মহাজোটের মনোনয়ন চান আওয়ামী লীগের মহানগর সভাপতি এ্যাড. দুলাল মহাজোটের মনোনয়ন চান আওয়ামী লীগের মহানগর সভাপতি এ্যাড. দুলাল - ajkerparibartan.com
মহাজোটের মনোনয়ন চান আওয়ামী লীগের মহানগর সভাপতি এ্যাড. দুলাল

3:18 pm , November 5, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দলীয় রাজনীতির দীর্ঘ ৪২ বছর পরে ভোটের রাজনীতিতে আসছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল। ইতিপূর্বে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিতে কাজ করলেও এবার নিজেই হতে চাচ্ছেন জনপ্রতিনিধি। আওয়ামী লীগ সরকারের চলমান উন্নয়নের ধারা এগিয়ে নেয়ার পাশাপাশি মানুষের জীবন মান উন্নয়নের লক্ষ্য তার। এই লক্ষ্য নিয়েই রাজনৈতিক জীবনে প্রথমবারের মত আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল সদর-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়েছেন আওয়ামী রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান এ্যাডভোকেট দুলাল। এমনকি নিজের রাজনৈতিক যোগ্যতা, ত্যাগ এবং সকলের ভালবাসা থাকায় মনোনয়নের বিষয়ে অনেকটাই আশাবাদী দক্ষিণাঞ্চলে আওয়ামী লীগের অন্যতম অভিভাবক মন্ত্রী আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ’র আস্থাভাজন এই নেতা।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বরিশাল সদর আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়েছেন আওয়ামী লীগের অর্ধ ডজন নেতা। যার মধ্যে রয়েছেন বতর্মান এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান ও পূর্বের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হওয়া নেতারাও। তবে বিভাগের হেড কোয়ার্টার খ্যাত এই আসনটিতে এবারের নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়েছেন একজন বঞ্চিত নেতা। যার রয়েছে দুঃসময়ে মহানগর আওয়ামী লীগের হাল ধরা এবং বিপদ গ্রস্থ নেতা-কর্মীদের নিঃস্বার্থে পাশে দাড়ানোর অভিজ্ঞতা। তিনি হলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, তৎকালিন জাসদ ছাত্রলীগ থেকে আসা এই নেতার ৪২ বছরের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে রয়েছে অনেক ত্যাগের ইতিহাস। এজন্য তিনি দলীয়ভাবে মূল্যায়নও পেয়েছেন বেশ কয়েকবার। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ছাড়াও বরিশাল শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন এই নেতা। ছাত্রলীগের রাজনীতিতেও রয়েছে তার বেশ অবদান। তবে দলীয় পদের বাইরে জনপ্রতিনিধিত্বের সাধ পাননি আজো। তাই জীবনের শেষ বয়সে এসে রাজনৈতিক জীবনে জণগনের উন্নয়নে যে সংগ্রাম ও কাজ করেছেন সংসদ সদস্য হয়ে তা বাস্তবায়নের স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
আলাপকালে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল জানান, ছাত্র জীবন থেকেই তার রাজনৈতিক অঙ্গনে পদচারনা শুরু হয়। বিশেষ করে ১৯৭৬ সালে সরাসরি তার ছাত্র রাজনীতিতে পদার্পন ঘটে। ওই সময়ে তিনি জাসদ ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। এর পর ১৯৭৯ জেলা ছাত্রলীগের সম্পাদক হন। একই বছর ঐতিহ্যবাহী বিএম কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। শুধু তাই নয়, ঘাতক দালাল নিমুল কমিটি নেতৃত্ব দিয়ে রাজনীতিতে পরিপক্যতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও বিএনপি’র জিয়া বিরোধী আন্দোলন সহ সকল ধরনের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অগ্রভাগে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ৮০’র দশকের এই ছাত্র নেতা।
এদিকে ১৯৯১ সালে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ও মন্ত্রী আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর হাত ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে পদার্পন করেন গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল। ওই সময় তিনি আওয়ামী লীগের একজন সদস্য ছিলেন। একই বছর আইন বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসেন। তাছাড়া ১৯৯৪ সালে বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। পাশাপাশি ওই একই বছর থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটার (পিপি) ছিলেন। এর পর ১৯৯৮ সালে বরিশাল শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং একই বছর বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। তাছাড়া মহানগর আওয়ামী লীগের প্রথম সভাপতি ছিলেন এ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল। ২০০০ সালে বরিশাল মহানগর ঘোষনা হওয়ার পরে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি থেকে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পান তিনি। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ১৯ অক্টোবর আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলালকে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব দেন। বর্তমানে তিনি সুপ্রিম কোর্ট এ্যাপিলেট ডিভিশনের একজন সিনিয়র সদস্য।
এদিকে তার রাজনৈতিক জীবন যেমন বর্ণাঢ্য তেমনি দলের জন্য রয়েছে ত্যাগও। তৎকালিন জোট সরকারের আমলে বিরোধী দলে থেকে অনেক হামলা-মামলা এবং নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলালকে। বিএনপি’র ক্ষমতার আমল অর্থাৎ ২০০২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারী রাতে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিতে এসেছিলেন তিনি। সেখানে বিএনপি দলীয় সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হতে হয় তাকে। সেই রাতে কয়েকজন সাংবাদিক এবং পুলিশের সহযোগিতায় প্রানে রক্ষা পেয়েছিলেন গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল। বিরোধী আমলে অনেক রাজনৈতিক মামলাও চাপানো হয় তার ঘাড়ে। তৎকালিন বিএনপি নেতা-কর্মীদের নির্যাতনের তীব্রতা এতটাই ভয়াবহ ছিলো যে বরিশাল ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। এমনকি বিএনপি’র ক্ষমতার আমলে বরিশালে আসতে পারেননি তিনি। তবে শত জুলুম-নির্যাতনের মধ্যেও আওয়ামী লীগ এবং রাজনীতি থেকে সড়ে দাড়াননি। বরং রাজধানীতে থেকে সুপ্রিম কোর্টে দলীয় আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত হন তিনি। পাশাপাশি ২০০২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি’র হামলা মামলায় জর্জরিত নেতা-কর্মীদের পক্ষে বিনা পারিশ্রমিক এবং নিঃশার্থে তাদের মামলা পরিচালনা করে তৃনমুল নেতা-কর্মীদের মনে যায়গা করে নেন তিনি। তাছাড়া সদ্য সমাপ্ত বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও তার অবদান কমছিলো না। এই নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ’র নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়কারী ও মুখপাত্রের দায়িত্বে ছিলেন।
গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল বলেন, আমার পেশা আইনজীবী এবং নেশা রাজনীতি। একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সততা ও কমিটমেন্ট থাকা উচিৎ। যেটা ছিলো হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। তার আদর্শ এবং সততায় উজ্জিবিত হয়ে রাজনৈতিক অভিভাবক আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ ভাইয়ের হাত ধরে রাজনীতিতে নেমেছি।
তিনি বলেন, আমি একটি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। আমার বাবা ১৯৯৭ সালে তৎকালিন পটুয়াখালী সদর আসনে জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন। তিনিও তৎকালিন আমলে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। একটি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে জনগের জন্যই রাজনীতিতে নেমেছিলাম। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে জনগনের জন্য যা করেছে তার সফলতা আসবে এমপি হলে। কেননা একজন সংসদ সদস্য হয়ে দেশ ও জনগনের উন্নয়ন করা খুব সহজ হয়।
তিনি বলেন, আমি একজন আইনজীবী। আর জাতীয় সংসদে আইন প্রনয়ন হয়ে থাকে। তাই আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে সংসদে আইন প্রনয়নে বড় ভুমিকা রাখতে পারবো। জননেত্রী শেখ হাসিনার চলমান উন্নয়ন ধারাবাহিকতা আরো দুর্বার গতিতে এগিয়ে নিয়ে ক্ষুদা ও দারিদ্র মুক্ত একটি ডিজিটাল সমাজ বিনির্মানের সহযোদ্ধা হতে পারবো।
গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল বলেন, আমি আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে বরিশাল সদর-৫ আসনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়েছি। তবে নেত্রী যোগ্য মনে করলে আমাকে মনোনয়ন দিবেন। আর আমাকে রেখে যদি অন্য কাউকে মনোনয়ন দেন তাতেও আমার আপত্তি নেই। দলের মনোনিত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে তার হয়েই কাজ করবো। কারন আমাদের লক্ষ্য একটাই তা হলো নৌকার বিজয়। আর আমাদের অভিভাবক আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ’র নেতৃত্বে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করবেন বলে আশাবাদী মহানগর আওয়ামী লীগের এই নেতা।

এই বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT