অনিয়ম-দুর্নীতিমুক্ত নগর ভবন রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ নতুন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ অনিয়ম-দুর্নীতিমুক্ত নগর ভবন রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ নতুন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ - ajkerparibartan.com
অনিয়ম-দুর্নীতিমুক্ত নগর ভবন রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ নতুন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ

5:54 pm , October 9, 2018

রুবেল খান ॥ অনিয়ম এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। দায়িত্ব গ্রহনের পর পরই সকল অন্যায়, অপরাধ ও দুর্নীতি ঝেড়ে ফেলতে তিনি উদ্যোগ নেবেন। অন্যায় এবং দুর্নীতির সাথে আপোষ করবেন। অন্যায়কারী ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকবেন তিনি। দৈনিক আজকের পরিবর্তনকে এমন কথাই বলেছেন নবনির্বাচিত মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। তার দেয়া এমন হুশিয়ারীর বাস্তব প্রতিফলন প্রত্যক্ষ করাটা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এদিকে দায়িত্ব গ্রহনের পূর্বে নবনির্বাচিত মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ’র এমন হুশিয়ারী গায়ে জ্বালা ধরিয়ে দিয়েছে অনিয়ম ও দুর্নীতিবাজদের। সাবেক মেয়রদের আমলে বীরদর্পে অনিয়মকে নিয়মে পরিনত করা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অজানা আতংকে সময় পার করছেন। কেউ কেউ আবার ভোল পাল্টে নবনির্বাচিত মেয়র এর কাছে লোক হওয়ার চেষ্টায় কৌশল আটতে শুরু করেছেন। শুধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই নয়, একই পথে হাটতে শুরু করেছেন সুবিধাবাদী কিছু ঠিকাদার। সূত্রমতে গত ৩০ জুলাই বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। সর্বশেষ গত ৩ অক্টোবর আনুষ্ঠানিক ঘোষনা শেষে ৮ অক্টোবর সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে মেয়র সহ ৩১ কাউন্সিলকে সরকারি গেজেটভুক্ত করা হয়। এখন অপেক্ষা শপথ এবং দায়িত্ব গ্রহনের। তাও আগামী ১৫ কিংবা ১৭ অক্টোবর মেয়র এবং নির্বাচিত কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহনের সম্ভাবনা রয়েছে। এর পর ২৩ অথবা ২৪ জুলাই দায়িত্ব গ্রহন করবেন নবনির্বাচিত মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ সহ ৪র্থ পরিষদের কাউন্সিলররা। এদিকে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন চতুর্থ পরিষদের নির্বাচনে আলোচনার বিষয়বস্তু ছিলো নগর ভবনে অনিয়ম এবং দুর্নীতি। যে কারনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সকল প্রার্থীই তাদের ইশতেহারে নগর ভবনকে দুর্নীতি মুক্ত একটি স্বচ্ছ প্রতিষ্ঠান গড়ে বিষয়টি অগ্রভাগে নিয়ে আসে। তবে তাদের ব্যতিক্রম ছিলেন নবনির্বাচিত মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। তিনি বিশেষ কোন ইশতেহার ঘোষনা করেননি। ‘নগরবাসির দাবী বাস্তবায়নই তার নির্বাচনী ইশতেহার বলে ঘোষনা করেন। নির্বাচনের পরেও তিনি একই লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলছেন। নগরবাসির দাবী এবং অভিযোগের বিষয়গুলো মাথায় রেখে সিটি কর্পোরেশনকে অনিয়ম, দুর্নীতি, ঘুষবানিজ্য মুক্ত করে একটি স্বচ্ছ নগর ভবন গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন নবনির্বাচিত মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। নির্বাচনের পূর্বে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি যেমন সমালোচনা করেছেন নির্বাচনের পরেও ঠিক একই অবস্থানে থাকবেন বলে আশা করছেন নগরবাসী।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বিগত সিটি মেয়রদের সময়ে এক শ্রেনির কর্মকর্তা ও কর্মচারী নগর ভবনে অনিয়ম এবং দুর্নীতির আঁতুর ঘর তৈরী করে। যখন যিনি মেয়র হয়ে এসেছেন তাকেই কব্জা করে নিজেদের আখের গুছিয়ে নিয়েছে তারা। এমন অনেক কর্মকর্তা আছেন যারা ঠিকমতো খেতে পারতেন না, এখন তারা সকালে ডিসকভার আর বিকেলে পালসার মোটর সাইকেলে চড়েন। প্যান্ট-শার্ট কেনেন ঢাকার বসুন্ধরা মার্কেট থেকে। এসব কারণে নগরবাসির ভাগ্যের পরিবর্তন না ঘটলেও দুর্নীতিতে ফুলে ফেপে উঠে দুর্নীতিবাজরা।
নগর ভবনে কর্মরত বেশ কয়েকজন কর্মচারী জানান, অনেক কর্মচারী রয়েছেন যারা সুবিধাবাদী লোক হিসেবে পরিচিত। যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন সেই সরকারের লোক বলে পরিচয় দেয়। এদের দিয়ে নগর ভবনের কোন কাজ না হলেও দিনভর তৈলমর্দনে ব্যস্ত থাকেন। তারা যখন যে মেয়র আসেন, তখন সেই মেয়র এর লোক হয়ে যায়। ওইসব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নাগরিক সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকলেও অর্থনৈতিক দিক থেকে এগিয়ে থাকছে। নিজ দায়িত্ব ফেলে রেখে তারা নগর ভবনের ঠিকাদারীও করছেন। একজন মালি হয়েও হাকাচ্ছেন পাঁচতলা বাড়ি। কোন কোন কর্মচারী রয়েছেন যারা দায়িত্ব পালন না করলেও সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন। এনেক্স ভবন অফিস আর সময় কাটাবার জন্য নগর ভবনে পৃথক অফিস কক্ষ দখল করে বসে আছেন তারা। এমনকি নিয়ম না থাকলেও সরকারি তেল পুড়ে সরকারি গাড়িতেই ঘোরাফেরা করছেন সুযোগবাদী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ ধরনের অনেক অভিযোগ, অনিয়ম এবং দুর্নীতির চিত্র প্রত্যক্ষ করছেন নগর ভবনের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কিন্তু বিগত মেয়রদের কাছের লোক হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে যাওয়ার সাহস পায়নি কেউ। এছাড়াও কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইতিমধ্যেই নিজেদের মেয়রের ঘনিষ্ঠজন পরিচয় দিয়ে অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভয় দেখাচ্ছেন। সাধারণ কর্মচারীরা এদের ভয়ে সারাক্ষণই তটস্থ থাকেন। এসব সাধারণ কর্মচারীদের একটাই আশা, নব-নির্বাচিত মেয়র এলে তাদের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে।
পূর্বের মেয়রদের উদাসীনতা আর স্বজনপ্রীতির উর্ধ্বে থেকে নগরবাসির সেবাকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার মহাপকিল্পনা গ্রহণ করেছেন বিসিসি’র নবনির্বাচিত মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন নিয়ে আমার অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে দুর্নীতি এবং অনিয়ম মুক্ত নগর ভবন গড়ে তোলা। এখানে কোন দুর্নীতি-অনিয়ম চলবে না। আমার প্রথম কাজই হবে নগরবাসির সেবক হয়ে দুর্নীতি বন্ধ করা। বিশেষ কাউকে সুবিধা নয়, বরং সকলকে একভাবে সেবা প্রদান করাই আমার লক্ষ্য। যাতে কেউ অভিযোগ তুলতে না পারে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT