলিন রায়। এছাড়া বাংলাদেশী সাজ এর ও ভালো চাহিদা রয়েছে বলেও জনান তিনি। এটি বিয়ের মৌসুম তাই কাজের চাপ এখন বেশ ভালোই রয়েছে জানান তিনি। এই চাপ আগামী মাসেও থাকবে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT