চেম্বারে কান্না করায় চিকিৎসকের মারধরের শিকার শিশু সন্তান চেম্বারে কান্না করায় চিকিৎসকের মারধরের শিকার শিশু সন্তান - ajkerparibartan.com
চেম্বারে কান্না করায় চিকিৎসকের মারধরের শিকার শিশু সন্তান

6:10 pm , October 20, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ গৃহকর্মী লামিয়া উপর নির্যাতনের ঘটনায় দেশব্যাপী আলোচনার ঝড় চলছে। নির্যাতনকারীদের শাস্তির প্রশ্নে প্রশাসনক থেকে শুরু করে সর্বমহল এক অবস্থানে রয়েছে। ঠিক সেই মুহুর্তেই আবারো এক শিশুর প্রতি নির্দয় আচরনের ঘটনা ঘটেছে। তবে এটি কোন বাসা-বাড়ির ঘটনা নয়। চিকিৎসকের চেম্বারে ভয়ে কেঁদে ওঠা পাঁচ বছর বয়সী শিশুকে তার মায়ের সামনে বেধম মারধর করে দু’গালে আঙুলের ছাপ ফুটিয়ে তুলেছে বদ মেজাজী চিকিৎসক। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর সদর রোডে মেঘা ডায়াগনস্টিক ল্যাবে শেবাচিম হাসপাতালের অর্থপেডিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. বাবুল কুমার সাহা নতুন এই ঘটনার জন্ম দিয়েছেন। শুধু শিশুকেই নয়, প্রতিবাদ করায় অকথ্য এবং অসৌজন্যমুলক আচরন করেছে শিশুর মায়ের সাথেও। মারধরের শিকার শিশু মো. রিয়াজ খান ঝালকাঠির আমিরাবাদ এলাকার বাসিন্দা ইলিয়াস খানের ছেলে। এ নিয়ে চেম্বারে উপস্থিত অন্যান্য রোগী এবং স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তবে মুহুর্তের মধ্যেই ঘটনাটি মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেন এ ধরনের একাধিক ঘটনার জন্ম দেয়া বদ মেজাজী ডা. বাবুল কুমার সাহা।
শিশুর মা সাথি আক্তার জানান, তার ছেলের হাতে ফ্রাক্সার হয়েছে। এজন্য সদর রোডে মেঘা ডায়াগনস্টিক ল্যাবে ডা. বাবুল কুমার সাহার চেম্বারে নিয়ে আসেন। এক্সরে সহ বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পরে শিশুর হাতে ব্যান্ডেজ করতে হবে বলে জানায়। সে অনুযায়ী চেম্বারের মধ্যেই শিশু রিয়াজ খানকে হাতে ব্যান্ডেজের জন্য নিয়ে যায়।
সাথি আক্তার বলেন, রিয়াজকে একাই ব্যান্ডেজের জন্য নিয়ে যাওয়ায় সে ভয় পেয়ে কান্না শুরু করে। তখন আমরা ভেতরে যেতে চাইলেও ডাক্তার যেতে দেয়নি। বরং ব্যান্ডেজ করার সময় ভেতরে বসে কান্না করায় শিশু রিয়াজ এর গালে সজোরে চড় দেয়। এতে তার কান্না আরো বেড়ে যায়। শুধু তাই নয়, শিশুটি চলে যেতে চাইলে তাকে বেডের উপর তুলে ধরে একাধিকবার তুলে ছুড়ে ফেলে বদ মেজাজী ডা. বাবুল কুমার সাহা। তখন তার মা ভেতরে গিয়ে প্রতিবাদ করলে তার সাথেও অকথ্য ব্যবহার করে। এমনকি তার সামনেই শিশুর দুই গালে একের পর এক চড় মারতে থাকে। এতে তার দুই গালে ডা. বাবুল কুমার সাহা’র পাঁচ আঙুলের দাগ পড়ে যায়। তখন শিশুর মা কোন উপায় না দেখে সন্তানকে নিয়ে চেম্বারের ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে শিশুর বাবার কাছে অভিযোগ করে এবং ডা. বাবুল কুমার সাহাকে কসাই বলে আখ্যায়িত করে তার কাছে চিকিৎসা করাবে না বলে বেরিয়ে আসে। এ নিয়ে চিকিৎসকের চেম্বারের মধ্যে অন্যান্য রোগী এবং তাদের স্বজনদের মধ্যেও উত্তেজনা দেখা দেয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. বাবুল কুমার সাহা’র সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ভব ছিলো আকাশ থেকে পড়ার মত। সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককে তিনি বলেন, এতটুকু বাচ্চাকে কেউ মারে নাকি। শিশুর গালে আঙুলের ছাপ পড়ে থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দাগ তো কতভাবেই পড়তে পাড়ে। তিনি ওই বাচ্চাকে মারেননি বলে এড়িয়ে যান।
এদিকে শিশু লামিয়ার উপর নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে আলোচনা থামনে না থামতে চেম্বারে পাঁচ বছর বয়সি শিশুকে এমন নির্যাতনের বিষয়টি নিয়ে কথা হয় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অপরাধ ও মিডিয়া বিভাগের (ডিবি) সহকারী কমিশনার নাসির উদ্দিন মল্লিক এর সাথে। তিনি বলেন, এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটে থাকলে সেটা অবশ্যই অন্যায়। কেননা শিশুদের গায়ে হাত তোলা সম্পুর্ন বেআইনি। তবে সদর রোডের মেঘা ডায়াগনস্টিক ল্যাবে চিকিৎসক কর্তৃক শিশুকে মারধরের বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ আমাদের কাছে অভিযোগও করেনি। বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন নাসির উদ্দিন মল্লিক।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT