3:08 pm , November 9, 2018

মর্তুজা জুয়েল ॥ বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে কোন তিন কাউন্সিলর হচ্ছেন প্যানেল মেয়র ? এ নিয়ে নগরবাসীসহ ৪০ কাউন্সিলর ও তাদের অনুসারীদের মধ্যে চলছে আলোচনা ও নানা মন্তব্য। তিন প্যানেল মেয়র নির্বাচন না সমঝোতার মাধ্যমে হবে নির্ধারন করা হবে তা নিয়েও চলছে কৌতুহল। তিন প্যানেল মেয়রের মধ্যে সাধারন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের মধ্যে থেকে দুই জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত এক কাউন্সিলরদের মধ্যে থেকে নির্ধারন করা হবে। এতে সাধারন ওয়ার্ড থেকে ৫ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের তিন কাউন্সিলরের নাম রয়েছে আলোচনায়। নির্বাচিত কাউন্সিলরদের মধ্যে কার কার অভিজ্ঞতা সবচেয়ে বেশী কিংবা দলের প্রতি কার ত্যাগ কতটুকু এমনটিই এখন বিশ্লেষন চলছে। আগামী এক মাসের মধ্যে নির্ধারন কিংবা নির্বাচন হতে পারে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ৪র্থ পরিষদের প্যানেল মেয়র। তাই সর্বত্র এখন এ বিষয়ে আলোচনা। তবে প্রতিবছর প্যানেল মেয়র নির্বাচন সহকর্মি কাউন্সিলরদের ভোট পেতে আগ্রহীরা তৎপর থাকলেও এবার সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করায় ভোটের দিকে আগ্রহ নেই অধিকাংশ কাউন্সিলরের। তাদের আস্থা মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর উপর। এছাড়া জেলা আওয়ামীলীগে সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর (মন্ত্রী) উপর ভরসা করছেন কেউ কেউ। বর্তমানে বেশী আলোচনায় আছেন একাধিকবার নির্বাচিত ও অভিজ্ঞ ৪ সাধারন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড ৩ নারী কাউন্সিলরের নাম। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী আলোচনায় রয়েছেন ১৯ নং ওয়ার্ডে থেকে পরপর তিনবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক গাজী নাইমুল হোসেন লিটু। স্বজ্জন ব্যক্তি ও শিক্ষকতা থেকে জনপ্রতিনিধি হওয়া এ কাউন্সিলর তার সহকর্মিদের কাছেও তার রয়েছে গ্রহনযোগ্যতা। এরপরে রয়েছে নগরীর ১৭ নং ওয়ার্ড থেকে পরপর ৩ বার নির্বাচিত কাউন্সিলর মো ঃ আকতারুজ্জামান হিরুর নাম। সিটি কর্পোরেশনের পানি, বিদ্যুত ও বনায়নের স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দির্ঘদিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ও নগরীর বাসিন্দাদের নিকট ক্লীন ইমেজ রয়েছে তার। প্রথমবারের মতো নগরীর ৬ নং ওয়ার্ড থেকে প্রথমবার নির্বাচিত কাউন্সিলর ও ল” কলেজের সাবেক ভিপি এ্যাড. রফিকুল ইসলাম খোকনও রয়েছেন প্যানেল মেয়র হওয়ার আলোচনায়। সাবেক এ ছাত্র নেতার রয়েছে সেরনিয়াবাদ পরিবারের প্রতি দীর্ঘ দিনের আনুগত্য। সাংগঠনিক দক্ষতায় বর্তমান প্রজন্মের ছাত্রলীগ নেতা কর্মিদের কাছে তিনি একজন মডেল। এছাড়াও গত পরিষদের প্যানেল মেয়র-২ ও ১৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোশারফ আলী খান বাদশা ও ২২ নং ওয়ার্ডের প্রথম বার নির্বাচিত কাউন্সিলর অনিসুর রহমান দুলালও রয়েছেন আলোচনায়। প্যানেল মেয়র-৩ এর জন্য আলোচনায় আছেন পরপর চারবারের নির্বাচিত সংরক্ষিত (১৯, ২০, ২১ নং ওয়ার্ডের) কাউন্সিলর সালমা আক্তার শিলা। এছাড়াও আলোচনায় রয়েছেন পর পর তিনবার নির্বাচিত (৭,৮, ৯ নং ওয়ার্ডের) কাউন্সিলর কহিনুর বেগম। সাবেক প্যানেল মেয়র আয়েশা তৌহিদ লুনা। প্যানেল মেয়র হওয়ার আলোচনায় থাকা এ তিন নারী কাউন্সিলর প্রত্যেকেই বলেছেন মেয়র সেরনিয়াবাদ সাদিক আবদুল্লাহর সিদ্ধান্তই তাদের সিদ্ধান্ত ।
