পক্ষাঘাতগ্রস্থদের চোখের ইশারায় চলাচলযোগ্য হুইল চেয়ার উদ্ভাবন করেছে নগরীর সন্তান সাকিব পক্ষাঘাতগ্রস্থদের চোখের ইশারায় চলাচলযোগ্য হুইল চেয়ার উদ্ভাবন করেছে নগরীর সন্তান সাকিব - ajkerparibartan.com
পক্ষাঘাতগ্রস্থদের চোখের ইশারায় চলাচলযোগ্য হুইল চেয়ার উদ্ভাবন করেছে নগরীর সন্তান সাকিব

3:09 pm , October 25, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সর্বনিম্ন খরচে শুধুমাত্র চোখের ইশারায় চলাচল যোগ্য হুইল চেয়ার তৈরি করেছে নগরীর সন্তান নাজমুস সাকিব (মুস্তাক)। শারিরিক ভাবে চলাচলে সম্পূর্ন অক্ষমদের (পক্ষাঘাতগ্রস্থ) জন্য ইলেকট্রোকোকুলোগ্রাফী (ইওজি) টেকনোলজি ব্যবহার করে মাত্র চার মাসের প্রচেষ্টায় এই হুইল চেয়ার ব্যবহারযোগ্য করে তৈরি করেছে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর ছাত্র মুস্তাক। সে নগরীর মুন্সি গ্যারেজ ধুলিয়া লজ এর বাসিন্দা এম এম ফারুক ও সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক লুৎফর নাহার (বিলি) এর সন্তান। বরিশাল জিলা স্কুল থেকে ২০১৩ সালে এসএসসি এবং সরকারি হাতেম আলী কলেজ থেকে ২০১৫ সালে এইচএসসি শেষ করে নাজমুস সাকিব (মুস্তাক)। বর্তমানে সে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর ইলেকট্রিক্যাল এ্যান্ড ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ের শেষ বর্ষের ছাত্র। তিনি ও তার বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই সহপার্ঠি মিলে দুই জন শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পৃষ্ঠপোষকতায় মাত্র ২০ হাজার টাকা খরচে অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত এই হুইল চেয়ার তৈরি করেছেন বলে জানান নাজমুস সাকিব মুস্তাক। বানিজ্যিক ভাবে এই আবিস্কার চিকিৎসা ক্ষেত্রে আনা হলে তার সকল শ্রেনির চলাচলে অক্ষম রোগিদের জন্য স্থান পরিবর্তনে যুগান্তকারী ভুমিকা রাখবে বলে জানান তিনি। ইতিমধ্যেই তাদের তৈরি করা ইওজি কন্ট্রোল ইলেকট্রিক হুইল চেয়ার এমআইএসটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মানব কল্যানে বিজ্ঞান, আইইউবি মেকার্সমেনিয়া এবং ইউথ জেস্ট প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান লাভ করেছে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত আলাপ কালে নাজমুস সাকিব (মুস্তাক) পরিবর্তনকে জানান, আজ থেকে আজ থেকে ৪ মাস আগে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ছাত্র ফাহিম ভুইয়া, মো. আহসান উল কবির শাওন এবং তিনি এই উদ্ভাবনী কাজ এর শুরু করেন। এতে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করেন শিক্ষক ড. খসরু মো. সেলিম এবং ড. কাফিউল ইসলাম। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ২০ লাখ শারিরিকভাবে চলাচলে অক্ষম মানুষ রয়েছে। যাদের মধ্যে ৫ লাখের বেশি সম্পূর্ন ভাবে অক্ষম, যাদের শুধুমাত্র চোখের ইশারা ছাড়া কোন ধরনের অঙ্গ ব্যবহার এর ক্ষমতা নেই। তারা সম্পূর্ন ভাবে কারো ওপর নির্ভরশীল। এই ধরনের রোগীদের কথা চিন্তা করে তাদের ইওজি কন্ট্রোল ইলেকট্রিক হুইল চেয়ার তৈরির কাজ শুরু করা হয়। ইলেকট্রনিক হুইল চেয়ারের সাথে ইওজি প্রযুক্তি সংযুক্ত করে এই হুইল চেয়ারটি তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে শুধুমাত্র চোখের ইশারায় পক্ষাঘাতগ্রস্থ মানুষ হুইল চেয়ারটি নিয়ে ডানে বামে সামনে পিছনে আসা-যাওয়া সহ সকল কাজ করতে পারবেন। তাদের এই উদ্ভাবন কিভাবে কাজ করে সে বিষয়ে মুস্তাক বলেন, ইওজি একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তিতে চোখের ইশারায় যে কোন ডিভাইসের মুভমেন্ট কন্ট্রোল করা সম্ভব। বাংলাদেশে এমন উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার নেই। থাকলেও তা অনেক ব্যয় সাপেক্ষ। চিকিৎসা ক্ষেত্রে এর ব্যবহারের মাধ্যমে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনা যেতে পারে বলে মনে করের এই তরুন উদ্ভাবক। ইওজি কাজ করে ওয়ার ও ওয়ালেস দুই ভাবেই। ইলেকট্রনিক হুইল চেয়ার এর সাথে এই ডিভাইসটি সংযুক্ত করার পর তার ব্যহারকারীর চোখের দুই পার্শে সংযুক্ত থাকে। যখন ডানে যেতে হবে তখন যাওয়ার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যবহারকারী যখন তাকাবে প্রযুক্তি হুইল চেয়ারটির সার্কিটে সেন্সরের মাধ্যমে সেই নির্দেশনা পৌছে দেবে। একই ভাবে ভাবে অবশ্যই ইচ্ছাকৃত চাহনি ও চোখের পলকের মাধ্যমে এর বামে যাওয়া, সামনে পিছনে যাওয়া আসা, চলা ও থামা কন্ট্রোল করবে বলে জানান তিনি। এই হুইল চেয়ারটি তৈরিতে মাত্র ১৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলেও জানান তিনি। বানিজ্যিক ভাবে তিরি করেতে গেলে সকল মডিফিকেশন শেষে যা সম্ভব মাত্র ২০ হাজার টাকার মধ্যে। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে আমারা এমন সেবা এত কম খরচে আশা করতেও ভয় করি। কিন্তু ইওজি কন্ট্রোল ইলেকট্রিক হুইল চেয়ার টি খরচ এর স্বল্পতার কারনে সকল শ্রেনীর চলাচলে সম্পূর্ন অক্ষম রোগিদের কাজে আসতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই উদ্ভাবক।

এই বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT