3:16 pm , November 14, 2018

পরিবর্তন ডেস্ক ॥ নির্বাচন সামনে রেখে মনোনয়ন ফরম বিক্রির কার্যক্রমের মধ্যেই ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা ১টা থেকে এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এই সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আহত হন পুলিশ সদস্যসহ অর্ধশতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। অন্যদিকে বিএনপি কর্মীরা বেশ কিছু যানবাহন ভাংচুর করে এবং পুলিশের দুটি গাড়িতে আগুন দেয়। এই সংঘর্ষের জন্য দুই পক্ষই পরস্পরকে দোষারোপ করেছে। বিএনপি বলেছে, ‘সরকারের নির্দেশে’ পুলিশ বিনা উসকানিতে তাদের নেতাকর্মীদের ওপর ‘হামলা’ চালিয়েছে। অন্যদিকে পুলিশ বলেছে, নির্বাচন সামনে রেখে ‘ইস্যু তৈরির লক্ষ্যে’ বিনা উসকানিতে বিএনপি কর্মীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির মনোনয়ন ফরম বিক্রিকে কেন্দ্র করে গত দুই দিনের মত বুধবারও নয়া পল্টনের সড়কে ছিল মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কর্মী সমর্থকদের ভিড়। পুলিশ সদস্যরা তাদের সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছিলেন। এর মধ্যে বেলা পৌনে ১টার দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের কর্মসমর্থকরা বড় একটি মিছিল নিয়ে ফকিরাপুলের দিক থেকে বিএনপি কার্যালয়ের দিকে আসেন। তার পেছনেই ছিল দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি নবীউল্লাহ নবীর সমর্থকদের আরেকটি মিছিল। বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর মিছিলের কারণে বিএনপি কার্যালয়ের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ তাদের রাস্তা বন্ধ করে মিছিল নিয়ে যেতে নিষেধ করলে উত্তেজনার মধ্যে শুরু হয় বাকবিত-া। পরে তা সংঘর্ষের রূপ নেয়। বিএনপি কর্মীরা পুলিশের দিকে ঢিল ছুড়তে শুরু করলে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে চলে লাঠিপেটা। এক পর্যায়ে পুলিশ কিছুটা সরে গিয়ে নাইটিঙ্গেল মোড়ে অবস্থান নেয়। বিএনপি কর্মীরা তখন নয়া পল্টনের সড়কে থাকা বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুর করে। পুলিশের দুটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সংঘর্ষের মধ্যে বিএনপি অফিসের সামনে থাকা অনেকে আশ্রয়ের আশায় কার্যালয়ের ভিতরে ঢুকে যান। বিএনপি অফিসের সবগুলো ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পল্টন থানার ওসি মাহমুদ হোসেন বলেন, “পার্টি অফিসের সামনে আসা নেতাকর্মীরা সড়কে বিশৃঙ্খলভাবে অবস্থান করছিল। পুলিশ তাদের সুশৃঙ্খলভাবে থাকতে অনুরোধ করেছিল। কিন্তু তারা বিনা উসকানিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।” বেলা দেড়টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে গাড়িতে দেওয়া আগুন নেভাতে কাজ শুরু করেন। বিএনপিকর্মীরা রাস্তা আটকে রাখায় ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে বেগ পেতে হয় বলে অগ্নি নির্বাপক বাহিনীর কর্মীরা জানান। এই সংঘর্ষের সময় কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুলের দিকে রাস্তার উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে বিকাল সোয়া ৩টার পর থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।