3:20 pm , December 3, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ গত দু’দিনে নগরী সহ বিভিন্ন উপজেলায় সোনালী ব্যাংকের ১০ জন শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে চাঁদা চেয়ে স্ব পরিবারে হত্যার হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সর্বহারা গ্রুপ পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি’র আন্ডারগ্রাউন্ড এর লোক পরিচয়ে দুটি নম্বর দিয়ে রোববার ও গতকাল সোমবার ফোন করে চাঁদা চাওয়া হয়। এই ঘটনায় কোতয়ালী মডেল থানা সহ সংশ্লিষ্ট ৯টি থানায় পৃথক ১০টি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। হুমকির শিকার সোনালী ব্যাংক এর শাখা ব্যবস্থাপকরা হলেন- নগরীর সিএন্ডবি রোড শাখার ব্যবস্থাপক দেবাশীষ কুন্ডু, চক বাজার শাখার প্রিন্স পারভেজ, বাবুগঞ্জের খানপুরা শাখার মহসিন হাওলাদার, উজিরপুর শাখার আমিনুল ইসলাম, গৌরনদীর টরকী শাখার মনবীত বেপারী, বানারীপাড়ার চাখার শাখার জহিরুল ইসলাম ও ঝালকাঠির নলচিড়া শাখা ব্যবস্থাপক মেহেদী আল মিরাজ সহ বাকেরগঞ্জের নিয়ামতি ও একই উপজেলার চরামদ্দি শাখার ব্যবস্থাপককে হুমকি দেয়া হয়েছে।
সাধারণ ডায়েরীতে উল্লেখ করা হয়েছে, রোববার বিকাল ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে সাতজন শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে ০১৯৬৮৪৭৩৭১৫ নম্বর থেকে ফোন আসে। একই ভাবে সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অপর একটি ০১৯০৫৪৮১৫৫৬ নম্বর থেকেই নতুন করে আরো তিন শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে ফোন আসে।
অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি নিজেকে পূর্ব বাংলা কমিনিস্ট পার্টি’র আন্ডার গ্রাউন্ডের লোক হাত কাটা বিপ্লব বলে পরিচয় দেয় এবং তাদের বস এর নাম ইসমাইল সিকদার বলে জানায়। এছাড়া তাদের তাদের দু’জন লোক মারা গেছে, কিছু লোক অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন ও কিছু লোক জেলে আছে বলে শাখা ব্যবস্থাপকদের জানানো হয়। আর তাই আটককৃতদের মুক্তি এবং অসুস্থদের চিকিৎসা করানোর জন্য টাকার প্রয়োজন হওয়ায় প্রত্যেক শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে সর্বনি¤œ ১০ থেকে ৩০ লাখ পর্যন্ত চাঁদা দাবী করে। চাঁদা না দিলে ব্যাংক কর্মকর্তাদের স্ত্রী-সন্তানদের অপহরনের পরে স্ব পরিবারে হত্যার হুমকি দেয়া হয়।
সোনালী ব্যাংক বরিশাল আঞ্চলিক প্রধান ও ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. নাসির উদ্দিন তালুকদার বলেন, সোমবার দুপুরে আমি বাকেরগঞ্জ নেয়ামতি বন্দর শাখা পরিদর্শনে যাই। ঠিক সেই মুহুর্তে ওই শাখার ব্যবস্থাপকের নম্বরে কল করে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির লোক পরিচয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। এসব কারনে সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তারা বর্তমানে আতংকে আছে।
তিনি অভিযোগ করেন, ২০১৪ সালে একই ভাবে সোনালী ব্যাংক সহ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তাদের চাঁদা চেয়ে হুমকি দেয়া হয়। তখন ও ব্যাংক কর্মকর্তারা থানায় সাধারণ ডায়েরীও করেন। কিন্তু পুলিশ ওই ডায়েরীর সুষ্ঠু তদন্ত করেনি। যে কারনে হুমকি দাতারা আদৌ চিহ্নিত হয়নি। এবার নতুন করে হুমকি দেয়া হচ্ছে। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট শাখা ব্যবস্থাপকদের জিডি করতে বলা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও সহকারী কমিশনার (ডিবি) নাসির উদ্দিন মল্লিক বলেন, মুলত এ ধরনের ঘটনার বেশিরভাগই ভুয়া হয়ে থাকে। ইতিপূর্বে এমন অভিজ্ঞতাই আমরা অর্জন করেনি। তার পরেও বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এরই মধ্যে আমি বিষয়টি অবহিত হয়েছি। দায়ের হওয়া সাধারণ ডায়েরীর সূত্র ধরে হুমকি দাতাদের চিহ্নিত করতে আমাদের টিম কাজ শুরু করেছে। খুব শিঘ্রই চক্রটিকে সনাক্ত করা সম্ভব হবে বলে আশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, যতটুকু ধারনা করা হচ্ছে এটি কোন সরবহারা পার্টি নয়। কোন একটি বিশেষ চক্র ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যে আতংক সৃষ্টি করতেই এমন কাজ করছে। আশা করছি খুব দ্রুতই বিষয়টি বেরিয়ে আসবে।