6:19 pm , October 19, 2018
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. দেলওয়ার হোসেন বলেন, শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। আর সেই শিক্ষার মেরুদন্ড হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা। তাই প্রত্যেকটি শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষাবান্ধব সরকার কাজ করছে। বছরের প্রথম দিনে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে বিনা মূল্যে বই পৌঁছে দিচ্ছে। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের ডিক্রিরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জেএসসি ও সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিএসসি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, শুধু শিক্ষার্থীদের জন্যই নয়, শিক্ষাবান্ধব এই সরকার শিক্ষকদের জন্যও অনেক কিছু করে দিয়েছেন। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের প্রতি আরো মনযোগী হতে হবে। শিক্ষার্থীদের প্রতি অভিভাবকদের খোঁজ রাখতে হবে। তারা যাতে মাদক, সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদে না জড়ায় সে বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে আহ্বান জানিয়ে। অতিরিক্ত সচিব মো. দেলওয়ার হোসেন বলেন, খুব শিঘ্রই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। দেশের চলমান উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে যোগ্য ও সঠিক নেতা নির্বাচিত করতে ভুল করবেন না।
ডিক্রিরচর আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশাল-৩ (মুলাদী-বাবুগঞ্জ) সংসদীয় আসনের স্বতন্ত্র এমপি পদপ্রার্থী, বৃহত্তর বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ যুব মৈত্রী কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান। তিনি তার বক্তৃতায় বলেন, আমি একজন সৎ ও আদর্শবান শিক্ষক পিতার সন্তান। একজন শিক্ষক পিতার সন্তান কখনো দুর্নীতি, লুটপাট করতে পারেনা। জনপ্রতিনিধি না হওয়া সত্ত্বেও চেষ্টা করেছি মুলাদী ও বাবুগঞ্জবাসীর ভাগ্য উন্নয়নের। কোন বিনিময় ছাড়াই কষ্টে অর্জিত হালাল ব্যবসার টাকায় বাবুগঞ্জের ৬৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন করেছি। স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসা, মন্দির সহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা করেছি। সে জন্য মানুষের ভালোবাসাও পেয়েছি। আর সেটাই ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের গায়ে জ্বালা ধারিয়ে দিয়েছে। কেননা তারা জনগনের উন্নয়নে আসেনি। বরং জনগনের ভাগ্য লুটপাট করেছে। জনগণের জন্য তারা নিজেরাও কিছু করেনি আর কাউকে করতেও দিবে না। সে জন্যই আমার দেয়া সাহায্য সহযোগিতাকে কালো টাকা বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
যুব নেতা আতিকুর রহমান বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন খুব শীঘ্রই। বরিশাল-৩ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দিলে উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে আমরা সেদিকেই যাব। কিন্তু আওয়ামী লীগের নৌকার বাইরে মহাজোট থেকে প্রার্থী দিলে সে বিষয়টিও সকলের মাথায় রাখতে হবে। কেনন ইতিপূর্বে মহাজোটের এমপি মুলাদী-বাবুগঞ্জ আসনে কি উন্নয়ন করেছে তা আপনাদের সকলের জানা। দেশব্যাপী উন্নয়নের গণজোয়ার সৃষ্টি হলেও একমাত্র বরিশাল-৩ আসনের চিত্রই ভিন্ন। চার খলিফার এমপি এখানে কোন উন্নয়ন করেনি। তার উন্নয়ন নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো। টিআর, কাবিখা, দপ্তরী নিয়োগ, শিক্ষক নিয়োগ, টিউবওয়েল স্থাপন প্রকল্পেও লুটপাট হয়েছে। তাই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী না দিলে মুলাদী-বাবুগঞ্জ আসনে সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আপনাদের দোয়া এবং ভালোবাসা নিয়ে স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো। আপনারা সকল অনিয়ম, দুর্নীতি এবং লুটপাটের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত করার আহ্বান জানান তিনি।
ডিক্রির চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইউসুফ আলীর সভাপতিত্বে ও শিক্ষক মো. আরিফুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনার সূচনাকালে বিশেষ অতিথি এমপি প্রার্থী ডিক্রির চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দূর করতে বৈদ্যুতিক ফ্যান ক্রয়ের জন্য ৫০ হাজার টাকা এবং একই স্থানে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য এক লাখ টাকা সহযোগিতা প্রদানের ঘোষণা দেন। সেই সাথে চলতি বছরের মধ্যেই বিদ্যালয়ের বেঞ্চ এবং সংস্কার কাজের ব্যবস্থা করে দিবেন বলে ঘোষনা দেন আতিকুর রহমান। আলোচনা পর্ব শেষে চাঁদপাশার পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জেএসসি ও পিএসসি’র শতাধিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা উপকরন তুলে দেন প্রধান ও বিশেষ অতিথি।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বাবুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল চিশতী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মফিজুর রহমান পিন্টু, ডিক্রির চর সরকারি প্রাথামিক বিদ্যালয়ের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল, মাধ্যমিক শাখার প্রধান শিক্ষক মো. ইব্রাহিম, শিক্ষক মাজহারুল ইসলাম রিংকু, শাহীন মাহমুদ ও শিক্ষার্থী লিমা আক্তার।