3:19 pm , October 30, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নব নির্বাচিত নগরপিতার কারনে দীর্ঘদিন বাদে কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে নগর ভবনে। নানা সমস্যায় জর্জরিত এলোমেলো নগর ভবন ও তার কর্মচারীরা আবার হয়ে উঠেছে কর্মতৎপর। নগর ভবনের শ্রমিক থেকে শুরু করে কর্মকর্তা পর্যন্ত সকলের কাজে ফিরেছে সক্রিয়তা। “এখন ৯ টার অফিস ৯ টায় যেতে হয়” বলে এমনটা স্বীকার করেছে নগর ভবনের একাধিক কর্মরতরা। এমন পরিবর্তনের শুরুটাকে তারা আনন্দের সাথে গ্রহন করছেন বলে জানিয়েছেন। নগরভবনে এমন পরিবর্তন এর সাথে সাথে নগরীতে ফিরেছে এক চেনা আমেজ, দীর্ঘদিন আগের হারানো এই আমেজকে পরিবর্তন ও উন্নয়নের সুচনা বলে মনে করছেন সুশীল সমাজ ও সাধারন বাসিন্দারা। অন্যদিকে খেটে খাওয়া নগরবাসীর কথায় তারা পেয়েছেন একজন অভিভাবক। যার কাছে গিয়ে নালিশ বা আবদার জানাতে হবে না, সাদামাটা বেশে হয়ত তিনিই হঠাৎ এসে জানবেন সকল কথা। দেবেন সমাধানের আশ্বাস। সবার আশা হয়ত আবার শওকত হোসেন হিরনের ন্যায় একজন রুপকার হাল ধরেছেন একবারেই এলোমেলো এই নগরীর।
এই বিষয় সিটি কর্পোরেশনের একাধিক শ্রমিক, কর্মচারি, কর্মকর্তাদের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এর কেন্দ্রবিন্দু নগর ভবন। নগর ভবনে ১ম ও ২য় শ্রেনীর মিলিয়ে মোট ৫২ জন কর্মকর্তা এবং ৩য় ও ৪র্থ শ্রেনী মিলিয়ে মোট ৮০৩ জন কর্মচারি কর্মরত আছেন। এছাড়াও রয়েছে অস্থায়ী নিয়োগে কর্মরতরা। নগর ভবনে আসা যাওয়া দায়ীত্ব পালন সংক্রান্ত বিভিন্ন নিয়ম কানুন রয়েছে। যা বিগত ৫ বছরে ভুলতে বসেছিলো সকলে। যে যার মতো করে অফিসে আসা যাওয়া, দায়ীত্ব পালনে উদাসীনতা চলে এসেছিল সকলের মধ্যে। বেতন ভাতা নিয়ে আন্দোলন, অফিস ত্যাগ, বিক্ষোভ, অন্তদ্বন্দ, অফিসের মধ্যে গ্রুপ তৈরি করার মত নানা ঘটনা ঘটেছে নগর ভবনে। একজন যোগ্য অভিভাবকের অভাবে এমনটা হয়েছে বলে দাবী সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীদের। অভিভাবক না থাকায় যে যেভাবে পেরেছে সুযোগ নিয়েছে। যার প্রভাবে নগর ভবন হারিয়েছে কাজের পরিবেশ, নগরবাসী হয়েছে সেবা বঞ্চিত। তবে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ মেয়র এর আসনে বসার পর আমুল পরিবর্তন এসছে। শৃংখলা ও কাজের পরিবেশ দুটোই ফিরেছে। এখন ৯ টায় অফিস আসতে হয়। পড়তে হয় পরিচ্ছন্ন ইউনিফর্ম। কোনো পন্থী চলে না এখন আর নগর ভবনে বলে জানান তারা। আর দায়িত্ব অবহেলা করার কোন সুযোগ নেই। কারন হঠাৎ হয়ত হেলমেট আর পুরোনো জিন্সে মোটর সাইকেল অরোহী হয়ে হাজির হবেন নগরপিতা। এমনটা শওকত হোসেন হিরনের সময় ছিলো বলেও জানায় তারা।
অন্যদিকে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ এখন নগরবাসীর কাছে এক অন্য ভালবাসার নাম। সাথে কিছুটা ভয়ও আছে। কখন কোথা থেকে সমস্যা জানতে এসে হাজির হবেন তা নিয়ে সকলেরই একটি উৎকন্ঠা কাজ করে। শ্রমজীবি দের কাছে এখন তিনি এক আকস্বিক পুরুস্কার সরুপ। খেটে খাওয়া শ্রেনীর নগরবাসীর ভাষায়, এমন একজন মেয়রই দরকার ছিলো তাদের। যার গাড়ি বহর এর দিকে আর্জি নিয়ে তাকিয়ে থাকতে হবে নাহ, বৃষ্টির মধ্যে শরিরে পলিথিন পরিধান করে নিজেই এসে জিজ্ঞেস করবে, ‘চাচা কোনো সমস্যা আছে ??? থাকলে আমারে বলেন”। এমন একজন নগরপিতাই চেয়েছে তারা এবং চায় সব সময় তাকে এমন ভাবেই কাছাকাছি।
মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর এমন শুরুটাকে দক্ষতা ও উন্নয়নের অদম্য মানুষিকতা বলেছেন সুশীল সমাজের বাসিন্দারা। তাদের ভাষায়, সমস্যা সমাধানের জন্য আগে নিজে সমস্যার মধ্যে ভুক্তভোগী হয়ে মিশে যেতে হবে। তা না হলে প্রকৃত সমস্যা কখনই অনুধাবন করা যাবে না। সাদিক আব্দুল্লাহ তাই করছেন। এটি অবশ্যই প্রসংশনীয় শুরু। কারন ডাক ঢোল পিটিয়ে সমস্যা ধরতে গেলে তা এমনিইে আড়াল হয়ে যায়। সমাধান হয়না। তার এই শুরুটাকে সমালোচকরা নানা ভাবে ব্যাখ্যা দিতে পারে তবে তার এই কাজের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে উন্নয়ন হবে সময়ের ব্যাপার মাত্র। আমাদের বরিশাল আবারো উন্নয়নের নগরী হিসেবে আখ্যায়িত হবে গোটা দেশের মধ্যে।