আলোচনায় থাকা সম্ভাব্য প্রার্থী ও অন্যান্য কাউন্সিলরদের সাথে আলোচনা করে জানাগেছে, সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান নির্বাচিত ৪০ জন কাউন্সিলরদের মধ্যে আওয়ামীলীগ সমর্থিত কাউন্সিলরগন সংখ্যাগরিষ্ঠ। এর মধ্যে ৩২ জন আওয়ামীলীগ সমর্থিত ও ৬ জন কাউন্সিলর বিএনপি সমর্থিত এবং ১ জন জাতীয় পার্টির কাউন্সিলর রয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন এবার বর্তমান মেয়র চাইলে নির্বাচন ছাড়াই সরাসরি প্যানেল মেয়র নির্ধারন করা সম্ভব। যেহেতু বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী থাকার কোন সম্ভাবনা নেই কিংবা আওয়ামীলীগ সমর্থিত কাউন্সিলরগন নগর পরিষদের সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ অবস্থান করবেন না সেক্ষেত্রে নগর পরিষদ চাইলে মৌখিক আলোচনা করেই প্যানেল মেয়র চুড়ান্ত করতে পারবেন।
এ বিষয়ে আলোচনায় থাকা কাউন্সিলর গাজী নঈমুল হোসেন লিটু জানান, নিয়ম অনুযায়ী শপথ গ্রহনের এক মাসের মধ্যে মেয়রের নেতৃত্বে পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হবে। ঐ সভায় প্যানেল মেয়র নির্বাচন কিংবা নির্ধারনের বিষয়ে আলোচনা করা হবে। প্রথম সভার পরবর্তী এক মাসের মধ্যে প্যানেল মেয়র নির্ধারন করা হবে। যেহেতু নগর পরিষদে আওয়ামীলীগ সমর্থিত কাউন্সিলররা সংখ্যাগরিষ্ঠ সেক্ষেত্রে পানেল মেয়র চুড়ান্ত করা নিয়ে এবার কোন জটিলতা নেই। প্যানেল মেয়র হওয়ার জন্য আমি প্রার্থী নই, মেয়র যেভাবে চাইবেন আমি তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করবো। এ বিষয়ে মোঃ আকতারুজ্জামান হিরু বলেন ,আমি প্যানেল মেয়র হতে আগ্রহী । কিন্তু নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় আমি আগ্রহী নই ,যেহেতু আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে সেক্ষেত্রে নির্বাচন না করে সিলেকশন করা হলে কোন আইনগত জটিলতা নেই। সেরনিয়াবাদ পরিবার আমাকে যদি দায়িত্ব দেয় আমি কাজ করতে আগ্রহী। এ্যাড.রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন,আমি প্যানল মেয়রের জন্য প্রার্থী নই,সেরনিয়াবাদ সাদিক আবদুল্লাহ এবং আবুল হাসাত আবদুল্লাহ আমাকে দায়িত্ব দিলে আমি কাজ করবো। এ বিষয়ে সচেতন নাগরিকরা বলেন, ইতিপূর্বে সে সকল কাউন্সিলর বা প্যানেল মেয়রগন বয়ষ্ক ভাতা উত্তোলন করে তা প্রদান করেননি,ভোটের পরে অন্য প্রার্থিদের কর্মিদের নির্যাতন করেছেন,মৃত ব্যক্তিদের নামে ভাতা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন তাদেরকে যাতে কোন ভাবেই পুনরায় প্যানেল মেয়র মনোনীত না করা হয় । এজন্য তারা নব নির্বাচিত মেয়র সেরনিয়াবাদ সাদিক আবদুল্লাহর নিকট অনুরোধ করেছেন।